ডিআইইউর ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বক্তারা
সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হলে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে
দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ২৭ জানুয়ারি শনিবার আশুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে উদযাপিত হয়।
অনুষ্ঠানে তুরস্কের কারাবুক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. রেফিক পোলাত, দক্ষিণ কোরিয়ার চুংনাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ার প্রফেসর কে কে ইয়েন, পারফেক্ট ট্রায়াঙ্গেল, মালয়েশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজমান বিন বিদিন, যুক্তরাজ্যের অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসির উপদেষ্টা মার্ক জেমস বার্থোলোমিউ, চীনের সিয়াস ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক উইপিং ওয়াং (সারাহ)সহ, ফিলিপাইন ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশগ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ছিলেন দেশবরেণ্য সাংবাদিক ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক এবং প্রকাশক মাহফুজ এনাম। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসুফ এম ইসলাম। ছয় শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থীসহ পঁচিশ হাজার শিক্ষার্থী দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাসকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। বিশ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে ‘অ অমি থেকে আমরা’ হওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে ‘আই টু ওই’ মানব লোগো তৈরির মাধ্যমে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান মালার সূচনা হয়।
বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল বাস র্যালি, আলোচনা অনুষ্ঠান, বৃক্ষরোপণ, বনভোজন, পিঠা উৎসব, প্রজেক্ট প্রদর্শনী, সেলিব্রেটি শো, মানব লোগো তৈরি, ফ্ল্যাশ মব, খেলাধুলা, ফান ইভেন্টস, র্যাফেল ড্র এবং লাইভ ব্যান্ড কনসার্ট। অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসকে সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। পঁচিশ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তাসহ ৪০০টি বাসের র্যালি মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে সকাল ৭টায় যাত্রা শুরু করে একে একে আশুলিয়ার স্থায়ী ক্যাম্পাসে এসে মিলিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের প্রকাশক সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, শুধু সেøাগান দিয়ে কিংবা মুখে ভালোবাসি ভালোবাসি বলে বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। একটি সুখী, সমৃদ্ধ দেশ গড়তে হলে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। নিজের সৃজনশীলতা মেধা ও যোগ্যতাকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। দেশের নানা ধরনের সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারে, তবে কোনো মুহূর্তেই ভুললে চলবে না যে আপনি একজন স্বাধীন দেশের নাগরিক। এ সময় মাহফুজ আনাম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনটি পরামর্শ দেন। প্রথমত. সময়কে কাজে লাগাতে হবে। কোনোভাবেই সময়ের অপচয় করা চলবে না। দ্বিতীয়ত. নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মানবোধ থাকতে হবে। তৃতীয়ত. সৃজনশীলতার পূর্ণাঙ্গ বিকাশ ঘটাতে হবে। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে ডেইলি স্টার সম্পাদক আরো বলেন, আমার প্রথম পরিচয় হচ্ছে, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। দেশ স্বাধীনের যুদ্ধে আমিও একজন অংশীদার ছিলাম, এটা পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের এমন চরিত্র গঠনের পরামর্শ দেন যে চরিত্রের মধ্যে থাকবে দেশপ্রেম ও সততা। সৎভাবে যারা কাজ করে তারা পৃথিবীতেই পুরস্কৃত হোন বলে মন্তব্য করেন মাহফুজ আনাম।
সভাপতির বক্তব্যে ড. মো. সবুর খান বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ আনন্দ সবার। কারণ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত তাদের মেধা ও মননে স্বাতন্ত্র্যের পরিচয় দিয়ে চলেছে। এ আনন্দ ধরে রাখতে হলে শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক হয়ে উঠতে হবে বলে মন্তব্য করেন ড. মো. সবুর খান।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করতে হবে। এমন কোনো ছবি দেওয়া বা মন্তব্য করা উচিত নয়, যাতে নিজের হীনমানসিকতা প্রকাশ পায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম বলেন, জীবনে সফল হতে হলে ইতিবাচক হতে হবে। আর যারা নেতিবাচক কথা বলে তাদের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। মেধাকে ভালো কাজে ব্যয় করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিজের ওপর আস্থা রাখো, সফল হবেই। পৃথিবীতে তারাই সফল হয়েছে যারা নিজের ওপর আস্থা রেখেছে এবং নিজেকে সম্মান করতে শিখেছে।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্র্সিটি আশুলিয়ায় ১৫০ একর জায়গার ওপর সর্বাধুনিক সুবিধাসংবলিত আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আবাসিক সুবিধাসহ শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে। এখানে রয়েছে কোলাহলমুক্ত ছায়া সুনিবিড় শান্ত সবুজ পরিবেশে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত খেলার মাঠ, অডিটোরিয়াম, আবাসিক হল, সুইমিং পুল, জিমনেশিয়াম, বাস্কেটবল গ্রাউন্ড, টেনিস কোর্টসহ একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন। প্রযুক্তিনির্ভর একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০২ সালের ২৪ জানুয়ারি মাত্র ৬৮ জন শিক্ষার্থী নিয়ে। ইতোমধ্যে দেশ ছাড়িয়ে দেশের বাইরেও ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছে। জন্মলগ্ন থেকেইে অবিরত প্রযুক্তিভিত্তিক কার্যক্রমের সংশ্লিষ্টতা এবং তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টিই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজ সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটিতে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
"