ক্রীড়া ডেস্ক
হেরেও ফাইনালে লিভারপুল
এএস রোমা ৪ : ২ লিভারপুল
কিয়েভের ফাইনালে উঠার জন্য রোমাকে লিখতে হতো আরেকটি দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের গল্প। কিন্তু সেই স্বপ্নের খুব কাছে গিয়েও স্বপ্নভঙ্গ ঘটেছে রোমান গ্লাডিয়েটরদের। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে রোমাঞ্চকর জয়ের পরও ভাঙা মন নিয়ে বিদায় নিতে হয়েছে ইতালিয়ান ক্লাবটিকে। পরশু ঘরের মাঠ স্টাডিও অলিম্পিকোতে রোমা ৪-২ গোলে হারিয়েছে লিভারপুলকে। তবে দুই লেগ মিলে ৭-৬ গোলে এগিয়ে থেকে ১১ বছর পর ফাইনাল নিশ্চিত করেছে অলরেডরা।
অ্যানফিল্ডের প্রথম লেগে ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা জয় পেয়েছিল ৫-২ গোলে। তাতে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে যাওয়ার জন্য রোমাকে অলৌকিক কিছু ঘটাতে হতো। এর আগে কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনাকে হারিয়ে তেমনই এক অবিশ্বাস্য গল্প লিখেছিল ইউসেবিও ডি ফ্রান্সিসকোর শিষ্যরা। পরশু সেই আশায় দুইটি অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা নিয়ে আরেকবার মাঠে নেমেছিল দলটি। কিন্তু জিতলেও গত ৩৪ বছরের প্রতিশোধটা নিতে পারল না রোমানরা।
লিভারপুল চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ফাইনাল খেলেছিল ২০০৭ সালে। সেইবার স্টিভেন জেরার্ডের দল এসি মিলানের বিপক্ষে হেরেছিল ১-২ গোলে। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা এই নিয়ে অষ্টমবারের মতো ফাইনালে উঠেছে। ২৬ মে কিয়েভের ফাইনালে তারা মুখোমুখি হবে ১২ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে। ১৯৮১ সালেই রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে তৎকালীন ইউরোপিয়ান কাপ ঘরে তুলেছিল অলরেডরা।
গত বছর ১৫ আগস্টে জার্মানি থেকে এই মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ যাত্রা শুরু করেছিল লিভারপুল। প্লে-অফ রাউন্ডে তারা প্রথম মুখোমুখি হয়েছিল হফেনহেইমের বিপক্ষে। রিয়ালের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ইংলিশ ক্লাবটি গত ১২ ম্যাচের ১১টিতেই জয় পেয়েছে। ক্লপের শিষ্যরা মৌসুমের প্রথম হারটি পেয়েছে রোমার বিপক্ষে।
পরশু ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে দুই দল। ছয় মিনিটের মাথায় গোলের প্রথম সুযোগ পেয়েছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু রোমান মিডফিল্ডার আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জির দূরপাল্লার শটটি চলে যায় গোলপোস্টের বাইরে। এর মধ্যে উল্টো ৯ মিনিটের মাথায় তারা হজম করে বসে প্রথম গোল। রবার্তো ফিরমিনোর পাস থেকে লিভারপুলকে এগিয়ে দেওয়া গোলটি করেন সাদিও মানে।
পরশু প্রথমার্ধের চার গোলের তিনটিই এসেছে লিভারপুল খেলোয়াড়দের পা থেকে। জেমস মিলনারের আত্মঘাতী গোলে রোমা ম্যাচে সমতায় ফিরে ১৫ মিনিটের মাথায়। ২৫ মিনিটের সময় লিভারপুলকে হেডে আরেকবার এগিয়ে দেন গিয়র্গিনিও ওইজনালদাম।
বিরতি থেকে ফিরে রোমা পুনর্বার উজ্জীবিত হয়ে হামলা চালাতে থাকে লিভারপুল শিবিরে। ফলটাও দ্রুত পেয়ে যায় তারা। ৫২ মিনিটে দ্বিতীয়বার সমতাসূচক গোল করেন ইডিন জেকো। চলতি মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে জেকোর এটি অষ্টম গোল। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে স্বাগতিকরা একের পর এক আক্রমণে তটস্থ রাখে ক্লপের দলকে। ৮৬ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া শটে রোমাকে এগিয়ে দেন বেলজিয়াম মিডফিল্ডার রাদজা নাইনগোলান।
এরপরও ফাইনালে যাওয়ার জন্য যোগ করা সময়ে রোমাকে দিতে হতো আরো দুই গোল। শেষ পর্যন্ত তারা গোল করতে পেরেছে একটি। শেষ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন নাইনগোলান।
চ্যাম্পিয়নস লিগে ক্লপের এটি দ্বিতীয় ফাইনাল। এর আগে ২০১৩ সালে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে ফাইনালের তুলেছিলেন তিনি। দল ফাইনালে উঠার পর সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা কিছুটা ভাগ্যের সহায়তা পেয়েছি। আমাদের তা দরকার ছিল। তবে রোমা আরো কিছুটা অতিরিক্ত সময়ের দাবিদার ছিল।’
* দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৬ গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ১১ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে লিভারপুল।
"