শাদমান হাফিজ শুভ, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট)

  ০৯ মে, ২০২৪

মুজিবর রহমান সরকারি কলেজ গেট

আক্কেলপুর শহরে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে জারুল ফুল

আক্কেলপুরে মুজিবর রহমান সরকারি কলেজের সামনে বেগুনি রঙের ফুলে সজ্জিত হয়ে আছে জারুল গাছ।ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে মুজিবর রহমান সরকারি কলেজের সামনে বেগুনি রঙের ফুলে সজ্জিত হয়ে আছে জারুল গাছ। প্রতি বছরের মতো এ বছরও গাছটি সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে কলেজ গেট এলাকার। ফুলের সৌন্দর্য প্রতিটি পথচারীর নজর কাড়ে। সৌন্দর্যের পাশাপাশি গাছটির রয়ে নানা ঔষধি গুন। গাছটি সংরক্ষণে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন তারা।

অনেক কবির কবিতায় উঠে এসেছে জারুল ফুলের কথা। ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে’ কবিতায় জীবনানন্দ দাশ লিখেছেন, ‘এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে-সবচেয়ে সুন্দর করুণ : / সেখানে সবুজ ডাঙা ভ’রে আছে মধুকূপী ঘাসে অবিরল; / সেখানে গাছের নামঃ কাঁঠাল, অশ্বত্থ, বট, জারুল, হিজল; / সেখানে ভোরের মেঘে নাটার র’ঙের মতো জাগিছে অরুণ;।’

জারুল ফুলের ইংরেজি নাম: Giant Crape-myrtle, গাছের বৈজ্ঞানিক নাম: Lagerstroemia Speciosa। গাছটির আদি নিবাস শ্রীলঙ্কায়। ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব বৃক্ষ জারুল। তবে বাংলাদেশসহ চীন, মালয়েশিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে এই বৃক্ষের দেখা মিলে। গ্রীষ্মের শুরু থেকে এই ফুল শরৎ পর্যন্ত দেখা যায়। ফুলটি লালচে বেগুণী রঙের হয়ে থাকে। ফুল শেষে গাছে বীজ হয় ও বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে। এই গাছ সাধারণত ১০ থেকে ১৫ মিটার উঁচু হয়। গাছটির নানা ভেষজ গুণ রয়েছে। যেমন-ডায়াবেটিস, জ্বর, অনিদ্রা, কাশি, অজীর্ণতায় অনেক উপকারী। তবে নানা কারণে প্রকৃতি থেকে বিলীন হওয়ার পথে এই গাছ।

আক্কেলপুর পৌর শহরের বাসিন্দা শফিউল আলম বলেন, ‘প্রতি বছর গ্রীষ্মের এই সময় মুজিবর রহমান সরকারি কলেজের সামনে এক মাত্র জারুল গাছটি বেগুনি রংয়ের ফুলে ছেয়ে যায়। এতে মনোমুগ্ধকর এক আবেশ তৈরি হয়। প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য দেখতে খুবই ভাল লাগে।’

আক্কেলপুর হাটে বাজার করতে আসা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘জারুল গাছটির কারণে শহরের নান্দনিকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি একটি ঔষধি গুণসম্পন্ন গাছ। নয়নাভিরাম এই গাছের কারণে আমাদের হাটেরও সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পেয়েছে।’

আক্কেলপুর মুজিবর রহমান সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের প্রভাষক অধির চন্দ্র দেবনাথ ও মাতরুবা নাসরিন জানান, জারুল গাছটি Lythraceae গোত্রের একটি বৃক্ষ। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর দেখা পাওয়া যায়। কাঠের আঁশ মসৃন, সরু ও সোজা। কাঠ লালচে বর্ণের ও টেকসই হয়। পানিতে সহজে এই কাঠ পচে না। গাছটি দীর্ঘদিন প্রকৃতিতে টিকে থাকে। বয়ষ্ক গাছের কাঠ দিয়ে বিভিন্ন আসবাব তৈরি করা যায়। গাছটির ঔষধি গুণও রয়েছে।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জয়পুরহাট,আক্কেলপুর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close