প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

আবারও হিট অ্যালার্ট

নতুন করে সারা দেশে আবারও ৭২ ঘণ্টার তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল রবিবার সকালে আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সতর্কবার্তায় বলা হয়, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ রবিবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অর্থাৎ ১ মে সকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময়ে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পাবে। এর আগে তিন দফা ৭২ ঘণ্টা করে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করে আবহাওয়া অফিস। গতকাল সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা জানানো হয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্রতাপপ্রবাহ এবং রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাগুলোর ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

দিনাজপুর, রাঙামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ঢাকা ও বরিশাল বিভাগগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্র ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের আলীপুর আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, রবিবারের আগাম সতর্কতা বলা হয়েছে, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া- এই পাঁচ জেলায় এক সপ্তাহ ধরে কোথাও তাপপ্রবাহ কোথাও বা তীব্র তাপপ্রবাহ চলেছে। সেখানে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। তবে তাপপ্রবাহ পরিস্থিতির বদলাবে না এবং তাপপ্রবাহের লাল সতর্কতা জারি থাকবে।

রাজধানী ঢাকাসহ অন্তত ৪৫টির বেশি জেলার ওপর দিয়ে গত প্রায় এক মাস ধরেই নানা মাত্রার এই তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে, দিনের গড় তাপমাত্রাও কয়েক ডিগ্রি বেড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃষ্টিপাত ভালো করে হলে তাপমাত্রা কিছুটা কমতেও পারে। চলতি সপ্তাহের শেষ থেকেই উত্তর পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।

আবহাওয়ার বিভিন্ন মডেল পর্যালোচনা ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে ২ মে বা তার পর থেকে বৃষ্টিপাত হবে বিভিন্ন জায়গায়। স্থান ও সময়ের হেরফের হতে পারে সামান্য।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেছিলেন, আগামী মাসের শুরুতে মোটামুটি ভালোই বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। শনিবার সিলেট এলাকায় ঝড়ো বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। সে কারণে সিলেটের তাপমাত্রা কমেও এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত ও সর্বনিম্ন ২২ দশমিক ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সেখানে।

কিন্তু তারপরেও তিন দিনের হিট অ্যালার্টের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলছেন, ‘দেখা যাচ্ছে টুকটাক বৃষ্টি হলেও তাপপ্রবাহ চলতি মাস জুড়েই থাকছে। সে কারণেই হিট অ্যালার্ট দেওয়া হয়েছে। ১/২ তারিখ থেকে বৃষ্টি হলেও তার আগের তিন দিন তাপপ্রবাহ একই থেকে যাচ্ছে।’

গরম কাটাতে জুনে ভারী বৃষ্টিপাত পর্যন্ত অপেক্ষার প্রয়োজন হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদদের অনেকে। তবে আবুল কালাম মল্লিক বলেছেন, মের শুরুতেই তারা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা দেখছেন। যদিও সেটি কয়দিন স্থায়ী হয়, তা এখনি বলা কঠিন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোয় এখন বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এর কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, বাংলাদেশের ওই অঞ্চলের দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশের অবস্থান। এসব প্রদেশের তাপমাত্রা অনেক বেশি। এসব জায়গায় বছরের এই সময়ে তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মাঝে ওঠানামা করে। যেহেতু ওগুলো উত্তপ্ত অঞ্চল, তাই ওখানকার গরম বাতাস চুয়াডাঙ্গা, যশোর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং তা আমাদের তাপমাত্রাকে গরম করে দেয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close