রংপুর ব্যুরো

  ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

রংপুরে পিপি হত্যা

অর্থের কারণেই খুন করা হয় বাবু সোনাকে

চার্জশিটে স্ত্রী স্নিগ্ধা ও প্রেমিকের নাম

অর্থের লোভেই রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের পিপি রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন বাবু সোনার স্ত্রী ¯িœগ্ধা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম। গতকাল সোমবার দুপুরে এই তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দিয়ে তিনি জানান, বাবু সোনা হত্যা মামলায় স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক এবং তার প্রেমিক কামরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রংপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, এই মামলায় ৫ মাস ১২ দিনের মাথায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। আর হত্যার দুই সপ্তাহের মধ্যেই আমরা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। মামলায় ৪০ জন সাক্ষী রয়েছে।

কামরুল জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, তিনি তাজহাট উচ্চবিদ্যালয়ে ২৫ বছর ধরে সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করছেন। আইনজীবী বাবু সোনার স্ত্রী দীপা ভৌমিকও একই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। হত্যাকান্ডে ৮ মাস আগে থেকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের। হত্যার ৪ মাস আগে থেকে তারা দুইজনে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বাবু সোনা আইনজীবী হওয়ায় বিয়েতে বাধা হতে পারে এমন মনে করে তারা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। কামরুল তার জবানবন্দিতে আরো জানান, তার ধারণা ছিল বাবু সোনাকে হত্যার পর তারা বিয়ে করে তার সম্পদ ভোগ করতে পারবেন। এছাড়া হত্যার পর লাশ কোথায় পুঁতে রাখবে, নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা কীভাবে প্রচার করবে সব পরিকল্পনা করা হয়।

চলতি বছরের ২৯ মার্চ রাতে বাবু সোনাকে ১০টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর তার লাশ তাজহাট মোলাপাড়ায় একটি নির্মাণাধীন বাড়ির ঘরে পুঁতে রাখা হয়। ৩ এপ্রিল রাতে বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক ওরফে দিপাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব আটক করে। তিনি এ হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন এবং লাশের অবস্থান সম্পর্কে জানান। সেই সূত্র ধরে ওই দিন রাতে মোলাপাড়ার একটি বাড়ির মেঝে খুঁড়ে বাবু সোনার লাশ গলিত উদ্ধার করা হয় ।

এ ঘটনায় পুলিশ বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ওরফে দিপা ভৌমিক, প্রেমিক কামরুল ইসলাম, মিলন মোহন্ত, মোলাপাড়া এলাকার সবুজ ইসলাম ও রোকনুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। গত ৫ এপ্রিল কামরুল বাদে অপর ৪ আসামিকে রংপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তার এজলাসে হাজির করা হয়। আদালতে মিলন মোহন্তসহ আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে তাদের রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কারা হেফাজতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিলন মারা যায়। এই মামলার অপর দুই আসামি সবুজ ইসলাম, রোকনুজ্জামান ও খড় বিক্রেতা স্বপন রায়কে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মামলার বাদী ও নিহত বাবু সোনার ভাই সুশান্ত ভৌমিক বলেন, চার্জশিটে আমরা সন্তুষ্ট। এই হত্যাকান্ডের দ্রুত বিচার বিচার চাই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close