reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৯ জানুয়ারি, ২০২৪

সুষ্ঠু সুন্দর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আমাদের প্রত্যাশা

রেকর্ড গড়ল স্বাধীনতা-সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থবার জয়ের ফলে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাল দলটি। এই অবিস্মরণীয় জয়ে আমরা আওয়ামী লীগসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। এ ছাড়া নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা। গতকাল সকালে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান ভারত, রাশিয়া, চীন, ভুটান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূতরা। নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ২২৩ আসনে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের এমপি প্রার্থীরা। এই সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছাপিয়ে শান্তিপূর্ণ ভোটের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গত রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন ভবন থেকে ফল ঘোষণা শুরু হয়। এর আগে সারা দেশে ৪২ হাজার ৪৫৯ কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন ভোটাররা। যদিও বিএনপির অংশগ্রহণবিহীন এ নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৪০ শতাংশ, যা নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও সরকার। নির্বাচনে ২৯৯ সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৯৯টির বেসরকারি ফল ঘোষণা করা হয়; যার মধ্যে ২২৩টিতে আওয়ামী লীগ, ৬২টিতে স্বতন্ত্র, ১১টিতে জাতীয় পার্টি, অন্যান্য ৩ প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ওআইসি, রাশিয়া, ফিলিস্তিন ও গাম্বিয়ার পর্যবেক্ষকরা। ভোটগ্রহণের সময় শেষে রবিবার বিকেলে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে আসেন তারা। নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে বলেন, ভোটার এবং প্রার্থীর এজেন্টদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, আমরা সন্তুষ্ট। ওআইসির নির্বাচন ইউনিটের প্রধান শেখ মোহাম্মদ বন্দর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পর্যবেক্ষক হিসেবে সহিংসতার কোনো চিহ্ন আমাদের চোখে পড়েনি। নির্বাচনী পরিবেশ দেখে আমরা সন্তুষ্ট। অর্থনীতিবিদদের মতে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এখন তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে মূল্যস্ফীতি। অন্যান্য খাতের পাশাপাশি আর্থিক খাতের দুর্বলতাও অন্যতম। তবে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার, যেখানে কার্যকর মুদ্রানীতি ও বাজারভিত্তিক ডলারের মূল্য নির্ধারণ অন্যতম পদক্ষেপ হতে পারে। আর রাজস্ব বৃদ্ধিও সমস্যার উত্তরণে বড় ভূমিকা রাখবে। জ্বালানির উচ্চমূল্য, দুর্বল মুদ্রানীতি, টাকার অবমূল্যায়ন, পণ্যের সরবরাহ সংকট ও আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। একই সঙ্গে মজুরি না বাড়ায় মানুষের ভোগব্যয় কমছে, যা জিডিপি প্রবৃদ্ধিসহ অন্য ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি বাজারে কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। বরং ব্যাংকের ঋণখেলাপি, পুনঃতফসিল ও ঋণ অবলোপন বাড়ছে, যা ব্যালান্স অব পেমেন্টে চাপ তৈরি করছে। রেমিট্যান্স কমায় রিজার্ভও কমেছে। নতুন সরকারকে এসব চ্যালেঞ্জ অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে।

বলা সংগত, বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হতে যাচ্ছে। আগামী সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনার কৌশলে নিশ্চয়ই নতুনত্ব আনতে সচেষ্ট হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিরাজমান অর্থনৈতিক সংকট এবং অন্যান্য ব্যাপার নিয়ে তিনি অবশ্যই ওয়াকিবহাল। বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার জরুরি হয়ে উঠেছে, এটা তিনি উপলব্ধি করেছেন আরো আগেই। হয়তো এত দিনে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়ে যেত। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচন এসে যাওয়ায় সেটা শুরু করা সম্ভব হয়নি। এবার তিনি আগের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো যথাসম্ভব দূর করে একটি সুস্থ সুন্দর সুষ্ঠু অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close