প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

হাবিপ্রবি ও বেরোবি

সৌন্দর্য বিলাচ্ছে আগুনঝরা কৃষ্ণচূড়া 

ক্যাম্পাসে কৃষ্ণচূড়া ফুল মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে- প্রতিদিনের সংবাদ

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন ‘গন্ধে উদাস হওয়ার মত উড়ে/তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরি’। এই সময়টায় দেশের যেকোনো শহরে ও গ্রামে গেলে কৃষ্ণচূড়া চোখে পড়বে। কৃষ্ণচূড়ার প্রধান বৈশিষ্ট্য এর অফুরন্ত প্রস্ফুটনের ক্ষমতা। এ কারণেই বোধকরি নিসর্গসখা দ্বিজেন শর্মা এর নাম দিয়েছিলেন ‘পুষ্পপাগল’। কোনো শহর বা স্থানকে পুষ্পশোভিত করে তুলতে এই বৃক্ষের ভূমিকা অনন্য। দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাসে সৌন্দর্য বিলাচ্ছে আগুনঝরা কৃষ্ণচূড়া। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

হাবিপ্রবি : ‘কৃষ্ণচূড়া লাল হয়েছে ফুলে ফুলে, তুমি আসবে বলে’ এখন সময় কৃষ্ণচূড়ার রংবাহারি রঙে মাতোয়ারা হওয়ার। সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষ্ণচূড়ার গাছে থোকায় থোকায় ফুল ফুটেছে। সবুজ পাতার মাঝে লাল ফুলের আধিক্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. কুদরত-ই-হুদা একাডেমিক ভবন, ভিআইপি গেস্ট হাউজ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল মাঠের কৃষ্ণচূড়া লাল টকটকে ফুল শিখার্থীদের আকৃষ্ট করে তুলেছে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন মহাবলিপুরের রাস্তার পাশেও দেখা মিলে লাল ফুলের সমারোহ। কৃষ্ণচূড়া ফুলের মুগ্ধতা জানিয়ে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী তপন ঢালী বলেন, গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে যখন কৃষ্ণচূড়ার ফুল দেখি, তখন মুগ্ধ হয়ে থমকে দাঁড়াই। এই সময়ে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে স্নিগ্ধ ছায়ায় বসে থাকি এবং ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি। বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে কৃষ্ণচূড়া যে রং ছড়িয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ঈদের ছুটি কাটিয়ে এসে কৃষ্ণচূড়ায় পরিপূর্ণ লাল টুকটুকে ক্যাম্পাস দেখে অনেক ভালো লাগছে। পড়াশোনার ব্যস্ততায় ও শত ক্লান্তিতেও কৃষ্ণচূড়ার রঙিন সৌন্দর্যে মুহূর্তেই মন ভালো হয়ে যায়। রক্তিম লালে প্রকৃতিকে কৃষ্ণচূড়া যেন অনেক অপরূপ দেখায়।

কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া, সাধারণত এ ফুল এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ফোটে, এর আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকায়। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, কৃষ্ণচূড়া তিন রঙের হয়। লাল, হলুদ ও সাদা। কম হলেও হলদে রঙের কৃষ্ণচূড়া চোখে পড়ে। তবে সাদা রঙের কৃষ্ণচূড়ার দেখা মেলে না বললেই চলে। কৃষ্ণচূড়া শোভা বর্ধনকারী একটি বৃক্ষ। গাছটি পরিবেশবান্ধব, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বেরোবি : গ্রীষ্মের তপ্ততায় যখন হাঁপিয়ে উঠেছে প্রকৃতি। সেই সময়েও চারদিকে সবুজের বুক চিরে রক্তিম লাল আভা জানান দিচ্ছে তার নয়নাভিরাম রূপের। লাল কৃষ্ণচূড়ার রাঙা ফুলের মায়ায় জড়িয়েছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাস। শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে পার্কের মোড়ে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস জুড়েই আগুনরাঙা সেই কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য আলো ছড়াচ্ছে। গাছে গাছে নয়নাভিরাম রাঙা ফুলের মায়া। দূর থেকে দেখলে মনে হবেÑ গাছগুলোয় আগুন লেগেছে, কাছে গেলে চোখ আটকে থাকে রক্তিম আভার ফুলের সমাহারে।

গাছের নিচে পড়ে থাকে অজস্র ঝড়াপাপড়ি, যেন মনে হয় রক্তবর্ণ লালগালিচা। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সড়ক, চত্বর ও রাস্তার পাশে অসংখ্য গাছ এ ফুলের রক্তিম আভায় ছেয়ে গেছে পুরো ক্যাম্পাস। কৃষ্ণচূড়ার অনিন্দ্য সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাথী আক্তার বলেন, ক্যাম্পাসের প্রাণ শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে যেন অপরূপ সাজে সেজেছে। প্রাণের কৃষ্ণচূড়া রোড, দুই পাশে সারি সারি করে লাগানো এই মাঝারি আকারের কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো মনমাতানো রং আর সৌরভ দিয়ে যাচ্ছে। প্রাণের এই জারুল, কৃষ্ণচূড়া, শ্বেতশুভ্র কাশফুল আর সোনালু বহুগুণে রূপবতী করে তোলে প্রাণের এই ৭৫ একরের ক্যাম্পাসকে।

ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী ওয়াহিদুর জমান বলেন, কৃষ্ণচূড়া যেন ভাষার রং হয়ে বেরোবির বুকে আবার আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। রোমাঞ্চকর প্রেমালাপ যেন উপযুক্ত হয়ে উঠেছে এই কৃষ্ণচূড়ার লালিমায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৪০০ প্রজাতির গাছ রয়েছে। গ্রীষ্মের শুরুতে ফুল ফোটা শুরু করে এবং এই ফুলগুলো গ্রীষ্ম মৌসুমকে উজ্জ্বল করে রাখে।

পিডিএস/ইউএস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কৃষ্ণচূড়া,হাবিপ্রবি ও বেরোবি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close