পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি

  ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

পাথরঘাটায় তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা

বরগুনার পাথরঘাটায় আল মামুন নামে এক ব্যক্তির করা ১৩টি মামলার আসামি করা হয়েছে মনির-আসমা দম্পতিকে। একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করতে হয়েছে মনিরকে। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের জেরে তিন সাংবাদিক এবং আসমাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করিয়েছেন আল মামুন। পাথরঘাটা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।

আল মামুন পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি ইউনিয়নের ধলু মিয়ার ছেলে। তিনি সৌদি প্রবাসী। ভুক্তভোগী মনির-আসমা দম্পতি একই ইউনিয়নের বাসিন্দা। সর্বশেষ মামলার আসামিরা হলেন- আসমা আক্তার, চরদুয়ানী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মজিবর রহমান, আজকের পত্রিকার পাথরঘাটা উপজেলা প্রতিনিধি তারিকুল ইসলাম ওরফে কাজী রাকিব, কালবেলার পাথরঘাটা প্রতিনিধি আল আমিন ফোরকান, মোহনা টেলিভিশনের পাথরঘাটা প্রতিনিধি সুমন মোল্লা ও অলি উল্লাহ।

ভুক্তভোগী মনির জানান, আল মামুন তাকে ভিসা দিয়ে সৌদি আরবে কাজের জন্য নিয়ে যান। এর বছর খানেক পর থেকে তার স্ত্রী আসমার সঙ্গে মামুন যোগাযোগ শুরু করেন। মামুন ছুটিতে বাড়িতে এসে আমার স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেন। আসমা এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মামুনের লোকজন আমাকে জিম্মি করেন। আমার স্ত্রী আসমাকে তালাক দিতে চাপ দেন।

ভুক্তভোগী আসমা জানান, মামুন দেশে এসে সৌদি আরবে জিম্মি রাখা আমার স্বামী মনিরকে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে আমাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। পরবর্তী সময়ে আমাকে তালাক দিতে মনিরকে দেশে পাঠান মামুন।

মনির তার স্ত্রী আসমাকে তালাক না দেওয়ায় বিভিন্ন জেলায় মনির এবং আসমার বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা করান আল মামুন। একটি মামলায় গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রেপ্তার হন মনির। এতে অতিষ্ঠ হয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাথরঘাটা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী আসমা ও তার সন্তানরা। এই সংবাদ সম্মেলনের জেরে সাংবাদিকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করান আল মামুন। আল মামুন দেশে না থাকায় পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দিয়ে তার চাচাতো ভাই লিটন হাওলাদারকে দিয়ে বরিশালে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করান।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, মনিরের স্ত্রীকে তালাক দিতে আল মামুন অনেক চেষ্টা করেছেন। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠক হয়েছে। স্বামীকে তালাক দিয়ে মামুনকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় মামুন নিজে বাদী হয়ে ৩টি মামলা, মামুনের বাবা ধলু মিয়াকে দিয়ে একটি, চাচাতো ভাই লিটনকে দিয়ে ৩টি, মামুনের ভাগিনা আবুবকরকে দিয়ে একটি, মামুনের বেয়াইন নাসরিনকে দিয়ে একটি ও বিদেশে নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তৈয়বুর রহমান, মরিয়ম, সগির নাজির ও রফিকুলকে দিয়ে একটি করে ১৩টি মামলা করেন। এসব মামলার মধ্যে অর্ধেকের বেশি মামলা ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে আদালতের রায়ে।

এদিকে পাথরঘাটার তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন পাথরঘাটা প্রেস ক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জাফর ইকবাল। তারা বলেছেন, সাংবাদিকরা যদি ভুক্তভোগীদের অভিযোগ প্রকাশ করে মামলার শিকার হন, তাহলে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা কোথায়? শিগগিরই এ মামলা প্রত্যাহার হওয়া উচিত।

পাথরঘাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুজ্জামান বলেন, ‘চলতি মাসের ৪ তারিখে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া আসমার বিরুদ্ধে আরো একটি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close