মনিরুজ্জামান, ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম)
গ্রাহক নন, তবুও গরীবের ঘাড়ে বিলের বোঝা
পল্লী বিদ্যুৎতের গ্রাহক নন তিনি, এমনই এক শ্রমজীবীর নামে ৬ মাসের বকেয়া বিল দেখিয়ে তা পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভূরুঙ্গামারী জোনাল অফিস। শুধু তাই নয়, নোটিশ পাওয়ার পর অতিসত্ত্বর বিল পরিশোধ না করলে ওই দিনমজুরের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের এই তুঘলকী কা-ে বিপদে পড়েছেন ভুক্তভোগী ওই গরীব মানুষটি।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকেরছড়া গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে হবির আলী। পেশায় তিনি একজন দিনমজুর। বাড়িতে তার নামে কোনও বিদ্যুৎ সংযোগ বা মিটার না থাকলেও হবির আলীর নামে ৬ মাসের বকেয়া বাবদ ১ হাজার ৯৫১ টাকা দেখিয়ে তা পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ ভূরুঙ্গামারী জোনাল অফিস।
হবির আলী জানান, আমার নামে কোনও মিটার নাই। তবুও বকেয়া বিল দেখায় তা পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে বিদ্যুৎ অফিস। আমি বিদ্যুৎ অফিসে গিয়েছি , কোনো সমাধান পাইনি।
একি এলাকার খোকন মিয়া নামের অপর এক ব্যক্তির নামে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলেও গ্রাহকের সংযোগ হিসাব ৯৯৭/১৬৬০ দেখিয়ে ৮ হাজার ৮৪৬ টাকা বকেয়া দেখানো হয়েছে।
ভূক্তভোগী খোকন জানান, এতো টাকা বিল দেখে আমার মাথা ঘুরে গেছে। আমি গরিব মানুষ। বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে ছিলাম। কোন সমাধান হয়নি। গ্রাহকদের দেওয়া নোটিশের কপিতে বলা হয়েছে, রেকর্ডপত্র অনুযায়ী ৯/১০/২০২১ তারিখে বকেয়ার কারণে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ মতাবস্থায় অত্র নোটিশ প্রাপ্তির পর অতি সত্ত্বর বকেয়া পরিশোধ ও পুনসংযোগ গ্রহণ করার জন্য বলা হইলো। অন্যথায় এ বকেয়া আদায়ের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ আইন ও পিডিআর এ্যাক্ট অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে। ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইন চার্জ- ওসিকে মামলা করার জন্য এই নোটিশের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও আমিনুল ইসলাম, ফয়েজউদ্দিন, শিপন মিয়া, আমিনুর রহমান, রজব আলী ও আজাদুল হকের নামে বকেয়া পরিশোধের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অথচ তাদের নামে কোন বকেয়া নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে নোটিশ পৌঁছে দেওয়া মিটার রিডার রায়হান মিয়া বলেন, ‘অফিস থেকে ওই নোটিশগুলো সরবরাহ করে গ্রাহক বরাবর পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে। আমি শুধু পৌঁছে দিয়েছি। যাদের নামে সংযোগ ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে তাদেরকে অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছি।
পল্লী বিদ্যুতের ভূরুঙ্গামারী জোনাল অফিসের ডিজিএম মিজানুর রহমান বলেন, ‘ওই ব্যক্তিরা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি বিষয়টি বিলিং সহকারীকে যাচাই করতে বলেছি। নোটিশপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নামে যদি সংযোগ না থেকে থাকে তাহলে এমন নোটিশ জারির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।