প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০১ মে, ২০২৪

যশোরে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

বৃষ্টির সম্ভাবনা ৩ মে

এবারের মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে মঙ্গলবার যশোরে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ৩ মে থেকে ৭ মে পর্যন্ত ৫ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ সময় সারা দেশে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বিস্তার লাভ করতে পারে।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা, রাজশাহী, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলাগুলোর ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর এবং খুলনা জেলাগুলোর ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ৭, কুমারখালীতে ৪২.৫, মোংলায় ৪২.৩, সাতক্ষীরায় ৪২.২, খুলনায় ৪১.৫ ও দিনাজপুরে ৪১, গোপালগঞ্জে ৪০.৭, ফরিদপুরে ৪০.৩, টাঙ্গাইলে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সন্ধ্যায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৬৬ শতাংশ।

আবহাওয়া পূর্বাভাসে আরো বলা হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৩ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূচক অনুযায়ী, ৩৬ থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৩৯.৯ মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১.৯ তীব্র তাপপ্রবাহের অন্তর্ভুক্ত। তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে গেলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে গণ্য করা হয়।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, আগামী তিন দিন পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে আগামী দু-তিন চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পূর্ব ভারতে তাপপ্রবাহের দাপট দু-তিন দিন ধরে চলবে, আবার দক্ষিণ ভারতে এই পরিস্থিতি জারি থাকবে আগামী পাঁচ দিন। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডের কিছু অংশে ১ মে (বুধবার) পর্যন্ত, আবার কোথাও কোথাও ২ মে পর্যন্ত তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বজায় থাকবে। তেলঙ্গানা এবং সিকিমের কিছু অংশেও তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গত সোমবার সে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল পশ্চিমবঙ্গের কলাইকুন্ডায় (৪৫.৪ ডিগ্রি)। তারপরই ছিল অন্ধ্রপ্রদেশের নান্দিয়াল (৪৫ ডিগ্রি), তৃতীয় স্থানে ছিল ওড়িশার বারিপদা এবং পশ্চিমবঙ্গের পানাগড়। সোমবার ওই দুই জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পূর্ব আফগানিস্তান এবং উত্তর-পশ্চিম রাজস্থানের ওপর দুটি ঘূর্ণাবর্তের জেরে ওই অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। উত্তর-পূর্ব আসামের ওপর একটি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হওয়ায় অরুণাচল প্রদেশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং তুষারপাত হতে পারে। অন্যদিকে, আসাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরায় ৩ মে পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টি এবং ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদÍ দক্ষিণের এই আট জেলায় তাপপ্রবাহের কারণে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দক্ষিণের আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা কমারও কোনো সম্ভাবনা নেই।

আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার কলকাতায় দিনের তাপমাত্রা ছিল ৪১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ১৯৮০ সালে শেষ বার এপ্রিলের কলকাতায় দিনের তাপমাত্রা এতটা উঠেছিল। মঙ্গলবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে।

আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগর থেকে যে দখিনা হাওয়ার জন্য দক্ষিণবঙ্গে গ্রীষ্মকালে ঝড়বৃষ্টি হয়, সেই বাতাস আগামী রবিবারের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকা শুরু করতে পারে। যার জেরে বৃষ্টি হলেও হতে পারে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোতে। তাই সব ঠিক থাকলে রবিবার ৫ মে থেকেই গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। যা চলবে অন্তত ৬ তারিখ পর্যন্ত। উপকূলবর্তী জেলাগুলোতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেতে পারে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close