reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

শিক্ষার্থীদের ভাবনায় বাংলাদেশে নারীর অবস্থান ও উত্তরণ

নিষ্পেষণ ও শৃঙ্খলতার বেড়ি পরিহিত জাতির অপর নাম যেন নারী। পুরুষ শাসিত সমাজব্যবস্থায় নিজেদের অধিকার অর্জনে নারীকে বহুবার ভাঙতে হয়েছে সমাজের প্রচলিত ধারা। শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে বর্তমান বাংলাদেশে নারীর অবস্থান ও উত্তরণ নিয়ে কী ভাবছেন শিক্ষার্থীরা তা তুলে ধরেছি আমি হুমায়রা রহমান সেতু

নারী অগ্রযাত্রায় বাধা পুরুষতান্ত্রিকতা এবং কুসংস্কার

পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা ও কুসংস্কার নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কর্মক্ষেত্রে নারীরা আজও পিছিয়ে আছে। পারিবারিক ও সামাজিক বাধা, অসুবিধাজনক পরিবেশ এবং লিঙ্গভেদপ্রসূত মনোভাব এর প্রধান কারণ। শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীকে হতে হয় বৈষম্যের শিকার। এ ছাড়া নিরাপত্তাজনিত ইস্যু ও মানসিকহীনতায় ভোগে অনেকেই। সঙ্গে মুক্তভাবে জীবনযাপনে রয়েছে নানা বাধা ও বিপত্তি, বেড়েছে ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা। এ ছাড়া ঘরে-বাইরে সব জায়গায় হতে হচ্ছে সহিংসতার শিকার। তাই সমাজে নারীদের অবস্থান ও নিরাপত্তা অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নারীদেরই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে নিজেদের। পরিবার ও সমাজের সহযোগিতা এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমেই নারী পারবে তার মেধার প্রস্ফুটন ঘটাতে।

নাজিফা তাসনিম জিফা

তড়িৎ ও প্রকৌশল বিভাগ

চুয়েট

নারীবৈষম্যের শুরু সদ্য জন্ম নেওয়া অবস্থা থেকেই

একটা সময় নারী মানেই ছিল পরিবারের এবং সমাজের বোঝা। বর্তমানে এই ধারণা বা প্রচলন কমে এলেও বিলুপ্ত হয়নি। নারী-পুরুষের বৈষম্য তৈরি হয় তার পরিবার থেকে। বিষয়টা এতটাই উদ্বেগের যে বৈষম্যের শুরুটা হয় সদ্য জন্মগ্রহণ করা অবস্থা থেকেই। নারীরা আজও পুরুষের হাতের পুতুল, কোনো ক্ষেত্রে সর্বত্র কোনো ক্ষেত্রে আংশিক। বহুযুগ আগে আমাদের সমাজে নারীদের অবস্থান আরো ভয়াবহ ছিল। আজ তারা অধিকার সচেতন হচ্ছে। শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের পদচারণা বাড়ছে ফলে তারা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সর্বক্ষেত্রেই নারীরা আজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। সংসার থেকে শুরু করে দেশের হাল ধরছে নারীরা। একমাত্র সুশিক্ষাই পারবে জাতিকে এ বৈষম্যতার শিকলমুক্ত করতে।

ফারজানা আনোয়ার রিমি

বাংলা বিভাগ

গণ বিশ্ববিদ্যলয়

নারীর সামাজিক নিরাপত্তা এখনো প্রতিষ্ঠা হয়নি

স্বাধীনতার-পরবর্তী সময় থেকে বাংলাদেশের নারী ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পেলেও এ দেশের নারীরা সর্বক্ষেত্রে আজও নিরাপদ নয়। বিদ্যালয়, কর্মসংস্থানসহ রাস্তাঘাটে চলাচলের ক্ষেত্রেও নারীকে শিকার হতে হয় প্রতিনিয়ত ইভটিজিংয়ের। খুন-ধর্ষণ-ছিনতাই- এগুলো যেন খবরের কাগজের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। অনেক পরিবারই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, ফলে এসএসসি পাসের পর মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়া হয় কিংবা অনেকের প্রাথমিকের গণ্ডি পার হলেই পড়াশোনা বন্ধ করা হয়। সঙ্গে অপসংস্কৃতির ভয়াল থাবা তো রয়েছেই। অভিভাবকদের উচিত প্রচলিত অন্ধ ধারণা থেকে বেরিয়ে নারীদের শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সমৃদ্ধ দেশ ও জাতি গঠনে নারীর সু-অবস্থান প্রতিষ্ঠা করা খুবই জরুরি।

আজহারুল হক মিজান

পলিটিক্যাল সায়েন্স, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

সুশিক্ষাই পারে নারীকে প্রচলিত গণ্ডি থেকে বের করে আনতে

অধিকারের জন্য নারীকে সংগ্রাম করতে হয়েছে সেই সৃষ্টির সূচনা থেকেই। পরিবার থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্র প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীর সুদক্ষ পদচারণা থাকার পরও নারী পায় না তার যোগ্য সম্মান। গৃহস্থালি কর্মকাণ্ডে সারা জীবন বিনা বেতনে শ্রম দেওয়ার পরও তাদের শ্রমের মূল্য দেওয়া হয় না। কর্ম ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নেই। সময় আগাচ্ছে, তবে উন্নতি এবং অগ্রগতির ছোঁয়া মানুষের মনকে স্পর্শ করছে না। যেখানে বারবার নারীর অধিকার ও সমতার কথা বলা হয়েছে, সেখানে পাত্রী যাচাই-বাছাই করতে গেলেও পাত্রীর বাবাকে হতে হচ্ছে নানা রকম হেনস্তা শিকার। গায়ের রং কালো হলে তো কথাই নেই। পাত্রীর বাবাকে গুনতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের অন্যতম উপায় হচ্ছে নারী জাগরণ ও নারীর সুশিক্ষা। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হলেই একজন নারী পারবে প্রচলিত গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আসতে।

তাহমিনা তানজিল তুলি

বাংলা বিভাগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close