মানিকগঞ্জের সিংগাইরে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক শাখার ম্যানেজার মো. ইমরান মিঞার বিরুদ্ধে ঋণ গ্রহীতার কাছে অসদাচরণ ও ঘুষ দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (১৫ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন আবুল হোসেন (৪৫) নামে একজন। এর আগেও ওই ম্যানেজারের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আরেক গ্রাহক।

অভিযোগকারী আবুল হোসেন উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামের বাসিন্দা। ছেলেকে বিদেশে পাঠাতে ঋণের জন্য তিনি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সিংগাইর শাখার শরণাপন্ন হন। তবে ঘুষ দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই ম্যানেজার।

এর আগে ২৩ জুন সিংগাইর বাজারের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে তিরস্কারের পর ব্যাংক থেকে বের করে দেন ওই ম্যানেজার। এ ঘটনায় মো. ইমরান মিঞার বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।

আবুল হোসেনের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ছেলে বিদেশে পাঠানোর জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সিংগাইর শাখার ম্যানেজার মো. ইমরান মিঞার শরণাপন্ন হন তিনি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করে ম্যানেজার তাকে ৩ লাখ টাকা ঋণ দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এ জন্য ‘খরচ’ বাবদ ১০ হাজার টাকা লাগবে বলে জানিয়ে দেন ম্যানেজার। এদিন চলে ফিরে গেলেও ৯ জুলাই সকালের দিকে অভিভাবক হিসেবে জনৈক আমিনুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে আবার ব্যাংকে আবুল হোসেন যান। এ সময় তার সঙ্গে লোক দেখে হঠাৎ চটে যান ম্যানেজার ইমরান। তাদের সঙ্গে অসদাচরণ ও ঋণ দেওয়া যাবে বলে ফিরেদেন তিনি। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে নিরাপত্তাকর্মী ডেকে করে দেওয়ার হুমকি দিলে ঋণ গ্রহীতা চলে যান।

• উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দুজনের লিখিত অভিযোগ
• ঘুষ দাবির অভিযোগ অস্বীকার ইমরান মিঞার
• ব্যাংক ম্যানেজারকে নোটিশ করার আশ্বাস ইউএনওর

ভুক্তভোগী আবুল হোসেন বলেন, ‘প্রবাসীদের কল্যাণে করা ব্যাংক ম্যানেজারের ঘুষ দাবির বিষয়টি ন্যাক্কারজনক। এ ছাড়া আমাদের সঙ্গে অসদাচরণ করে ঋণদান বঞ্চিত করায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত।’ তদন্ত সাপেক্ষে ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

এদিকে উপজেলার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান, জাহাঙ্গীর রমিজ উদ্দিন, লালনসহ কয়েকজন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক শাখার ম্যানেজার মো. ইমরান মিঞার বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেন। তারা বলেন, ম্যানেজার ইমরান মিয়া বিভিন্ন সময় গ্রাহক হয়রানি ও অসদাচরণ করেন। ঋণ পাওয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছলে অজ্ঞাত কারণে তা হঠাৎ বন্ধ করে দেন। গ্রাহকেরা ভোগান্তির শিকার হন।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজার ইমরান মিঞা বলেন, ‘আমাদের এখান থেকে ঋণ নিতে হলে খরচ বাবদ ৮ হাজার টাকা লাগে। যৌক্তিক ফি যেটা, সেটাই নেওয়া হয়। নির্দিষ্ট কিছু লোকের স্বার্থ হাসিলের জন্য আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারে।’

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ঢাকা উত্তর অঞ্চল প্রধান মো. মাহবুবুল হাসান বলেন, ‘গ্রাহক আমাদর ব্যাংকের প্রাণ। তাদের সঙ্গে অসদাচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। আর্থিক বিষয়টি খতিয়ে দেখে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযোগ পাওয়া বিষয়ে সিংগাইর ইউএনও পলাস কুমার বসু বলেন, ‘ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে সিংগাইর শাখার ম্যানেজার ইমরান মিয়া বিরুদ্ধে আগে একটা অভিযোগ পেয়েছি। দুটো একসঙ্গে করে ব্যাংক ম্যানেজারকে নোটিশ করা হবে।’

পিডিএস/আরডি