শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

  ০৮ মে, ২০২৪

গাজীপুরের শ্রীপুর

গো-খাদ্য হিসেবে পরিত্যক্ত তুলা পশু ও মানুষের স্বাস্থ্যহানি

শ্রীপুরের নিজমাওনা বাজারে কারখানার উচ্ছিষ্ট তুলার দোকান -প্রতিদিনের সংবাদ

পশুর সুষম খাদ্য খড়, ঘাস থাকলেও গাজীপুরের শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন কারখানার উচ্ছিষ্ট ও পরিত্যক্ত তুলা। সরেজমিনে এমনই দৃশ্য দেখা গেছে। এতে খামারিরা সাময়িক লাভবান হলেও যা ব্যবহারে পশু স্বাস্থ্যহানি ও মৃত্যু ঝুঁকিও বাড়ছে। ওই সব পশুরমাংস খেয়ে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে মানুষের স্বাস্থ্য। গো-খাদ্য হিসেবে উচ্ছিষ্ট তুলা বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নের হাট-বাজার পাড়া, মহল্লায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য তুলার দোকান। আর এসব কারখানার ক্ষতিকারক উচ্ছিষ্ট তুলা গো-খাদ্য হিসেবে মজুদ রেখে বিক্রি করছেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী।

জানা গেছে, স্থানীয়দের মধ্যে এখনও সচেতনতা তৈরি না হওয়া ও গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এর ব্যবহার। অনেকেই তুলা খাবার হিসেবে ব্যবহার করলে গবাদি পশুর স্বাস্থ্য ভালো হয় এমন ভ্রান্ত ধারণা থেকেও এ ধরনের খাবার ব্যবহার করছেন। এদিকে গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে এইসব পরিত্যক্ত ক্ষতিকারক তুলা কম দামে ক্রয় করে বেশি দামে বিক্রি ও মজুদ রেখেছেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা।

শ্রীপুর উপজেলা পশুসম্পদ অফিস সুত্রে ও স্থানীয়রা মাধ্যমে জানা গেছে, উপজেলায় সরকারি হিসাবে গবাদিপশু রয়েছে প্রায় দেড় লাখ। বিশেষ করে শ্রীপুর শিল্পায়নের ফলে কৃষিজমি কমে যাওয়ায় গবাদিপশুর খাদ্যের সংকট দেখা দিলে তুলাকে বেছে নেয় গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে। এতে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা গরুগুলো অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়। গো-খাদ্য হিসেবে কারখানার উচ্ছিষ্ট, পরিত্যক্ত তুলা বন্ধ না হলে পশুর স্বাস্থ্য ও মানব স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়বে। এটি বন্ধে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন সচেতন মহল।

শ্রীপুর পৌরসভার মাধখলা গ্রামের তুলা ব্যবসায়ী রফিকুল বলেন, এই তুলা গরুর খাদ্য হিসেবে ক্ষতিকারক কি না সেটা জানা নেই। খামারীরা এসব তুলা ব্যবহার করছেন। তাই আমরা বিক্রি করছি।

মাওনা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, তুলা খেলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে গরু মোটাতাজা হয়। তবে এটা ক্ষতিকারক কি না জানা নেই।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম ডা. আতিকুর রহমান জানান, পশুর একমাত্র সুষম খাদ্য খড় ঘাস, ঘাস উৎপাদনে খামারীদের উৎসাহ দেওয়া হয়। তবে কারখানার পরিত্যক্ত তুলা গবাদি পশুর জন্য ক্ষতিকারক। পশু খাদ্যে এসব ব্যবহার করলে গবাদিপশুর মৃতুর ঝুঁকি রয়েছে। আর ওই সব পশুরমাংস খেয়ে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে মানুষের স্বাস্থ্য। ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউএনও শোভন রাংসা জানান, গবাদি পশুকে দ্রুত মোটাতাজা করতে যেসব খামারী ও কৃষকরা পরিত্যক্ত তুলা ব্যবহার করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
উচ্ছিষ্ট তুলা,গো-খাদ্য তুলা,গাজীপুরের শ্রীপুর
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close