reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪

বিজ্ঞান নিয়ে জানতে হলে...

বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত একটি নাম BigganPiC। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই চ্যানেলের একটিও ভিডিও দেখেননি দেশে এমন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ধরেন আপনি শুক্রবার দুপুর ২টায় বাংলাদেশ থেকে কানাডার টরন্টোর উদ্দেশে রওনা দিলেন, টরন্টো গিয়ে দেখলেন তখনো ঘড়িতে শুক্রবার ঠিক দুপুর ২টা বাজে। এখন প্রশ্ন হলো আপনি যে ১২ ঘণ্টা ভ্রমণ করলেন সেই ভ্রমণের সময়টা গেল কোথায়? সময়টা কি হারিয়ে গেল? উত্তর হলো না। বরং আপনি টাইম জোনের ফাঁদে আটকে গেছেন। বাস্তবিক অর্থে বিজ্ঞানের বিষয়গুলো মানুষের জন্য সহজ ভাষায় ও আনন্দদায়ক করে লেখা মোটেও সহজ কাজ নয়। কিন্তু এসব মজার মজার হাজারো প্রশ্নের বৈজ্ঞানিক উত্তর দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কনটেন্ট তৈরি করে থাকেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. জুম্মান ভূঁইয়া। বর্তমানে ইউটিউবে তার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৬ লাখ ৮ হাজার। কীভাবে বিজ্ঞান রিলেটেড কনটেন্ট তৈরি শুরু করলেন, এ বিষয়ে কথা বলেছেন BigganPiC চ্যানেলের কনটেন্ট নির্মাতা মো. জুম্মান ভূঁইয়া এবং তার কথা লিপিবদ্ধ করেছেন প্রতিদিনের সংবাদের জবি প্রতিনিধি জাহিদুল হাসান

কেমন আছেন আপনি?

এই তো ভালো আছি।

আপনার অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম সম্পর্কে একটু বলুন?

আমার হাতেখড়ি শিক্ষা বানিয়াছল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নরসিংদী। মাধ্যমিক পড়াশোনা ব্রাহ্মন্দী কেকেএম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, নরসিংদী। উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনা নরসিংদী মডেল কলেজ এবং স্নাতক আর স্নাতকোত্তর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সম্পন্ন করেছি।

কীভাবে আপনি ইউটিউবে এলেন? এবং কেন BigganPiC নামটা বেছে নিলেন?

ইউটিউবে আসা করোনাকালে অর্থাৎ ২০২০ সালে। ওই সময়টাই অন্য সবার মতো আমিও ঘরবন্দি ছিলাম। সেই সঙ্গে বলতে পারেন বেকার অবস্থায় ছিলাম। তখন চিন্তা এলো এই বেকার সময়টা কীভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে। খুব ভেবেচিন্তে দেখলাম ঘরে বসে অনলাইনভিত্তিক কাজই আমার জন্য সবচেয়ে উপযোগী হবে। বিশেষ করে বিজ্ঞানভিত্তিক কনটেন্ট ক্রিয়েট করা। কারণ, প্রথমত আমার পড়াশোনা বিজ্ঞান নিয়ে। দ্বিতীয়ত, যেকোনো জটিল বিষয়কে সাধারণ ভাষায় বোঝানোর এক ধরনের দক্ষতা আমার মধ্যে ছিল, যা আমি টিউশনি করানোর সময় বুঝতে পেরেছিলাম। তৃতীয়ত, বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানভিত্তিক মানসম্মত কনটেন্ট খুব একটা ছিল না। এসব কিছু বিবেচনা করেই বিজ্ঞানভিত্তিক কনটেন্ট ক্রিয়েট করার সিদ্ধান্ত নিই।

আর চ্যানেলের নাম বাছাই করার ক্ষেত্রে দুটি চিন্তা মাথায় ছিল প্রথমত, নামটা যেন আকারে ছোট হয়, যেন সহজে টাইপ করা যায়, দ্বিতীয়ত, নামটার মধ্যে যেন বিজ্ঞানের এক ধরনের স্পর্শ থাকে। তাই ভেবে চিন্তে ফাইনালি BigganPiC (BigganC) নামটাই আমার যথার্থ মনে হয়েছে। এখানে বিজ্ঞান শব্দের পরবর্তী দুটি সিম্বল মূলত হচ্ছে দুটি কনস্ট্যান্ট। যাদের একসঙ্গে উচ্চারণ করলে পাইছি শব্দটা তৈরি হয়, যার ব্যবহার বাংলা ভাষায় রয়েছে। মূলত নামটা দিয়ে বোঝাতে চেয়েছি বিজ্ঞান পাইছি অর্থাৎ বিজ্ঞানকে খুঁজে পেয়েছি।

আপনার ভিডিও কনটেন্টগুলো অন্যদের থেকে আলাদা, বেশির ভাগ কনটেন্ট ক্রিয়েটরের কনটেন্ট বিনোদনমূলক হলেও আপনারটা শিক্ষামূলক, এ রকম শিক্ষামূলক কনটেন্টের আইডিয়া কীভাবে এলো?

আসলে বিজ্ঞান নিয়ে ভাবতে আমার খুব ভালো লাগত, সেই সঙ্গে পড়াশোনা ছিল বিজ্ঞান (পদার্থবিজ্ঞান) নিয়ে। এখন যে বিষয়টার পেছনে আমি এতটা সময় ব্যয় করলাম, আমার কাজ যদি সেই বিষয় রিলেটেড না হয় সেটা আমার আমার জন্য স্বস্তিদায়ক হতো না। তা ছাড়া বিনোদন ধরনের কনটেন্টের ক্ষেত্রে অভিনয়ের বিষয় রয়েছে, যা আমার দ্বারা সম্ভবই না। এসব কিছু বিবেচনা করে বিজ্ঞানভিত্তিক কন্টিনিউ করার সিদ্ধান্ত নিই। বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করার শুরুতেই কিন্তু আমি ধরে নিয়েছিলাম যে এ ব্যাপারে মানুষের খুব একটা আগ্রহ দেখতে পাব না। তবে আমি যা ভেবেছিলাম তার চেয়ে অনেক বেশি রেসপন্স মানুষের কাছে থেকে পেয়েছি।

আপনি যেহেতু পদার্থবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেছেন সেহেতু ভবিষ্যতে ইউটিউবের পাশাপাশি অন্যকিছু করার প্ল্যান আছে কিনা?

খুব যে গোছানো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে, বিষয়টি এমন নয়। তবে কিছু পরিকল্পনা মনের মধ্যে রয়েছে, যদি সেগুলো দাঁড় করাতে পারি, তাহলে এমনিতেই সবাই জানতে পারবে।

ইউটিউবার বা কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য অধ্যবসায় কতটা জরুরি?

বিশেষ করে অপ্রচলিত বিষয় নিয়ে যদি আপনি কাজ করেন, সে ক্ষেত্রে কিছুটা ধৈর্যশীল হতে হবে। যেমন আমি প্রথম আট মাস তেমন কোনো রেসপন্স পাইনি। তবে এখানে কথা রয়েছে, আপনি যে বিষয় নিয়েই কাজ করেন না কেন, মানসম্মত কাজ করতে হবে এটি হচ্ছে প্রধান শর্ত। তারপর হচ্ছে ধৈর্য।

আপনার ফ্যান-ফলোয়ারদের উদ্দেশে কোনো বার্তা আছে কিনা?

যারা আমার ভিডিও দেখেন, আমাকে ভালোবাসেন অবশ্যই আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। যখন রাস্তায় কেউ দাঁড় করিয়ে বলেন, ‘ভাই আপনার ভিডিও খুবই ভালো লাগে’ সেটা আমার জন্য খুবই আনন্দের। বিশেষ করে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা যখন বলেন, ‘আপনার ভিডিও ছাত্রদের পড়াশোনা বোঝানোর ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক হিসেবে কাজ করে’ সেটা আমার পরম পাওয়া। আমার সব শুভাকাঙ্ক্ষীর জন্য শুভকামনা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close