reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৪ মে, ২০২৪

এসএসসির ফল প্রকাশ

ছেলেদের পিছিয়ে থাকার কারণ খুঁজতে হবে

২০২৪ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল রবিবার প্রকাশ করা হয়েছে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার গতবারের চেয়ে বেড়েছে। ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীরা ভালো ফল করেছে। ফলাফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ ৫-এর সংখ্যাও বেড়েছে। তবে সব বোর্ডেই জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা গতবারের চেয়ে কমেছে কিছুটা।

চলতি বছর পাসের হার ও জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক দিয়ে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে। ২০১৮ সাল থেকেই ছাত্রীদের এগিয়ে যাওয়ার সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সার্বিকভাবে এবার মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যাই ছিল বেশি। ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ পরীক্ষার্থীর মধ্যে মেয়ে ১০ লাখ ২৪ হাজার ৮০৩ জন; ছেলেদের সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৭৯৪ জন। ছাত্র ও ছাত্রীর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ বছর ৮৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ ছাত্রী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে, যেখানে ছাত্রদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। শুধু পাসের হারেই নয়, জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে ছাত্রীরা। এবার পূর্ণাঙ্গ জিপিএ অর্থাৎ পাঁচে পাঁচ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। তাদের মধ্যে ৮৩ হাজার ৩৫৩ জন ছাত্র; আর ৯৮ হাজার ৭৭৬ জন ছাত্রী। সে হিসেবে ১৫ হাজার ৪২৩ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে। সব মিলিয়ে এ বছর সার্বিক পাসের হার ৮৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।

সিলেট বোর্ডে এবার ফল বিপর্যয়ের জন্য মানসম্মত শিক্ষকের অভাবের পাশাপাশি মানবিক বিভাগে সাধারণ বিজ্ঞান এবং ধর্মশিক্ষা বিষয়ে হাজারেরও বেশি পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ায় সেখানে পাসের হার কমেছে। ধর্ম শিক্ষার মতো বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কেন ফেল করল তা ভাবাচ্ছে। অবশ্য শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর মতে, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারের এসএসসির ফল ভালো হয়েছে। ফলের সার্বিক দিকে বিশ্লেষণ করলে ভালো দিক বেশি। সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নানা পদক্ষেপের কারণে এমন ফল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। ক্রমেই মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার পেছনে সরকারের নানা উদ্যোগ, সামাজিক অগ্রগতিসহ বেশ কিছু কারণ তুলে ধরেছেন বিশ্লেষকরা। তবে ছেলেরা কেন মেয়েদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করেন তারা। শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেয়েরা পড়াশোনায় অনেক সিরিয়াস। বেশির ভাগ পরিবার মেয়েদের বাইরে ঘোরাফেরা, আড্ডা দেওয়া পছন্দ করে না। বাড়িতেই বেশি সময় কাটাতে হয়। ফলে তারা সেই সময়টা কাজে লাগায়। লেখাপড়া করে। এ ছাড়া শিক্ষায় মেয়েদের উপবৃত্তিসহ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে ছেলেদের পিছিয়ে থাকার বিষয় নিয়ে আরো ভাবা উচিত।

ছাত্রসংখ্যা কেন কমে যাচ্ছে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, পাসের হারের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে- অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা অগ্রগামী। মেয়েরা ভালো করছে সেটা খুব ভালো কথা। তবু ছেলেদের বিষয়টিতে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। ছাত্রদের পিছিয়ে পড়ার কারণ খুঁজে বের করে মেয়েদের পাশাপাশি তাদেরও ভালো ফলাফলে আগ্রহী করে তোলা হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close