reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রাখার উদ্যোগ নিন

পেঁয়াজের ঝাঁজে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই অতিপ্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যটি দিনে দিনে ক্রয়সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে। বাজারে এর দাম নিয়ন্ত্রণে করণীয় ঠিক করতে গত মঙ্গলবার সরকারি বিভিন্ন দফতর, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বৈঠকের পর ঘোষণা দেওয়া হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। সরকারের পক্ষ থেকে আসা এমন ঘোষণার এক সপ্তাহ পরও বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেনি। খোলাবাজারে কম দামে যে সামান্য পরিসরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে; সেটি বাজারের ওপর কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। ফলে তার ধকল সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্নœ আয়ের সাধারণ মানুষকে।

গতকাল প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত ‘কমছে না পেঁয়াজের দাম, এখনো ৮০ টাকা কেজি’ শীর্ষক বিশেষ প্রতিবেদনে বিভিন্ন পর্যায়ের ক্রেতা-বিক্রেতাদের মতামত তুলে ধরা হয়। বলা হয়, বাজার ও মানভেদে দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা দরে। বিভিন্ন বাজারে যে পেঁয়াজের কেজি ৫৫ টাকা ছিল, এক সপ্তাহের ব্যবধানে তা এক লাফে ৭৫-৮০ টাকা হয়ে যায়। পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৬০-৬৫ এবং আমদানি করা ভারতীয় ৫৬-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত মঙ্গলবারের ধারাবাহিকতায় রোববারও স্বল্প পরিসরে রাজধানীর খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি অব্যাহত রাখে টিসিবি। রাজধানীর পাঁচটি স্পটে চলছে এ কার্যক্রম। এখানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ২ কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভারত সরকার সে দেশ থেকে পেঁয়াজ রফতানির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন দর তিন গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। পেঁয়াজের সর্বনিম্ন রফতানি মূল্য টনপ্রতি ৮৫২ ডলার নির্ধারণ করে দেয় ভারতের কাঁচাপণ্য নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ন্যাপিড। দেশটির বাজারে দাম বাড়ায় বাংলাদেশে সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ী চক্র ভারত সরকারের সিদ্ধান্তকে পুঁজি করে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন, যা অগ্রহণযোগ্য। অতীতেও দেখা গেছে, রমজান অথবা অন্য কোনো অজুহাত সামনে এনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও যে সে রকমটাই ঘটেছে, তা বলাই বাহুল্য। পরিতাপের বিষয় হলো, সাধারণত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কথাবার্তা উঠলে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা পরস্পরকে দোষারোপ করে থাকেন। এভাবে একপক্ষ অন্যপক্ষকে দোষারোপ করলেও এটি যে মূলত ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

অতীতে এমন ঘটনা আমরা বহুবার দেখেছি, সময় ও সুযোগের সদ্ব্যবহার করে নিত্যপণ্যসহ অন্যান্য পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। যোগসাজশের মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থার স্বাভাবিক গতি যদি বাধাগ্রস্ত করা হয়, তাহলে একদিকে যেমন ভোক্তাস্বার্থের হানি ঘটে; অন্যদিকে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ে, যা কারোরই কাম্য নয়। আমরা আশা করি, পেঁয়াজের দামসহ সব ধরনের নিত্যপণ্য ও সেবার দাম স্থিতিশীল রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাই আন্তরিকতার পরিচয় দেবে আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close