আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

  ১৯ মে, ২০২৪

ঘুষ নিতে গিয়ে পুলিশ সদস্য আটক, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে উদ্ধার

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার এক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ঘুষের টাকা নিতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি গতকাল শনিবার (১৮ মে) পৌর সদরের শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের সোহেল রানার বাড়িতে ঘটেছে।

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য আশিক রানা কং/৭২৩ আক্কেলপুর থানায় পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত। তিনি সাদা পোশাকে চুক্তি হওয়া ঘুষের টাকা চাইতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী, স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক সপ্তাহ আগে জমি-জমা নিয়ে একটি অভিযোগের তদন্ত করতে একজন উপপরিদর্শক (এসআই) সঙ্গে কনস্টেবল আশিক রানা ওই গ্রামে যান। তখন কনস্টেবল আশিক বিবাদী পক্ষের সোহেলের কাছে এক হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় কনস্টেবল আশিক ক্ষুব্ধ হয়ে সোহেলকে গালিগলাজ করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর দুই দিন পর রাতে কনস্টেবল আশিক রানা তল্লাশীর নাম করে সোহেলের পকেটে মাদকদ্রব্য ঢুকিয়ে দেয়। তখন তাকে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন আশিক। টাকা নিতে শনিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে কনস্টেবল আশিক আবারো সোহেলের বাড়িতে আসেন। তিনি ঘুষের ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে সোহেল ৫ হাজার টাকা কনস্টেবলের হাতে ধরিয়ে দেন। এসময় সোহলের স্ত্রী ডেইজি মুঠোফোনে ঘুষের টাকা লেনদেনের ভিডিও ধারণ করেন। বিষয়টি কনস্টেবল টের পেয়ে ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ওই কনস্টেবল ও সোহেলের মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় গ্রামবাসী ওই বাড়িতে ভিড় জমায়। পরে সোহেল রানা নিজেই জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দেয়। সকাল দশটার দিকে স্থানীয় ওর্য়াড কাউন্সিলর ফেরদৌস হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল আসে। থানা পুলিশ সোহেলকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মুঠোফোনে থাকা ঘুষ লেনদেনের ভিডিও মুছে ফেলে ও কনস্টেবলকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী সোহেল রানা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জমি-জমা সংক্রান্ত একটি অভিযোগে এসে কনস্টেবল আশিক এসে আমার কাছে টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় আমার পকেটে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। ২০ হাজার টাকা দেওয়ার চুক্তিতে তিনি আমাকে ছেড়ে দেন। টাকা নিতে আসলে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত আশিক রানা বলেন, গত কয়েক দিন আগে আমার মা মারা যান। তারপর থেকে মানসিক বিষন্নতায় ভুগছি। আমি ওই এলাকায় মাদকের খোঁজ নিতে গেলে তারা কৌশলে আমাকে ডেকে নিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। আমি কোন টাকা-পয়সা লেনদেন করিনি। পৌর কাউন্সিলর ফেরদৌস সরদার বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে থানা পুলিশের সঙ্গে ওই কনস্টেবলকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিষয়ে জানতে চাইলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মাসুদ রানা গতকাল শনিবার রাতে বলেন, এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একটি লিখিত প্রতিবেদন দিয়েছি। এবিষয়ে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার এক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ঘুষের,অভিযোগ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close