স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, মশা নিধন কারোর একার পক্ষে সম্ভব নয়। জনপ্রতিনিধি ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে হবে। তিনি গতকাল বুধবার ঢাকার উত্তরায় ১২ নম্বর সেক্টরের খালপাড়ে সিটি করপোরেশনের ‘মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম’ পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন। এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিকার থেকে প্রতিরোধ উত্তম উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, মশা নিধনে সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হচ্ছে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা যাতে মশার উৎপাদন না হয়। সেজন্য জনপ্রতিনিধি ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ধরনের মশা যেমন কিউলেক্স মশা, অ্যানোফিলিস মশা ও এডিস মশার প্রজননস্থল ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় আমাদের সেদিকে লক্ষ্য রেখে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালাতে হবে। অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া রোগ, কিউলেক্স মশা ফাইলেরিয়া এবং এডিস মশা ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের জন্য দায়ী উল্লেখ করে তিনি বলেন, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে মশার প্রজননস্থল ধ্বংসই হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম পন্থা।

তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন খালে বাসাবাড়ির সুয়ারেজ বর্জ্যরে কারণে পানি দূষিত হচ্ছে। কচুরিপানার ফলে প্রচুর মশা উৎপাদন হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ঢাকাকে পাঁচটি ক্যাচমেন্ট এরিয়ায় ভাগ করে বর্জ্য নিষ্পত্তি করার জন্য সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট স্থাপন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে দাসেরকান্দিতে একটি প্লান্ট উদ্বোধন করেছেন এবং উত্তরাতেও একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে লেক পরিষ্কার করার যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাকে সাধুবাদ জানিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার জন্য এই ধরনের খাল বা লেক যেখানে কচুরিপানা এবং দূষিত পানির কারণে মশার উৎপাদন বেশি হয় তা সবাই মিলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের এই লেক ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পরিষ্কার করা হবে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে এ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে এবং সিটি করপোরেশনগুলোর সক্ষমতা পর্যালোচনা করে যেখানে যতটুকু দরকার মন্ত্রণালয় থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। মন্ত্রী আবারও এডিস মশা নির্মূলে জনপ্রতিনিধি এবং জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নিজ বসতবাড়ি এবং নিজ এলাকা পরিষ্কার করার দায়িত্ব আমাদের সবার। তা করতে পারলে প্রাণঘাতী ডেঙ্গু জ্বর থেকে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারব।

"