আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট)
বাগেরহাটের মোংলা
আ.লীগ নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে
ধর্মীয় পরিচয় ও আগের বিয়ের কথা গোপন রেখে সম্পর্ক এবং গর্ভের সন্তান নষ্টের অভিযোগ উঠেছে মোংলা থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) হিরণময় সরকারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শনিবার (১১ মে) বাগেরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী।
এদিকে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (১২ মে) পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) হিরণময় সরকারকে মোংলা থানা থেকে প্রত্যাহার করে এসপি কার্যালয়ে যুক্ত করা হয়। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা এসপি মো. আবুল হাসনাত খাঁন। ভুক্তভোগী নারী যশোরের কোতোয়ালি থানার পাগলাদহ এলাকার বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় মহিলা আওয়ামী লীগের একজন নেত্রী।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী নারী বলেন, ৫ বছর আগে আগে পুলিশ কর্মকর্তা হিরণময় সরকারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এ সময় তিনি নিজেকে মুসলিম ধর্মাবলম্বী বলে জানান। তাদের মধ্যে প্রেম, পরে বিয়ের আশ্বাসে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সময় যশোর ও ঢাকায় তাদের আত্মীয়স্বজনসহ পরিচিতদের কাছে ভুক্তভোগীকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেন হিরণময়।
- ৫ বছর আগে পরিচয়ের সময় নিজেকে মুসলিম পরিচয় দেন হিরণময় সরকার
- বাগেরহাটে অভিযোগের পর (ওসি-তদন্ত) হিরণময়কে এসপি যুক্ত
- হিরণময়ের দাবি, অভিযোগকারী নারী কেবলই তার বন্ধু
অভিযোগে ভুক্তভোগী আরো উল্লেখ করেন, শারীরিক সম্পর্কের এক পর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু নানা অজুহাত দেখিয়ে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করান পুলিশ কর্মকর্তা হিরণময়। বিয়ের কথা বললেও নানা অজুহাত দিতে থাকেন তিনি। এর একপর্যায়ে মোংলা থানায় পরিদর্শকের (তদন্ত) দায়িত্ব পাওয়ার পর স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থানা ভবনে থাকা শুরু করেন হিরণময় সরকার। পরে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। এরপর তার খোঁজে মোংলায় আসেন ভুক্তভোগী নারী।
গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) মোংলার একটি আবাসিক হোটেল ওঠেন ভুক্তভোগী নারী। পরে বিষয়টি মোংলা থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম ও সহকারী পুলিশ সুপার (মোংলা সার্কেল) মুশফিকুর রহমান তুষারকে জানান তিনি। শনিবার বিকেলে বাগেরহাট পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী নারী। পরে পুলিশ সুপারের আশ্বাসে তিনি রবিবার মোংলা থেকে যশোর চলে যান।
জানতে চাইলে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল হাসনাত খাঁন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে হিরণময় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে পুলিশ পরিদর্শক হিরণময় সরকারকে মোংলা থানা থেকে প্রত্যাহার করে এসপি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে হিরণময় সরকার। তিনি বলেন, কয়েক মাস আগে তার সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। ওই নারী শুধুই বন্ধু ছিলেন। এখন তিনি যেসব অভিযোগ করছেন, সে বিষয়ে কিছু বলার নেই।
পিডিএস/আরডি