পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি

  ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

পাথরঘাটায় ৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা 

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

বরগুনার পাথরঘাটায় আল মামুন নামে এক ব্যক্তির করা ১৩টি মামলার আসামি করা হয়েছে মনির-আসমা দম্পতিকে। একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করতে হয়েছে মনিরকে। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের জের ধরে তিন সাংবাদিক এবং আসমাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করিয়েছেন আল মামুন। পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

আল মামুন পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি ইউনিয়নের ধলু মিয়ার ছেলে। সে সৌদি প্রবাসী। ভুক্তভোগী মনির-আসমা দম্পতি একই ইউনিয়নের বাসিন্দা। সর্বশেষ মামলার আসামিরা হলেন- আসমা আক্তার, চরদুয়ানী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মজিবর রহমান, আজকের পত্রিকার পাথরঘাটা উপজেলা প্রতিনিধি তারিকুল ইসলাম ওরফে কাজী রাকিব, কালবেলার পাথরঘাটা প্রতিনিধি আল আমিন ফোরকান, মোহনা টেলিভিশনের পাথরঘাটা প্রতিনিধি সুমন মোল্লা ও অলি উল্লাহ।

ভুক্তভোগী মনির জানান, আল মামুন তাকে ভিসা দিয়ে সৌদি আরবে কাজের জন্য নিয়ে যায়। এর বছর খানেক পর থেকে তার স্ত্রী আসমার সঙ্গে মামুন যোগাযোগ শুরু করে। মামুন ছুটিতে বাড়িতে এসে আমার স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়। আসমা এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মামুনের লোকজন আমাকে জিম্মি করে। আমার স্ত্রী আসমাকে তালাক দিতে চাপ দেয়।

ভুক্তভোগী আসমা জানান, মামুন দেশে এসে সৌদি আরবে জিম্মি রাখা আমার স্বামী মনিরকে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে আমাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে আমাকে তালাক দিতে মনিরকে দেশে পাঠায় মামুন।

মনির তার স্ত্রী আসমাকে তালাক না দেওয়ায় বিভিন্ন জেলায় মনির এবং আসমার বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা করায় আল মামুন। একটি মামলায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রেপ্তার হন মনির। এতে অতিষ্ঠ হয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী আসমা ও তার সন্তানরা। এই সংবাদ সম্মেলনের জের ধরে সাংবাদিকসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করান আল মামুন। আল মামুন দেশে না থাকায় পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দিয়ে তার চাচাতো ভাই লিটন হাওলাদারকে দিয়ে বরিশালে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করান।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান এবিষয়ে বলেন, মনিরের স্ত্রীকে তালাক দিতে আল মামুন অনেক চেষ্টা করেছে। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে শালিস বৈঠক হয়েছে। স্বামীকে তালাক দিয়ে মামুনকে বিবাহ করতে রাজি না হওয়ায় মামুন নিজে বাদি হয়ে ৩ টি মামলা, মামুনের বাবা ধলু মিয়াকে দিয়ে একটি, চাচাতো ভাই লিটনকে দিয়ে ৩ টি, মামুনের ভাগিনা আবুবকরকে দিয়ে একটি, মামুনের বেয়াইন নাসরিন কে দিয়ে একটি ও বিদেশে নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তৈয়বুর রহমান, মরিয়ম, সগির নাজির ও রফিকুলকে দিয়ে একটি করে মোট ১৩ টি মামলা করেন। এসব মামলাগুলোর মধ্যে অর্ধেকের বেশি মামলা ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে আদালতের রায়ে।

এ দিকে পাথরঘাটার তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জাফর ইকবাল। কারা বলেছেন, সাংবাদিকরা যদি ভুক্তভোগীদের অভিযোগ প্রকাশ করে মামলার শিকার হন তাহলে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা কোথায়? শিগগিরই এ মামলা প্রত্যাহার হওয়া উচিত।

পাথরঘাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুজ্জামান বলেন, ‘চলতি মাসের ৪ তারিখে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া আসমার বিরুদ্ধে আরো একটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা রয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পাথরঘাটা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close