মারুফ আহমেদ, কুমিল্লা

  ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

কুমিল্লার দেবিদ্বার

চাঁদা না পেয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে  মারধর, ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার দেবিদ্বারে ২ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে স্থানীয় এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযুদ্ধা মো. মজিবুর রহমান মান্নান (৮০) ও তার ছেলেকে মারধর করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের কাছ থেকে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মান্নানের ছেলে প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন সরকার বাদী হয়ে ৮-৯ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার ২ নম্বর আসামি মো. গোলাম মোস্তফা সরকারকে রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে মোস্তফাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তাকে কুমিল্লা জেলহাজতে নেওয়ার আদেশ দেন বিচারক। গোলাম মোস্তফা কুমিল্লার উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টারের ভাগ্নে।

এর আগে শনিবার (২৭ এপ্রিল) উপজেলার গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের উজানিকান্দি গ্রামে বীর মুক্তিযুদ্ধার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযুদ্ধা মো. মজিবুর রহমান উপজেলার গুনাইঘর দক্ষিণ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান।

অভিযোগপত্র ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গুনাইঘর দক্ষিণ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মান্নানের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশি মোবারক হোসেনের জমিসহ নানা বিষয়ে বিরোধ চলছিল। এর জেরে বিভিন্ন সময়ে বাইরে থেকে লোকজন নিয়ে এসে মান্নানের পরিবারের লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া তার ছেলে রুহুল আমিনের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি আসছিলেন মোবারক। শনিবার দুপুরে মোবারক হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতার ভাগ্নে গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে ৮-৯ জনের একটি দল হকস্টিক, গ্যাসপাইপ নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মান্নানের বাড়ি গিয়ে তার ছেলের কাছে আবারও ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে না পাড়ায় মান্নান, তার ছেলে রুহুল আমিন ও ভাতিজা মো. শাকিল সরকারকে এলোপাতাড়ি মারধরে করেন তারা। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

মামলার বাদী রুহুল আমিন বলেন, ‘গোলাম মোস্তফা কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতার ভাগিনা হওয়ার সুবাধে এলাকায় সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। সে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দেওয়ার জন্য আমাকে হুমকী দিয়ে আসছে। চাঁদা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকী দেয় তারা। শনিবার বাড়িতে এসে চাঁদা চাইলে, আমি না দেওয়ায় বাবাসহ আমাদের মারধর করে। আমার কাছ থেকে ১০০ টাকা তিনটি অলিখিত স্ট্যাম্পে জোরপূর্বকভাবে স্বাক্ষর নেয়।’

গোলাম মোস্তফার অভিযোগ বিষয়ে জানতে গতকাল বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতা রোশন আলী মাস্টারের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি প্রতিবার সংযোগ কেটে দেন। পরে তিনি ফিরতি কলও দেননি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দেবিদ্বার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমানের ওপর হামলার অভিযোগে মামলার পর গোলাম মোস্তফা সরকার নামের এক আসামিকে রবিবার গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কুমিল্লা,দেবিদ্বার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close