reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

লবণ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে হবে

দেশে শীতকাল হচ্ছে লবণ উৎপাদনের ভরা মৌসুম। এ মৌসুম শুরু হয়েছে গত নভেম্বর থেকে। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ায় এবার ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। ঘন কুয়াশা ও পর্যাপ্ত রোদের অভাবে উৎপাদন কমেছে স্বাভাবিকভাবেই। প্রতি মাসে ২ লাখ টনের বেশি চাহিদার বিপরীতে গত তিন মাসে উৎপাদন হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৮ হাজার ৫৫২ টন। এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে লবণের দাম কমে গেছে।

লবণশিল্পের উন্নয়ন কার্যালয় সূত্র বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ২২ লাখ ৩৩ হাজার টন। আর তার আগের অর্থবছরে ১৮ লাখ ১৫ হাজার ১৫৬ টন। আর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লবণের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ লাখ ২৮ হাজার টন। গত মৌসুমে কক্সবাজারের ৯ উপজেলা ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ৬৬ হাজার ৪২৪ একর জমিতে লবণ চাষ করেছিলেন ৩৯ হাজার ৪৬৭ জন চাষি। উৎপাদনের মৌসুম ধরা হয় নভেম্বর থেকে মে পর্যন্ত সময়কালকে। তাই আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাহিদার বেশি লবণ উৎপাদন সম্ভব হবে মনে করছে উন্নয়ন কার্যালয়। তবে লবণের দরপতন ঠেকাতে উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে বিক্রির বদলে সংরক্ষণ করে বিক্রির পরামর্শ কর্মকর্তাদের। ঘাটতির শঙ্কায় সম্প্রতি সরকার এক লাখ টন লবণ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। এতে ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন চাষিরা। গত মৌসুমের এ সময়ে মাঠপর্যায় প্রতিমণ লবণ ৬০০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে সাড়ে ৪৫০ টাকায়। দালাল-ফড়িয়ারা আর একটু বেশি দামে এ লবণ বিক্রি করছে মিলমালিকদের কাছে। ২০২৪ সালে দেশে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ লাখ ২৮ হাজার টন। এর মধ্যে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত দেশে লবণ উৎপাদন হয়েছে আড়াই লাখ টন।

দেশে ৬০ হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে কক্সবাজারের সাতটি ও চট্টগ্রামের একটি উপজেলায় উৎপাদিত লবণ দেশের চাহিদা মেটায়। কক্সবাজারে আটটি উপজেলার মধ্যে উখিয়া ছাড়া সাতটি উপজেলায় লবণ চাষ হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সীমিত পরিসরে লবণ চাষ হয়। কক্সবাজার ও চট্টগ্রামসহ ৬০ হাজার একর জমিতে লবণ চাষ হলেও শুধু মহেশখালীতে চাষ হয় ২০ হাজার একর জমিতে, যা জমির ৮৮ শতাংশ। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে চাষ হয় সাড়ে সাত হাজার একর জমিতে। কিন্তু মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ একাধিক ভারী শিল্প-কারখানা স্থাপনের কাজ চলমান থাকায় লবণ চাষের জমির পরিমাণ কমে আসছে। কয়েক বছরের মধ্যে এ উপজেলায় লবণ চাষের জমি কমেছে তিন হাজার একর।

চাষিদের অভিযোগ, প্রতি বছর লবণ মৌসুমে চাহিদার বেশি উৎপাদন হলেও বিদেশ থেকে আমদানির পাঁয়তারা করে একটি পক্ষ। তাদের কথা যদি সত্য হয় তাহলে আমদানির প্রয়োজনীয়তা আছে কি না সেটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভেবে দেখা উচিত। তা ছাড়া উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণগুলো খুঁজে বের করতে হবে। আমরা মনে করি, প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেলে চাহিদামতো লবণ উৎপাদন করতে সক্ষম হবে চাষিরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close