ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৮ মে, ২০২২

‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ছোট ছোট ভুল করছি’

টেস্ট ক্রিকেটে গুরুত্ব¡পূর্ণ মুহূর্তে বারবার ছোট ছোট ভুল না করার ওপর জোর দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। প্রথম চার দিন সমানে সমান লড়াই করার পরও ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার কাছে বাংলাদেশের ১০ উইকেটের হারের পর এমন মন্তব্য করেন ডোমিঙ্গো। ঢাকা টেস্টে হারের কারণে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। এর আগে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট ড্র হয়েছিল।

ঢাকা টেস্ট শেষে কাল ডোমিঙ্গো বলেন, ‘কিছু পরিবর্তন আনতে হলে আমরা একটি বা দুটি ব্যাপার দেখতে পারি। দুই ইনিংসেই যথাক্রমে ২৪ রানে ৫ উইকেট ও ২৩ রানে ৪ উইকেট পতনের পর টেস্ট জয় সম্ভব নয়। আমাদের কিছু পরিবর্তন করতে হবে। গত ৬-৮ মাসে এটি অনেকবার ঘটেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা চার দিন লড়াই করেছি এবং একটি সেশনে খারাপ করার কারণে ফেরার উপায় ছিল না। আমি নিশ্চিত, এটি খেলোয়াড়দের জন্যও সমান হতাশাজনক। তারা লড়াইয়ে ফিরছে, কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময়ে খেলা থেকে ছিটকে পড়ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার ছয় উইকেট পতনের পরও তারা শেষ পর্যন্ত ড্র (প্রথম টেস্ট) করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪০০ রানের টার্গেট স্পর্শ করে ফেলে। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে কিছু ছোট ছোট ভুল করেছি।’

২৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রান করে বাংলাদেশ। ষষ্ঠ উইকেটে রেকর্ড জুটি গড়েন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। ১৭৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন মুশফিক। আর লিটনের ব্যাট থেকে আসে ক্যারিয়ার সেরা।

তবে প্রথম ইনিংসে ৫০৬ রান করে ১৪১ রানের লিড পায় শ্রীলঙ্কা। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও খারাপ ব্যাটিংয়ের কারণে ১৬৯ রানে গুটিয়ে যায় তারা। ফলে মাত্র ২৯ রানের টার্গেট পায় শ্রীলঙ্কা। যা সহজেই স্পর্শ করে ফেলে তারা।

দুই ইনিংসে ব্যাটারদের ব্যর্থতার পরও বোলারদের দোষ দিচ্ছেন ডোমিঙ্গো। তার মতে, যেভাবে বোলিং করা উচিত, সেভাবে বল করেনি বোলাররা। উইকেট ৫০০ করার মতো ছিল না, কিন্তু বাংলাদেশের খারাপ বোলিংয়ের কারণে বড় স্কোর করতে পেরেছে শ্রীলঙ্কা।

তিনি বলেন, ‘আমরা এবাদত, শরিফুল, তাসকিন ও মিরাজকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জিতেছি। এই টেস্টে আমরা শুধু এবাদতকে পেয়েছি। এটি সম্পূর্ণ নতুন বোলিং আক্রমণ। আমাদের যেভাবে করা উচিত ছিল, সম্ভবত সেভাবে ভালো বল করতে পারিনি।’

ডোমিঙ্গো বলেন, ‘কোচ হিসেবে আমার ক্যারিয়ারে আমি কখনো দেখিনি মিড উইকেট ও ফাইন লেগে এত রান হতে পারে। তারা সোজা বল করেছে, রান করার জন্য যা অনেক সহজ ছিল। এটি ৫০০ রানের উইকেট ছিল, তেমনটা আমি মনে করি না। ম্যাচে দ্বিতীয় দিনের শেষ দিকে আমরা ভালো বোলিং করতে পারিনি। আমরা তাদের ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করতে পারিনি। এমন ছোট বিষয়গুলো ম্যাচের চিত্র বদলে দিয়েছে।’

ডোমিঙ্গোর মতে, দল মেহেদি হাসান মিরাজের সার্ভিস মিস করেছে। কারণ তার বদলি হিসেবে খেলতে নামা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত অফ-স্পিনার হিসেবে ভালো করতে পারেননি। ইনজুরির কারণে সিরিজ থেকে ছিটকে পড়েন মিরাজ।

ডোমিঙ্গো বলেন, ‘মোসাদ্দেককে খেলানোর কারণ ছিল, যাতে পঞ্চম বোলার হিসেবে বোলিং করতে পারে- এমন একজনকেই আমাদের দরকার ছিল। আমরা ভেবেছিলাম, দিনে ১৫ ওভার বল করতে পারবে সে। চার বোলার নিয়ে বল করার পক্ষে নই আমি। আমরা আশা করেছিলাম, সে বোলিং করবে, তবে মোসাদ্দেক ভালো বল না করায় আমরা হতাশ হয়েছি। আমরা ভেবেছিলাম, বোলিং দিয়ে মিরাজের কাজটি সে করতে পারবে। মিরাজকে হারানোটা বড় ক্ষতি ছিল, সে অনেক ওভার বল করতে পারে, উইকেট নিতে পারে এবং ব্যাটও করতে পারে।’

ডোমিঙ্গোর মতে, বাংলাদেশে অনেক স্পিনার আছে, কিন্তু এই মুহূর্তে নাইমণ্ডমিরাজ ছাড়া টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতির জন্য ভালো মানের অফ-স্পিনার তাদের নেই।

তিনি বলেন, ‘ওয়ানডেতে আমাদের অনেক অফ-স্পিনার আছে। আমরা টি-টোয়েন্টি স্পিনার মাহেদির কথা বলছি। তারা ব্যাটার, যারা পার্টটাইম স্পিনও করতে পারে। কিন্তু মিরাজ-নাইমের জায়গায় খেলতে পারে এমন অফ-স্পিনার নেই।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close