নিজস্ব প্রতিবেদক
কোটা নিয়ে আন্দোলন সমীচীন নয় : কাদের
কোটা পদ্ধতি বাতিলে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ঘোষণা দেওয়ার পরেও গেজেট প্রকাশের দাবিতে ফের আন্দোলনের হুমকিকে সমীচীন মনে করছেন না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কোটা নিয়ে শিগগিরই সমাধান মিলবে জানিয়ে আন্দোলনকারীদের ক্যাম্পাসে ফিরে পড়াশোনায় মন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তিনি পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে কোটার বিষয়টি ফয়সালা করে দিয়েছেন, কোটা থাকবে না। এ নিয়ে আর উদ্বেগের কারণ নেই। তবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, অনুন্নত জেলা, মুক্তিযোদ্ধা ও নারী নিয়ে সুসমন্বিত কিছু করার চিন্তাভাবনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অন দ্য ফ্লোর অব দ্য হাউস পার্লামেন্টে বসে যা বলেছেন, তাকে বিশ্বাস করা উচিত। কারণ তিনি কথা দিয়ে কখনো কথা ব্রেক করেন না। আমি ছাত্রসমাজকে বলব, তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবির ব্যাপারে সরকার খুবই সহানুভূতিশীল, একটু ধৈর্য ধরতে হবে, অনতিবিলম্বেই তারা সমাধান পেয়ে যাবেন।’
প্রসঙ্গত, কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পটভূমিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে এ কোটা ব্যবস্থা বাতিলের কথা বলেন। কোটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার কথাও ওই দিন বলেন সরকারপ্রধান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব গত ১০ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছেছে। তবে রোববার দুপুর ১টা পর্যন্ত সেই কমিটি হয়নি।
কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কথা এদিক-সেদিক হওয়া, প্রধানমন্ত্রী এমন মানুষ উনি একটা বলে সেখান থেকে তার নড়নচড়ন হবে, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।’
‘এখন এখানে যদি কেউ রাজনীতি করতে চান, তাহলে ভিন্ন কথা। কিন্তু যৌক্তিক সমাধান যারা চায়, গেজেট কখন হলো না হলো, প্রাইম মিনিস্টারের মুখের কথা এটাতে তো আস্থা স্থাপন করা উচিত, বিশ্বাস করা উচিত।’
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী ‘ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবি তুলেছিল। কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাতালিকা থেকে তা পূরণের দাবিও জানিয়েছিল তারা।
প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের কথা বলার পর তারা এখন সেই প্রজ্ঞাপন প্রকাশের দাবিতে রোববার দেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। দ্রুত কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন না হলে ফের রাজপথে নামার হুমকি দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
"