নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ মে, ২০২৪

যেমন চলছে নতুন এমপির উত্তরা

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে উত্তরার রাজনীতিতে বড় ধরণের একটি পরিবর্তন আসে। সেই পরিবর্তনের নানা নাটকীয়তায় শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র একজন এমপি পায় বৃহত্তর উত্তরাবাসী।

জানা গেছে, সাহারা খাতুনের হাতে গড়া এ আসনটিতে রাজনীতির পরিবর্তনের হাওয়া লাগে নির্বাচনের আরো প্রায় ৬ মাস আগ থেকেই। স্থানীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে যারা ছিলেন তাদের পেছনে ফেলে নৌকার টিকিট পান সাবেক এমপি। নৌকার টিকিট দখলে নিতে পারলেও এক জায়গায় আনতে পারেননি নৌকার পক্ষে থাকা অধিকাংশ নেতাকর্মীকে। শেষ পর্যন্ত জোট প্রার্থী শেরিফার প্রবেশে পথ রুদ্ধ হয়ে যায় নৌকার একমাত্র প্রার্থীর। জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের সঙ্গে টানাটানিতে কপাল খুলে যায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। সেই সুবাধে উত্তরার চিরচেনা রাজনীতির গতিপথ পাল্টে যায় মাত্র ২০ দিনে।

আশা জাগানিয়া ভোট নিয়ে উত্তরার অভিভাবক হিসেবে নতুন করে দৃশ্যপটে আসেন শিল্পপতি খসরু চৌধুরী। নতুন এমপি হিসেবে ইতিমধ্যে তিনি প্রায় ৫ মাস অতিক্রম করতে চলেছেন। বিগত ৫ মাসে কেমন চলছে উত্তরা, এ নিয়ে কথা হয় স্থানীয় কয়েকজন সিনিয়র নেতার সাথে।

নিজের অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে নেতারা বলছেন, মাত্র ৫ মাসে দেখানোর মতো বা বড় কোন কাজ করার জন্য খুব বেশী সময় নয়। তবে এই কয় মাসে এলাকার রাজনীতিতে গুণগত কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ্য অভিভাবক নির্বাচন করা, সেক্টর কল্যাণ সমিতিসহ নানা সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরাসরি ভোটের আয়োজন ছিল উল্লেখ করার মতো। এর বাইরে চিরচেনা দখল চাঁদাবাজিসহ ফুটপাত দখলের যে বিশৃঙ্খলা ছিল তা অনেকটাই পরিচ্ছ্ন্ন বলা চলে।

ইতিমধ্যে মূল উত্তরা অংশে থাকা সড়কগুলো দখলমুক্ত করা হয়েছে। রাজনৈতিক দাপটে চলা আয়ের খাতগুলোর অধিকাংশই বন্ধ করা হয়েছে। যেগুলো এখনো চালু আছে তার বিরুদ্ধে ক্রমাগত বক্তব্য বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় এমপি। রাতারাতি পরিবেশ অনুকূলে রাখা সম্ভব না হলেও পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। বিশেষ করে স্থানীয় স্কুল কলেজগুলোতে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করার বিষয়ে তিনি যথেষ্ঠ আন্তরিক বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে ইচ্ছুক নয় এমন একটি থানার সভাপতি প্রতিবেদককে বলেন, খসরু ভাই এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্খা বেড়ে যায়। স্থানীয় দখল চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে তার অবস্থান পরিস্কার। এ অবস্থান তিনি কতদিন ধরে রাখতে পারেন তা দেখার বিষয়। তবে আপাতত ভালোই সামাল দিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে বর্তমান এমপি কতোটা অনুকূলে হাঁটতে পারেন তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কম থাকায় অনেক বিষয় তিনি এখনো বুঝে উঠতে পারেননি। তাই নানা ক্ষেত্রে তালগোল পাকানোর মতো অবস্থা দেখছেন অনেকে। তবে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার মতো পোড় খাওয়া রাজনৈতিক নেতারা তার সঙ্গে থাকায় অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে মনে করছেন তিনি। সেক্ষেত্রে বর্তমান এমপি কতোটা মনোযোগী হবেন তার উপর নির্ভর করবে সফলতা বা ব্যর্থতা। এ ক্ষেত্রে সামনের সিটি নির্বাচন বর্তমান এমপির জন্য একটি এসিড টেষ্ট হিসেবে দেখা দিতে পারে।

বর্তমান এমপির কার্যক্রম নিয়ে কথা হয় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা কাজী সালাউদ্দিন পিন্টুর সাথে। তিনি বলেন, আমাদের এমপি মহোদয়কে যে আশা ভরসা নিয়ে উত্তরাবাসী তাদের অভিভাবক হিসেবে মনোনীত করেছেন তা বাস্তবায়ন করতে তিনি বদ্ধপরিকর। আমি মনে করি তিনি তার দেওয়া অঙ্গীকারগুলো ব্যপারে যথেষ্ট সজাগ। সুসাশন এবং মডেল উত্তরাকে নিয়ে উনার অনেক ভালো ভালো পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করি মানুষ সে সুফলগুলো পাবে। আমি সবাইকে ধৈর্য্য ধারণসহ সহযোগিতার অনুরোধ জানাই। একটি বিশেষ অঞ্চলের লোকজনদের প্রীতির বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো অপপ্রচার। সবাই তার কাছে সমান।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close