নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালকের দায়িত্ব নিলেন সায়মা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিলেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর সায়মা ওয়াজেদ পুতুলই প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করলেন। তিনি প্রথম বাঙালি ও দ্বিতীয় নারী আঞ্চলিকপ্রধান। আগামী ৫ বছরের জন্য তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেন। সায়মা ওয়াজেদ সংস্থাটির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের বিদায়ি আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিংয়ের স্থলাভিষিক্ত হলেন।

দায়িত্ব গ্রহণের পর এক প্রতিক্রিয়ায় সায়মা ওয়াজেদ বলেন, ‘আমাকে এই পদে মনোনয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানাই।’

সায়মা ওয়াজেদ মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও অটিজমের ভূমিকার জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালকের মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টাও। গত ২৩ জানুয়ারি জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদর দপ্তরে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নিয়োগ চূড়ান্ত হয়। তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন সংস্থাটির মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক পদে জয়ী হওয়ার প্রক্রিয়া সহজসাধ্য ছিল না। সায়মা ওয়াজেদ নিজের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

২০২৩ সালে ২১ এপ্রিল আঞ্চলিক পরিচালক পদের জন্য মনোনয়ন আহ্বান করা হয়। ৪ আগস্ট ছিল জমা দেওয়ার শেষ দিন। ১৮ আগস্টের মধ্যে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে প্রার্থীদের তালিকা পাঠানো হয়। তারপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সেক্রেটারিয়েট দ্বারা পরিচালিত একটি ওয়েব ফোরাম খোলা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সদস্য রাষ্ট্র ও প্রার্থীদের জন্য ফোরামটি উন্মুক্ত রাখা হয়। এখানে সব প্রার্থী তার লক্ষ্য ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে ২০ মিনিটের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। কোনো বিষয়ে বক্তব্যে অস্পষ্টতা মনে হলে সদস্যরা প্রশ্ন করেন এবং প্রার্থী উত্তর দেন। এরপর গত ১ নভেম্বর নয়াদিল্লিতে ১১টি সদস্য দেশের ভোটে ৮-২ ভোটের ব্যবধানে সায়মা ওয়াজেদ নির্বাচিত হন।

সায়মা ওয়াজেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ব্যারি ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংগঠনিক নেতৃত্বে ডক্টরেট প্রার্থী।

২০১৯ সাল থেকে সায়মা ওয়াজেদ মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজমণ্ডসম্পর্কিত ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালকের অন্যতম উপদেষ্টা ছিলেন এবং ২০১৪ সাল থেকে মানসিক স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত ডব্লিউএইচও’র বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য ছিলেন। সায়মা ওয়াজেদ ২০১৭ সালে ডব্লিউএইচও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অটিজমবিষয়ক শুভেচ্ছা দূত মনোনীত হন। তিনি একই বছর প্রকাশিত অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার-সম্পর্কিত ডব্লিউএইচও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কৌশলপত্রের সহ-লেখক। তিনি গ্লোবাল হেলথ প্রোগ্রাম চ্যাথাম হাউস, ইউকে’র একজন সহযোগী ফেলো, অটিজম ও এনডিডি, ঢাকা বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন এবং শুচনা ফাউন্ডেশন, ঢাকা, বাংলাদেশের চেয়ারপারসন।

সায়মা ওয়াজেদ অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার নিয়ে কাজের জন্য ২০১৪ সালে ডব্লিউএইচও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয় প্রদত্ত ‘এক্সিলেন্স ইন পাবলিক হেলথ’ পুরস্কার এবং ২০১৬ সালে ডা. ইব্রাহিম মেমোরিয়াল কাউন্সিল, বাংলাদেশ প্রদত্ত ইব্রাহিম মেমোরিয়াল গোল্ড মেডেল পান। ২০১৭ সালে সায়মা ওয়াজেদ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অটিজম নিয়ে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ মার্কিন সংস্থা শেমা কোলাইনু থেকে আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার পান। ২০১৯ সালে তাকে গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রামস, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি, ইউএসএ ইনোভেটিভ উইমেন লিডারস ইন গ্লোবাল মেন্টাল হেলথ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close