ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০১ মে, ২০২৪

রোমাঞ্চ ছড়িয়ে শিরোপা জিতল আবাহনী

মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ছক্কায় বল উড়িয়েই দুহাত উঁচিয়ে করতে থাকলেন উল্লাস। বাউন্ডারি লাইনের বাইরে থেকে ছুটে এলেন সতীর্থরা। সেরা বেশ কয়েকজন তারকাকে ছাড়াই শেখ জামাল ধানমন্ডিকে রোমাঞ্চকর ম্যাচে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। নিশ্চিত করে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের ২৩তম শিরোপা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেএসপিতে শেখ জামালকে ৪ উইকেটে হারায় আবাহনী। আগে ব্যাট করে সাকিব আল হাসানের মাঝারি ইনিংসের পর জিয়াউর রহমানের বিস্ফোরক ইনিংসে ২৬৭ রান করেছিল শেখ জামাল। ১ বল আগে ওই রান পেরিয়ে জিতে যায় আবাহনী।

এ জয়ে দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল ধানমন্ডির ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। শিরোপা নিশ্চিত করার মিশনে একটি ম্যাচও হারেনি খালেদ মাহমুদ সুজনের কোচিংয়ে খেলা। প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে আবাহনীর এটি ২৩তম শিরোপা হলেও লিস্ট-এ স্বীকৃতি পাওয়ার পর এটি তাদের পঞ্চম শিরোপা। রান তাড়ায় আবাহনীর জয়ের ভিত গড়ে দেন এনামুল হক বিজয় ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। বিজয় ৮০ বলে করেন ৬৭। আফিফ ৮৮ বলে আউট হন ৮৩ রান করে। শেষদিকে মহাগুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ৫৪ বলে অপরাজিত ৫৩ করে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ থাকায় আবাহনীর ১০ জন খেলোয়াড় চলে গিয়েছিলেন জাত্য দলের ক্যাম্পে। এই ম্যাচের জন্য তাই খেলোয়াড় সংকটে পড়েছিল তারা। পরে ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির কাছে আবেদন করে তিনজন খেলোয়াড় পায় তারা। চট্টগ্রামে জাতীয় দলের ক্যাম্প থেকে এসে খেলেন তানজিম হাসান সাকিব, আফিফ হোসেন ও তানবীর ইসলাম। এই তিনজনই দলের জয়ে রাখেন ভূমিকা।

সকালে টস জিতে শেখ জামালকে ব্যাট করতে পাঠায় আবাহনী। নাহিদুল ইসলাম ও তানজিম সাকিব ১৫ রানে ৩ উইকেট ফেলে তৈরি করেন প্রবল চাপ। এরপর সাকিব ও সৈকত আলির জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে শেখ জামাল। দুজনের ৭২ রানের জুটির পর ফেরেন ৪১ করা সৈকত। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে মাঠে নামা সাকিব ৫৬ বলে করেন ৪৯ রান। শেষদিকে রান বাড়ানোর নায়ক জিয়া। ৮ ছক্কায় ৫৮ বলে করেন ৮৫ রান। রান তাড়ায় শুরুতে সাব্বির হোসেনকে হারানোর নাঈম শেখও আউট হন থিতু হয়ে। তবে তাতে বিপদে পড়েনি আবাহনী। বিজয় আর আফিফ মিলে গড়েন ১০৩ রানের জুটি। এই দুজনের বিদায়ের পর নাহিদুলের ১৯ বলে ২৪ আর মোসাদ্দেকের ফিফটিতে খেলা শেষ করে আকাশী নিল জার্সিধারীরা।

এদিকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) সুপার লিগে ঝড়ো ফিফটির দেখা পেয়েছেন তামিম ইকবাল খান। ফিফটির দেখা পেয়েছেন তার সতীর্থ মুশফিকুর রহিমও। তাতেই গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে সাত উইকেটের বড় জয় পেয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। নারায়ণগঞ্জের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪২.৩ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান সংগ্রহ করে গাজী গ্রুপ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন আবদুল গাফফার। ৫৪ বলে দুটি চার ও তিনটি ছক্কা হাঁকান তিনি। এছাড়া ৫৪ বলে ৩৬ রান করেন মঈন খান। ১৩ বলে ২০ রান করেন হার্ডহিটার হাবিবুর রহমান সোহান। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন হাসান মাহমুদ ও রেজাউর রহমান রাজা।

ছোট লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকে আগ্রাসী ব্যাটিং উপহার দেন তামিম। তরুণ ব্যাটার শাহাদাত হোসেন দিপুকে নিয়ে ৫২ রানের জুটি গড়েন তিনি। প্রাইম ব্যাংক তাদের প্রথম উইকেট হারায় দলীয় ১১তম ওভারে। ব্যক্তিগত ১৬ রান করে আউট হন দিপু। এরপর স্কোরবোর্ডে দুই রান যোগ হতেই ফিরে যান দলপতি জাকির হাসান। তৃতীয় উইকেটে দারুণ জুটি উপহার দেন তামিম ও মুশফিক। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের ৭২ রানের জুটিতে সহজ হয়ে আসে প্রাইম ব্যাংকের জয়ের পথ। দারুণ এই জুটি ভাঙে তামিমের বিদায়ে। আউট হবার আগে ৭২ বলে ৭৬ রান করেন তামিম। ১০টি চার ও দুটি ছক্কা হাঁকান তিনি। বাকি পথ মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে কাটিয়ে দেন মুশফিক। শেষ পর্যন্ত ৩১.৩ ওভারে জয় পায় প্রাইম ব্যাংক। মুশফিক ৫৫ বলে ৫৯ ও মিঠুন ২৯ বলে ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন। গাজী গ্রুপের হয়ে একটি করে উইকেট নেন মঈন ও শেখ পারভেজ। সুপার লিগে এটিই প্রাইম ব্যাংকের প্রথম জয়। তিন ম্যাচে দুই পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে দলটি। অন্যদিকে সুপার লিগের তিন ম্যাচের তিনটিতেই হেরেছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close