ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৮ মে, ২০২৪

ফাইনালে মোহামেডান

আক্রমণের পসরা সাজিয়েও গোল নামক সোনার হরিণের দেখা পাচ্ছিল না মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। উল্টো ধারার বিপরীতে খেলে বাংলাদেশ পুলিশ এফসির সঙ্গে পিছিয়ে পড়ে। শেষে দারুণ প্রত্যাবর্তনে ২-১ গোলের জয়ে আবারও ফেডারেশন কাপের ফাইনালের টিকিট নিজেদের হাতে নিয়েছে

সাদা-কালো দলটি।

আগামী ১৪ মে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড ও বসুন্ধরা কিংস। জয়ী দলটি হবে মোহামেডানের প্রতিপক্ষ। ফেডারেশন কাপের ফাইনাল গড়াবে ২১ মে।

গতকাল মুন্সীগঞ্জের শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আধিপত্য দেখিয়েও প্রথমার্ধে গোল পায়নি মোহামেডান। বিরতি থেকে ফিরে উল্টো থমকে যেতে হলো সাদা-কালোদের। পুলিশ ফুটবল ক্লাবের উজবেক ডিফেন্ডার আখররবেক উকতামভের হেডে পরাস্ত হলেন মোহামেডান গোলকিপার সুজন হোসেন। তবে কি চ্যাম্পিয়নদের বিদায় হবে ফাইনালের আগেই?

এই শঙ্কা যখন ঘুরপাক খাচ্ছে গ্যালারিতে উপস্থিত একদল সাদা-কালো সমর্থকের মনে, তখনই আরেকটি ফিরে আসার গল্প লিখে ফেলে মোহামেডান।

৬৯ মিনিটে ইমানুয়েল সানডে গোল করে ম্যাচ সমতা আনেন। এর ১০ মিনিট পর নিঁখুত হেডে জয়সূচক গোলটি করেন

শাহরিয়ার ইমন। তাতে এক বছরের মধ্যে তৃতীয়বার কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছে গেছে মোহামেডান। চলতি মৌসুমে দুটি টুর্নামেন্টেই ফাইনালিস্ট মোহামেডান। এখন তাদের অপেক্ষা ১৪ মে দ্বিতীয় সেমিফাইনালের। যেখানে মুখোমুখি হবে বসুন্ধরা কিংস ও গতবারের আরেক ফাইনালিস্ট আবাহনী। বিজয়ীদের সঙ্গে ২১ মে শিরোপা লড়াইয়ে নামবে মোহামেডান।

ম্যাচের ১২ মিনিটে প্রথম সুযোগ তৈরি করেছিল মোহামেডান। ডান দিক থেকে আরিফ ইসলামের ক্রসে ইমানুয়েল সানডের স্লাইডিং হেড দূরের পোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়। এরপর বেশ কটি সুযোগ তৈরি করেও গোল করতে পারেনি মোহামেডান। প্রথমার্ধে সুযোগ এসেছিল পুলিশের সামনেও। তবে দুর্বল ফিনিশিংয়ে সেই সুযোগ হাতছাড়া হয়।

দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ঠিকই ধারার বিপরীতে গোল পেয়ে যায় পুলিশ। ডান দিক থেকে ব্রাজিলিয়ান প্লে-মেকার এডওয়ার্ড মোরিও ফ্রি-কিকে একটু নিচু হয়ে হেড করে গোল করেন উখমেতভ। ম্যাচের ৫৩ মিনিট গোলকিপার আহসান হাবিব বিপুর কৃতিত্বে লিড অক্ষুণ্ণ থাকে পুলিশের। আরিফের ছোট পাসে মোজাফফরভের বক্সের ওপর থেকে নেওয়া শট শেষ মুহূর্তে কর্নারের বিনিময়ে ফিরিয়ে দেন পুলিশ কিপার।

দুই মিনিট পর ডান দিক থেকে আরিফের আরেকটি সেট-আপে ইমানুয়েল সানডের টোকা দূরের পোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়। তারপরও আশা ছাড়েনি মোহামেডান। ফলটা তারা পায় ৬৯ মিনিটে। মালির ফরওয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতের শট ব্লক করেছিলেন আবদুল্লায়েভ। সেটা চলে আসে আরিফের কাছে। এই উইঙ্গার ভলি করে পাঠিয়ে দেন বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা সানডের কাছে। চলতি বলে নাইজেরিয়ান ফরওয়ার্ডের ভলি

জালে জড়ায়।

৭৮ মিনিটে আরেকটি সমন্বিত আক্রমণে গোল পেতে পারত মোহামেডান। আরিফের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান দিক থেকে দিয়াবাতের লো ক্রস শাহরিয়ার ইমন পারেননি পা ছোঁয়াতে। বল চলে যায় সানডের কাছে, তবে তার শট রুখে দেন উখমেতভ। পরের মিনিটে অবশ্য উৎসবের উপলক্ষ পেয়ে যান মোহামেডান সমর্থকরা। ডান দিকে অসাধারণ খেলা আরিফের বাড়ানো বলে সানডে ক্রস ফেলেন বক্সে। শাহরিয়ান ইমন হেড করে পুলিশ গোলকিপার বিপুকে পরাস্ত করে মোহামেডানকে তুলে নেন ফাইনালে।

গত ফেডারেশন কাপের ফাইনাল জয়ের পর মোহামেডান চলতি মৌসুমে খেলেছে স্বাধীনতা কাপের ফাইনাল। বসুন্ধরা কিংসকে সেই ম্যাচে অবশ্য হারাতে পারেনি তারা। এরপর লিগে এখন পর্যন্ত আলফাজের শিষ্যরা আছে দ্বিতীয়স্থানে। লিগ জয় ভীষণ কঠিণ হলেও আরেকবার ফেডারেশন কাপ জিতে চিরশত্রু আবাহনীর ১২ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার একক রেকর্ডটা ছুঁয়ে ফেলার সুযোগ মোহামেডানের সামনে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close