মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন, পণ্ড করলো পুলিশ

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

মানিকগঞ্জের সিংগাইরের ঈদগাহ মাঠ ও কবরস্থান পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে মানববন্ধনের আয়োজন করে এলাকাবাসী। কিন্তু সিংগাইর থানা পুলিশ মানববন্ধন পণ্ড করে দেয়। তবে পুলিশ বলছেন ভিন্ন কথা।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে সিংগাইর উপজেলার ঘোনাপাড়া ঈদগাহ মাঠের সামনে ঘোনাপাড়া ঈদগাহ মাঠ ও কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান খান বাদল ও কোষাধ্যক্ষ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মানববন্ধন করে ঘোনাপাড়া এলাকাবাসী।

ভুক্তভোগী স্থানীয়রা বাসিন্দারা জানান, দেশ স্বাধীনের পর ঘোনাপাড়া ঈদগাহ মাঠ ও কবরস্থানের নামে তিন বিঘা জমি ওয়াকফ করেন দেন স্থানীয় পরাণ মল্লিক। এরপর ঈদগাহ মাঠ ও কবরস্থান পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে ঈদগাহ মাঠ ও কবরস্থানের যাবতীয় কাজ চলে আসছি। কিন্তু ২০১৬ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঘোনাপাড়া এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা মুশফিকুর রহমান খান হান্নান নির্বাচিত হওয়ার পর জোরপূর্বক নিজেকে (মুশফিকুর রহমান খান হান্নান) সভাপতি, মতিউর রহমান খান বাদল সাধারণ সম্পাদক ও মুজিবর রহমানকে কোষাধ্যক্ষ ঘোষণা করে প্রভাব খাটিয়ে ঘোনাপাড়া ঈদগাহ মাঠ ও কবরস্থান পরিচালনা করে আসছেন।

ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার ঈদগাহ মাঠ ও কবরস্থানের আয়-ব্যয়ের হিসেব চেয়েছেন এলাকাবাসী। কমিটির লোকজন আয়-ব্যয়ের হিসেব না দেওয়ায় গত ১২ এপ্রিল স্থানীয়রা সভা ডাকেন। কিন্তু সভায় স্থানীয়দের সাথে কমিটির লোকজনের কথা কাটাকাটি এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান খান বাদল বাদি হয়ে জমিদাতার নাতি গাজী সালাউদ্দিন ও গাজী আলাউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। এরপর কমিটির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে মানববন্ধনের আয়োজন করে এলাকাবাসী।

গাজী সালাউদ্দিন জানান, আমাদের আগের কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রতিবছর আয়-ব্যয়ের হিসেব দিতেন। কিন্তু মুশফিকুর রহমান খান হান্নান সভাপতি ও মতিউর রহমান খান বাদল সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে কোন ধরনের হিসেব দেয়নি। বরং হিসেব চাইতে গেলে নানা অযুহাত দিতেন। আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে এসব অপকর্ম করে আসছে। এলাকাবাসীদের হিসেবে কমিটির সদস্যরা প্রায় ৫ লাখ টাকা অর্থ আত্মসাৎ করেছে। তারা অর্থ আত্মসাৎ করলো আবার মিথ্যা মামলাও করলো। আমরা সঠিক হিসেব চাই এবং মিত্যা মামলার প্রতিবাদ করি।

গাজী আলাউদ্দিন জানান, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন শুরু করছি, এমন সময় পুলিশ এসে আমাদের ব্যানার ছিনিয়ে নেয়। তখন ব্যানার ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে পুলিশ আমাদের ধমক দেয় এবং হুমকি দিয়ে চলে যতে বলে। আমরা সেখান থেকে সরে গিয়ে সংসবাদ সম্মেলন করতে গেলেও পুলিশ বাধা দেয়। মুশফিকুর রহমান হান্নান আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় পুলিশ তার কথায় আমাদের সাথে অন্যায়ভাবে খারাপ আচারণ করেছে। থানা পুলিশের এমন ব্যবহারের জন্য তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।

অভিযোগ অস্বীকার করে ঘোনাপাড়া ঈদগাহ মাঠ ও কবরস্থানের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান খান বাদল জানান, আমরা কোন টাকা অর্থ আত্মসাৎ করেনি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। এলাকাবাসী যদি আমাদের কাছে আয়-ব্যয়ের হিসেব চায়, তাহলে আমরা সব সময় হিসেব দিতে রাজি আছি। তবে মামলার বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি তিনি।

সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম জানান, পুলিশ কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেনি। তবে সামনে যেহেতু উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, সে জন্য এলাকায় যাতে কোন ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটে। সে জন্য তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এলাকাবাসীর মানববন্ধন,আ. লীগ নেতা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close