reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ মে, ২০২৪

এনটিআরসি কতৃক প্রকাশিত ৫ম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে গাফিলতির অভিযোগ তুলে মানববন্ধন

এনটিআরসি কতৃক প্রকাশিত ৫ম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। বুধবার (২২ মে) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১৭তম ৩৫ উর্ধ্ব শিক্ষক নিবন্ধন ফোরাম এর উদ্যোগে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচিতে অভিযোগ করা হয় ক্ষতিগ্রস্থ ৭৩৯ জন প্রার্থী এনটিআরসিএ'র গাফিলতির স্বীকার হয়েছেন। মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনে পাস করি, কিন্তু বয়স ৩৫ শেষ যখন আবেদন করি তখন আমাদের বয়স ছিল। ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের সার্কুলার ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারিতে কিন্তু করোনা ও এনটিআরসিএর গড়িমসির কারনে এই পরীক্ষা আয়োজন শেষ করতে ৪ বছরের বেশী সময় নেয় এবং সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত ফলাফল হয়। ইতিমধ্যে এনটিআরসিএর তথ্য মতে ৭৩৯ জনের চাকরী প্রার্থীর ৩৫ বছর বয়স শেষ হয়েছে। কিন্তু কেন আমরা বয়সের ব্যাকডেট চাই সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বুঝেও না বুঝার চলনা করছে। যার কারনে ৫ম গণবিজ্ঞপ্তিতে আমরা আবেদন করতে পারিনি। আমরা যদিও নামেমাত্র সনদ পেয়েছি।

ভুক্তভোগীদের বলেন, এনটিআরসি এর নিবন্ধনে পাস করা কি আমাদের অপরাধ? আমাদের বিষয় উপেক্ষা করে গত (৩১ মার্চ) ৫ম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত করে এনটিআরসিএ। ঐ ৫ম গণবিজ্ঞপ্তির আবেদন গত ১৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে চলতি মাসের ৯ মে শেষ হয়েছে। এছাড়া চলতি মাসেই প্রাথমিক সুপারিশ করা হতে পারে সূত্রে জানা যায়। অথচ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৯৬ হাজার ৭৩৬ শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের ৫ম গণবিজ্ঞপ্তিতে ২৪ হাজারেরও কম প্রার্থী আবেদন করেছে ১৬ ও ১৭ তম নিবন্ধনধারীরা।এতে এনটিআরসিএর নিবন্ধনে পাস করে আমরা ১৭তম পঁয়ত্রিশ ঊর্ধ্বেদের কপাল পুড়ছে! তারা বলেন, আমাদের বিষয়ে একটি মামলা চলমান আছে। সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে মামলা উপেক্ষা করে এখন বেকায়দায় পড়েছে এনটিআরসিএ। মন্ত্রণালয়ও রয়েছে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ কিন্তু বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম হওয়া প্রার্থীদের নিয়ে। আমরা সরকারের কাছে একটা বিষয়ে অবগত করতে চাই যে - ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন এর এনটিআরসিএ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ থেকে শুরু করে মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করতে চার বছরের অধিক সময় অতিবাহিত হয়। যাহা একমাত্র কারন হচ্ছে ঐ সময় করোনা মহামারির ভয়ানক রুপ ধারণ করেছিল। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এনটিআরসিএর খামখেয়ালির কারনে পরীক্ষার আয়োজন করতে ব্যর্থ হয় তারা। যদিও সে সময় সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।

সার্বিক সহযোগিতার জন্য আমরা এনটিআরসিএর নিবন্ধনে পাস করা ১৭ তম ৫ম গণবিজ্ঞপ্তি–বঞ্চিত চাকরি প্রত্যাশীরা বয়সের ব্যাকডেট চেয়ে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছি ও মানববন্ধনও করেছি ১৭তম ৩৫ ঊর্ধ্বে শিক্ষক নিবন্ধন ফোরামের’ ব্যানারে। এক পর্যায়ে বিভিন্ন দাবির প্রেক্ষিতে ১৭ তম ৩৫ + এর কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয় এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান সহ দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের। এসময় তাঁরা দায় স্বীকার করে বলেন, করোনা মহামারির ও এনটিআরসিএর বিভিন্ন দাপ্তরিক কারণে যেহেতু প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিকের ফলাফল প্রকাশ করতে ৪ বছরের বেশি সময় লাগে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের। তাই বিষয়টি মানবিক বিবেচনা করে ৫ম গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছিল বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।

তারা বলেন, আমরা এনটিআরসিএর তুঘলকি কান্ডে ৫ম গণবিজ্ঞপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছি প্রধান কারন হচ্ছে যে, এমপিও নীতিমালায় আছে এনটিআরসিএ প্রতি বছর একটি করে পরীক্ষা নেওয়া ও একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার মাধ্যমে পরীক্ষার কার্যক্রম সম্পন্ন করা। কিন্তু এনটিআরসিএ তা করতে ব্যর্থ হয়েছে আমাদের সাথে। ’অথচ বিধি অনুযায়ী শূন্য পদের বিপরীতে ১৭তম প্রার্থীকে পাস করিয়েছে। এছাড়া একজন পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব প্রার্থী যদি সনদ অর্জন করে গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার সুযোগ না পান তাহলে শিক্ষকতা ছাড়া এ সনদের আর কোনো মূল্যই নেই? ১৭তম পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব প্রার্থীদের দাবি এনটিআরসিএর নিয়ম নীতি অনুসারে ১ বছর সময়ের মধ্যে পরীক্ষার আয়োজন করত তাহলে আমরা তিনটা গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার সুযোগ পেতাম। এমনকি ২০২২ সালে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৩৯ মাসের বয়সের ছাড় দেওয়া হয়েছে।

এনটিআরসিএ শিক্ষাব্যবস্থাকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করাতে চায়, তা আমরা শত ভেবেও বুঝে উঠতে পারছি না ।আমাদের দাবী হচ্ছে প্রত্যেক বিজ্ঞপ্তিতে সন্তোষজনক হারে ১৫,২৫,৩৯ মাস বয়সের ব্যাকডেট দেওয়া হয়েছে যদিও সেই সকল বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্ভুক্ত পরীক্ষাগুলো স্বাভাবিকভাবে প্রায় ১ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে যাহাতে করোনা মহামারীর মত কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল না।কিন্তু ৫ম গণ বিজ্ঞপ্তিতে বয়সের ছাড় মাত্র ৩মাস।যার ফলে আমাদের উপর চরমভাবে অভিচার করা হয়েছে। যদিও ১- ১৬ তম পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ প্রার্থীরা প্রত্যেকটি গণ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ পেয়েছে।কিন্তু আমরা ১৭তম ৩৫+ একটা বিজ্ঞপ্তিতেও আবেদনের সু্যোগ পাচ্ছিনা। অথচ ২০২০সালের সার্টিফিকেট ২০২৪ সালে পাওয়ার পরও যদি একবারও আবেদন করতে না পারি তাহলে আমাদের উপর মানবাধিকার লংঘন হওয়ার পাশাপাশি আমাদের সার্টিফিকেট এবং মেধার অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে বলে মনে করি। ইতিমধ্যে সার্টিফিকেট হাতে পাওয়ার পর একটা আবেদনের সুযোগ না দেওয়ায় অনেকে হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার মত পথ বেছে নিচ্ছেন।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close