ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১৮ মার্চ, ২০২৪

‘দলে পারফর্ম করে টিকে থাকতে হবে’

ওয়ানডে ক্রিকেটে বেশ কিছুদিন ধরেই অফ-ফর্মে ছিলেন লিটন দাস। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে দলে জায়গা হারিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ দলের এ ওপেনারের জায়গা হারানোকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার মতে, পারফর্ম না করলে যে কেউই জাতীয় দলে জায়গা হারাতে পারেন। তবে মেহেদী হাসান মিরাজ বলেছেন, লিটন আসলে বাদ হয়ে গেছেন এমন না, তিনি স্বমহিমায় ফিরবেন শিগগিরই।

গত শনিবার দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে লিটনকে বাদ দেওয়ার কথা জানায় বিসিবি। তার বদলে নেওয়া হয় জাকের আলি অনিককে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতেই দিলশান মাধুশঙ্কার বলে শূন্য রানে আউট হন লিটন। সর্বশেষ ১০ ওয়ানডেতে ফিফটি না থাকায় একাদশে জায়গা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। তবে লিটনকে শেষ ওয়ানডের আগে একদম স্কোয়াড থেকেই ছেঁটে ফেলা হয়। দেওয়া হয় কড়া বার্তা।

গতকাল রবিবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দল যখন অনুশীলন করছিল লিটন তখন বিকেএসপিতে আবাহনীর হয়ে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলছেন। অনুশীলন সেরে সংবাদ সম্মেলনে আসা মিরাজের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- বাদ পড়া লিটনের প্রতি দলের কি বার্তা থাকছে, উত্তরে মিরাজ বলেন, ‘আপনি দেখেন যে লিটন দা অনেক ভালো ভালো ইনিংস খেলেছে। তার অনেক ইনিংস আছে যেটা স্মরণীয়। আমি মনে করি ওনি বাদ পড়েছে ওইরকম কিছু না, আকার ক্যামবেক করতে পারবে- এটা আমি মনে করি। উনার মধ্যে সেই সম্ভাবনা আছে। আমরা জানি উনি কেমন খেলোয়াড়। উনি যে বাদ পড়েছে, এ রকম কিছু না। একটু হয়তো অফফর্মে আছে। আবার খুব দ্রুত বাংলাদেশ দলে ফিরে আসবে, এটা আমি বিশ্বাস করি।’

লিটনকে বাদ দিয়ে বিবৃতিতে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘সাদা বলে লিটনের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের কারণে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ ভিডিওবার্তায় তিনি আরো বলেন, ‘নতুন বলে লিটন ধারাবাহিক না থাকায় তারা এমন পথে হাঁটছেন।

যোগাযোগ করা হলে প্রধান নির্বাচক বাংলাদেশের এক গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তারা সাদা বলই বলতে চেয়েছেন। তবে সেটা কেবল ওয়ানডের জন্য। কারণ টি-টোয়েন্টিতে সাম্প্রতিক সময়ে দলের সেরা ব্যাটার লিটনই।

শেষ ১০ টি-টোয়েন্টিতে ৩৮.৩৩ আর ১৩৮.৮২ স্ট্রাইক রেটে দলের সর্বোচ্চ ৩৪৫ রান করেছেন লিটন। ২০২৩ সালে ৯ ম্যাচে ৪০.৩৭ গড়, ১৩৭.৪৪ স্ট্রাইকরেটে দলের সর্বোচ্চ ৩২৩ আসে তার ব্যাটে। ২০২৩ সালে টি-টোয়েন্টিতে বেশ ভালো করেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছে, ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে। এসব জয়ে বড় অবদান ছিল লিটনেরই।

তবে ফরম্যাট যখন ওয়ানডে তখন ধারাবাহিকতার প্রসঙ্গ এসেছে তার বেলায়। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করলেও তার কাছে প্রত্যাশা ছিল বেশি। বিশ্বকাপের পর নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডেতে রান পাননি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ওয়ানডেতেই শূন্য রানে ফেরেন, তার আউট হওয়ার ধরনে সমস্যা খুঁজে পান নির্বাচকরা।

লিটনের মতো সিনিয়র তারকাকে বাদ দিয়ে কড়া বিবৃতি দেওয়া দলের জন্য বার্তা কিনা এমন প্রশ্নে মিরাজ উত্তর দিয়েছেন কৌশলে, ‘জাতীয় দলে কিন্তু পারফরম্যান্স করেই খেলতে হবে। আমি যদি ভালো না খেলি, আমাকেও বাদ দেওয়া হবে। জাতীয় দল এমন একটা জায়গা আপনাকে পারফর্ম করে স্টাবলিস্ট হতে হবে। এটা একদিনের না। দেখেন মুশফিক ভাই, রিয়াদ ভাইরা অনেক বছর সার্ভিস দিয়েছে বাংলাদেশে। তারপরও সবার আপ ডাউনস থাকে। আমার কাছে মনে হয় পারফর্ম করে জাতীয় দলে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি খারাপ খেললেও কিন্তু আপনি চান্স পাবেন না, এটা প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রেই হতে পারে।’

নতুন নির্বাচক কমিটির খেলোয়াড়দের প্রতি কেমন চিন্তা তা নিয়ে বলতে চাননি মিরাজ, তিনি শুধু মনে করছেন পারফরম্যান্সে তাদের সবারই আরো মনোযোগ দেওয়া উচিত, ‘প্রত্যেকটা সিলেকশন প্যানেলের আলাদা আলাদা দর্শন থাকে। তাদের চিন্তা ভাবনা একেক রকম থাকে। এটা যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আমি বলতে পারবো না। তাদের চিন্তা কি ছিল, তাদের সঙ্গে আমার ওইরকম কথা হয়নি। এটা টিম ম্যানেজমেন্ট কোচ কিংবা অধিনায়ক জিনিসটা ভালো বলতে পারবে। একেক জনের একেক রকম চিন্তা ভাবনা থাকে। প্রত্যেকে প্লেয়ারের পারফরম্যান্স করতে হবে, এর আগেও বলেছি, এখনো স্টিল বলছি। পারফর্ম না করলে আপনি, আমার মনে হয় শুধু জাতীয় দল নয় দুনিয়ার কোথাও খেলতে পারবেন। পারফর্ম করেই আপনাকে খেলেতে হবে প্রত্যেকটা জায়গাতে। আমার কাছে মনে হয় যে প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের আরো বেশি সিরিয়াস হওয়া উচিত পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে এবং কোনো জায়গায় উন্নতি করলে ভালো হবে, সেই জায়গায় কাজ করা উচিত।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close