গতি পেল নির্বাচন
নির্বাচনী মাঠ এতকাল যেন শীতের চাদরে ছিল ঢাকা। শীত চলে যাচ্ছে। আর সেই সঙ্গে আড়মোড়া ভেঙে চাদর ছেড়ে বেরিয়ে আসছে নির্বাচন। সূর্যের তাপ এখনো মিষ্টি। প্রখর হতে সময় লাগবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র এক বছর বাকি। আগামী ডিসেম্বরেই নির্বাচন করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এই নিয়ে শুরু হয়েছে নানা হিসাবনিকাশ। বাহ্যিকভাবে বাকবিতন্ডার যেন শেষ নেই। তবে ভেতরে ভেতরে নির্বাচনে ব্যস্ত সবাই। প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দল; বিশেষ করে দুই প্রধান দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি এগোচ্ছে নীরবে।
পরিবেশ এখনো পরিষ্কার নয়। এর মধ্যেও নির্বাচন যেন নিজস্ব গতিতেই এগিয়ে চলেছে। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী গেলেন সিলেটে। এই সফরের মধ্য দিয়েই যেন নির্বাচনী পালে বাতাসের গন্ধ পাওয়া গেল। ভোটের বছরের শুরুতেই আওয়ামী লীগ শুরু করেছে প্রাক নির্বাচনী প্রচার। আলোচনায় এলো নির্বাচনী রাজনীতি। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার ভোট প্রার্থনার মধ্য দিয়ে নির্বাচন প্রশ্নে ফিরে এলো নতুন সম্ভাবনা। তিনি জানিয়ে দিলেন, এখান থেকেই শুরু হলো নির্বাচনী প্রচারণা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা শেখ হাসিনার প্রাক নির্বাচনী সফরকে ইতিবাচক হিসেবে মন্তব্য করেছেন। তারা বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে সরকারের সদিচ্ছার বহির্প্রকাশ ঘটল।
নির্বাচনের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন দলকে এবার অনেক বেশি সতর্ক ও মনোযোগী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, নির্বাচনের আগের বছর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন, এটা নতুন কিছু নয়। আগেও হয়েছে। নির্বাচনে দলের প্রতি সমর্থন চাইতেও পারেন তিনি। এটি ভারতসহ অনেক দেশেও প্রচলিত। এটি একটি নির্বাচনী রেওয়াজও বটে। তবে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও যাতে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর এ সুযোগ গ্রহণে আইনগত কোনো বাধা নেই। তবে তফসিল ঘোষণার পর সরকারি সুযোগসুবিধা নিয়ে কেউই কোনো ধরনের প্রচারণা চালাতে পারবেন না।
এদিকে বিএনপি নির্বাচন নিয়ে পরিষ্কারভাবে কোনো কিছু না বললেও বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিএনপিও নির্বাচনের বাইরে থাকবে না। ভেতরে ভেতরে তারাও নির্বাচনী প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায় দেখে তারাও তাদের নির্বাচনী কৌশলসহ মাঠে নামবে। অবস্থা যেখানে গিয়ে দাঁড়াক না কেন, এবারের নির্বাচন যে কারো পক্ষে খুব একটা সহজ হবে নাÑতা নিশ্চিত করে বলা যায়। প্রধানমন্ত্রী তার নেতাকর্মীদের সে ব্যাপারে ইতোমধ্যেই সতর্ক করেছেন। আমরাও চাই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক এবং এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা।
"