চবি প্রতিনিধি

  ২০ জুন, ২০২২

কাঁটাতারের বেড়ায় অকার্যকর চবির ঝুলন্ত সেতু

প্রবেশমুখে কাঁটাতারের বেড়া। ভেতরে জমে গেছে শ্যাওলা। কোথাও কোথাও ভেঙে গেছে পাটাতন। জংলি লতায় তৈরি হয়েছে ঝোপঝাড়। দেখে বোঝার উপায় নেই, এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুলন্ত সেতু। একসময় যেখানে ভিড় করতেন শিক্ষার্থীরা, জমত ছবি তোলার হিড়িক।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সৌন্দর্যবর্ধনের অংশ হিসেবে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের পাশের খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল ঝুলন্ত সেতুটি। সেতুটি নির্মাণের পর যেমন সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছিল, তেমনি সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা সহজে পৌঁছে যেতে পারছিলেন প্রশাসনিক ভবনে। রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর আদলে তৈরি করা এই সেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম আকর্ষণ।

কিন্তু বর্তমানে অযত্ন-অবহেলা ও সংস্কারহীন অবস্থার কারণে ভেঙেচুরে বেহাল অবস্থা চবির এই নান্দনিক ঝুলন্ত সেতুর। প্রায় তিন বছরেও এটি পুনঃসংস্কার/মেরামত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের চলাচল রোধ করতে ২০১৮ সালের শেষ দিকে কাঁটাতার দিয়ে বন্ধ করে রেখে দেওয়া হয়েছে সেতুটি।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ও শিক্ষার্থীদের দাবি, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, রক্ষণাবেক্ষণ ও সময়মতো মেরামত না করার কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে এটি।

ঝুলন্ত সেতুর বিষয়ে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তর বর্ষের সুমাইয়া নওমি বলেন, সেতুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম আকর্ষণ। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এর রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। এত দিন ধরে সংস্কারবিহীন অবস্থায় সেতুটি পড়ে আছে। এটি খুবই দুঃখজনক। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদেরও ক্যাম্পাসের সম্পদ ব্যবহারে আরো সচেতন হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, দ্রত সেতু মেরামতের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সেই সঙ্গে সারা বছরই যেন সেতুটি যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, তারও দাবি জানাই।

সেতুটির বিষয়ে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে। তারপর আর খুলে দেওয়া হয়নি। অনুষ্ঠান ও রমজানের কারণে মেরামতও করা সম্ভব হয়নি। এখন রমজান গেছে, আশা করি দ্রুত মেরামত করে ঝুলন্ত সেতু খুলে দেওয়া হবে।’

চবির প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ দায়িত্ব পালনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাঙামাটির ঝুন্ত সেতুর আদলে এই সেতু নির্মাণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক কৃতী শিক্ষার্থী এটি নির্মাণে পৃষ্ঠপোষকতা করেন। ২০০৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সেতুটি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close