রংপুর ব্যুরো

  ০৬ অক্টোবর, ২০২২

রংপুরে গৃহবধূ নির্যাতন হাসপাতালে ভর্তি

গৃহবধূকে মারধর ও আগুনের ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে। গত সোমবার দুপুরে রংপুর সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের পানবাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে সদর কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করে। পরে তার পরিবারের লোকজন শাহানাজকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এর আগেও একাধিকবার নির্যাতন করা হয়েছে বলে জানান ওই ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রংপুর সদর কোতোয়ালি থানায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ শাহানাজ পারভীন শ্বশুর, শাশুড়ি, ননদ, স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, রংপুর সদর উপজেলার হরিদেবপুর পান বাজার এলাকার শাহিদার রহমানের ছেল সাথে হাজীরহাট মেট্রো থানার কেরানির হাট বকতিয়ারপুর আদর্শপাড়া এলাকার সফুর উদ্দিনের মেয়ে শাহানাজ পারভীনের ৪ বছর আগে প্রেমে করে বিয়ে হয়। প্রেমের বিয়ে মেনে নিতে চায় না ছেলের পরিবার। এর পর থেকে শুরু হয় শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদের নির্যাতন। তাদের ঘরে ২ বছরের এক কন্যাশিশু রয়েছে।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ শাহানাজ পারভীন বলেন, আমরা দুইজন প্রেম করে বিয়ে করেছি বলে আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তা মেনে নিতে পারেনি। এই কারণে প্রায়ই আমার ওপর নির্যাতন করত আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আমার শ্বশুর, শাশুড়ি, ননদের স্বামী ও ননদের কথামতো চলে আমার স্বামী। এ কারণে আমার স্বামী আমাকে প্রায় যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে। কয়েক দিন ধরে আমার স্বামী আমার খোঁজখবর রাখে না, সে কোথায় আছে আমি তাও জানি না। স্বামীর খোঁজে শ্বশুরবাড়িতে গেলে আমার শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ ও ননদের স্বামী আমাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ সময় আমার ননদ আমার হাতে ও পায়ে গরম কাঠখড়ি দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়। আমার শ্বশুর মাথায় আঘাত করে। আমার ওপর যারা নির্যাতন করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।

একাধিক প্রতিবেশী জানান, প্রেম করে বিয়ে করার কারণে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তা মেনে নেয়নি। তারাই বাড়ি থেকে অনেকদূরে বাঁশের ঝাড়ের মাঝখানে বাসা করে দেয় এই গৃহবধূকে। ভালোই কাটছি তাদের দিন। কিন্তু কিছুদিন থেকে তার স্বামী যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে। কয়েক দিন ধরে তার স্বামী বাড়িতে না থাকায় দিশাহারা হয়েছে মেয়েটা। তাই স্বামীর খোঁজে শ্বশুরবাড়ি গেলে তারা মেয়েটিকে নির্যাতন করেছে। আমরা এলাকাবাসী এই নির্যাতনের শাস্তি দাবি করছি।

শাশুড়ি সাদেকা বেগম বলেন, আমার ছেলের বউয়ের ব্যবহার ভালো না, তাই আমরা তাকে বাড়ি থেকে দূরে আমাদের অন্য জমিতে বাড়ি করে দিয়েছি। যেন ছেলে ও ছেলে বউ সেখানে থেকে চলতে পারে। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। আমার ছেলের বউ যে অভিযোগ করেছে, তা সঠিক নয়। আমরা তাকে নির্যাতন করিনি। আমার মেয়েরাও বউয়ের শরীরে আগুনের ছ্যাঁকা দেয়নি। সে নিজে নিজে পায়ে-হাতে আগুনের ছ্যাঁকা দিয়ে আমার পরিবারকে ফাঁসাতে এই কাজ করেছে। এর আগেও ওই মেয়ের বাড়াবাড়ির ব্যাপারে বিচার সালিস হয়েছে। আমাদের পরিবারের ওপরে সে যে অভিযোগ দিয়েছে, তা সঠিক নয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close