reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৩ মার্চ, ২০১৯

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি কতটা যৌক্তিক

গ্যাসের দাম বাড়ছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এক গণশুনানির আয়োজন করে। শুনানিতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর আগে চুরি ও অনিয়ম বন্ধের দাবি উত্থাপন করেছেন ভোক্তা প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞরা। শুনানিতে বিইআরসির পক্ষ থেকে বলা হয়, বর্তমানে ৫০ কোটি ঘণফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। ফলে প্রতিদিন ১০০ কোটি ঘণফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের পেছনে বছরে ২৪ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা ঘাটতি তৈরি হবে। এজন্য গ্যাসের সরবরাহ ব্যয় ৮ টাকা ৬৩ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২ টাকা ১৯ পয়সা নির্ধারণ করা জরুরি।

ভোক্তা পক্ষের মধ্য থেকে বলা হয়, বিভিন্ন খাতে চুরি, অনিয়ম হয়। কিন্তু জ্বালানি খাতের চুরির মাত্রা অনেক বেশি। ভোক্তাদের টাকায় আমরা গ্যাস উন্নয়ন তহবিল গড়েছি। সেই তহবিলের টাকায় বাপেক্সকে গ্যাস কূপ খননের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তারা সরল বিশ্বাসে দেওয়া সেই অর্থের অপব্যবহার করেছেন। যার পৃথক শুনানির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পেট্রোবাংলা গ্যাসের দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা কোম্পানি আইনের লঙ্ঘন। বিইআরসির আইন অনুযায়ী জ্বালানি মূল্যের কোনো রকম পরিবর্তন না ঘটলে এক বছরের মধ্যে একাধিকবার গ্যাসের দাম বাড়ানো যাবে না। পেট্রোবাংলা সেই কাজটি করার চেষ্টা করছে। এ কাজ সরাসরি না করে দাম বাড়ানোর আগে বিতরণ কোম্পানির সংশ্লিষ্টতায় বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার অবৈধ সংযোগে গ্যাস ব্যবহার করা বন্ধ করার পর বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে। অন্যথায় অনৈতিকতার প্রশ্ন থেকে যাবে।

আমরা মনে করি, গ্যাসের দাম বাড়বে, কি বাড়বে নাÑ এ প্রশ্নের সমাধানে পৌঁছাতে হলে সর্বাগ্রে দেখা উচিত দেশের কত শতাংশ মানুষ সরাসরি গ্যাসের আওতায় আছে। দ্বিতীয়ত. আমাদের ক্রয়ক্ষমতার আওতার বহির্ভূত কি না। উত্থাপিত প্রথম প্রশ্নের জবাবে বলতে হয়, দেশের বেশির ভাগ মানুষ এখনো সরাসরি গ্যাস সুবিধাপ্রাপ্তির আওতার বাইরে। তাদের জ্বালানি খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করা উচিত। আমরা মনে করি, যারা এখনো সরাসরি গ্যাস সুবিধা আওতার বাইরে আছে, তাদের জ্বালানি খরচ সুবিধা প্রাপ্তদের চেয়ে অনেক বেশি। সুতরাং এখানে একটি সমন্বয় হওয়া দরকার। একই দেশের একটি পরিবারের জ্বালানি খরচ সুবিধাভোগী পরিবারের চেয়ে অনেক বেশি হবেÑ এটা সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। অনেকে হয়তো বলবেন, শিল্প খাতে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এ ক্ষেত্রে বলা যায়, ব্যাপক প্রভাব পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। লাভের অঙ্ক হয়তো কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু সুবিধাবঞ্চিত যারা... তারা! তাদের কথা মাথায় রেখে বলতে হয়, আমরা যেন প্রতিনিয়ত তেলে মাথায় তেল ঢালার ব্যবস্থাকে লালন না করি। সমতায় আনার জন্য যা কিছু ইতিবাচক, সে পথেই অগ্রসর হওয়ার মধ্যেই আছে সার্বিক কল্যাণ। এ দেশের মানুষ সার্বিক কল্যাণের পক্ষে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close