ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

পেসারদের ছন্দে ফেরানোর চ্যালেঞ্জ ওয়ালশের

খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। বাংলাদেশ দলের পেস আক্রমণ বিশ্বের অন্যতম সেরা হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সেসব স্মৃতিতে এখন ধূলোর আস্তরণ পড়েছে। যতই দিন যাচ্ছে টাইগারদের পেস বিভাগ হয়ে উঠেছে নখদন্তহীন। স্বরূপে ফেরাতে পেসারদের নিয়ে বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজন করেছেন বাংলাদেশের বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ। নিদাহাস ট্রফিকে সামনে রেখে কাল থেকে বিসিবি একাডেমি মাঠে শুরু হয়েছে এই বিশেষ ক্যাম্প। ওয়ালশের এই ক্লাসে যোগ দিয়েছেন ১৪ জন পেসার। তাদের মোকেবালা করতে ৫ ব্যাটসম্যানকেও ডেকে পাঠিয়েছেন ক্যারিবীয় কোচ।

ঘরের মাঠি ত্রিদেশীয় সিরিজ, টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের পেসাররা ছিলেন ছন্নছাড়া। একটা পর্যায়ে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে স্পিনাররা জাদুকরি কিছু না পারলে দলের হার নিশ্চিত। শ্রীলঙ্কায় টি-টোয়েন্টি সফরের আগে তাই এসব পেসারদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন ওয়ালশ। জাতীয় দলের এবং বাইরে থাকা ও নতুনদের ধারাবাহিকতা বাড়াতে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি।

ওয়ালশের ক্লাসে পেসারদের যে গতি বাড়ানো কিংবা বাউন্সার দেওয়ার শেখানো হচ্ছে, তা কিন্তু না। বরং পেসারদের বলা হচ্ছে যার যা দক্ষতা সে অনুযায়ী কাজ করতে। এ ব্যাপারে কোচ জানালেন সবকিছু সহজ-স্বাভাবিক রাখাই তার মূল উদ্দেশ্য, ‘বোলারদের মানসিক দিক নিয়ে কাজ করা হচ্ছে ক্যাম্পে। ওরা নিজেদের ক্ষমতা জানে এবং স্বাভাবিকভাবে যা হয়, সেটাই করছে। আমার মতে, শেষ সিরিজে এটাই করতে পারেনি। পেসাররা একটু বেশিই বাড়তি কিছু করতে চেয়েছে। ওদের জানতে হবে কোন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে এবং কীভাবে করতে হবে।’

ওয়ালশ আশাবাদী বোলাররা ধারাবাহিকতা আনতে পারলে সাফল্য কঠিন হবে না দলের জন্য। তিনি বলেছেন, ‘যদি ধারাবাহিকতা আনতে পারে, তবে ১০ বারের মধ্যে আটবারই ফল নিজেদের পক্ষে আসবে। আমরা চেষ্টা করছি ওদের ধারাবাহিক বানাতে এবং শান্ত থেকে কোনো কিছু করা শেখাতে।’

এ ধারাবাহিকতার অভাবই বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তবু পেসাররা কিছু উইকেট পেয়েছিলেন, টেস্টে যে এক মুস্তাফিজুর রহমানকে ছাড়া অন্য কাউকে দলে রাখারই সাহস করেনি ম্যানেজমেন্ট! ওয়ানডে সিরিজে অবশ্য প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই ভালো পারফরম্যান্স ছিল পেসারদের। তবে মাশরাফি কিংবা মুস্তাফিজদের নিয়ে তো কখনোই প্রশ্ন ওঠেনি। কিন্তু ভরসা রাখার মতো তৃতীয় পেসার যে পাওয়া যাচ্ছে না। ওয়ালশ বলছেন, বিশেষ এ ক্লাস সে কারণেই নেওয়া, ‘ধারাবাহিকতার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। গত কিছুদিন যতটা উচিত ছিল, তেমন বল করতে পারেনি। এ ক্যাম্পে সেখানেই দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে। সামনে কার কী ভ‚মিকা থাকবে, এটা বুঝতে হবে ওদের। এ ক্যাম্পে ফাস্ট বোলিং কী, সেটাও শেখানো হচ্ছে। এর জন্য কত কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, সেটা জানানো হচ্ছে।’

মার্চের শুরুতে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হবে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এই টুর্নামেন্টে পেসারদের ছন্দে ফেরানোটাকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছেন ওয়ালশ। বলেছেন, ‘আমরা ঘরের মাটিতে ভালো করতে পারিনি। সামনে শ্রীলঙ্কায় আমাদের জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং সিরিজ আছে। শেষ সিরিজে যা হয়েছে আমাদের ভুলে যেতে হবে। আর সামনে যা আসছে তার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।’

দক্ষিণ আফ্রিকা আর দেশের মাটিতে ব্যর্থতার কারণ খুঁজে পেয়েছেন ওয়ালশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক এই পেসার মনে করেন, বোলাররা নিজেদের ওপর আস্থা রাখতে আর ব্যাপারগুলো সরল রাখতে পারেননি। তিনি বলেছেন, ‘ওরা অনেক কিছুর চেষ্টা করেছে। ওদের জানতে হবে একটা পরিস্থিতিতে সেরা কাজটা কি আর তা কি করে বাস্তবায়ন করা যায়।’

মাহমুদুল হাসান, কাজী অনিক, রবিউল হক, আলী হোসেনের মতো তরুণরা আছেন নয় দিনের বিশেষ অনুশীলন ক্যাম্পে। শুরুতে তাদের শক্তি-দুর্বলতা বুঝে নিচ্ছেন ওয়ালশ, ‘ওদের কাউকে কাউকে প্রথমবারের মতো ভালো করে দেখছি। পরের কয়েক দিনে সবাইকে নিয়ে সুনির্দিষ্ট কাজ করা হবে। ওদের প্রতিটি বিভাগে উন্নতি করতে হবে। কোনো বিভাগে দুর্বলতা থাকলে সেই বিভাগ নিয়ে আমরা কাজ করব। আর যে বিভাগ ওদের শক্তি সেটাকে আরও শক্তিশালী করে তুলব।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist