চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতাল ল্যাবে চিকিৎসা বন্ধে ভোগান্তি
দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বার এবং রোগ নির্ণয়কেন্দ্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে রোগী ও স্বজনরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রামের আহ্বানে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান বলেন, আমাদের সহকর্মীকে মারধরের ঘটনায় আজ (গতকাল) থেকে কর্মসূচি পালন শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলবে। তবে জরুরি চিকিৎসাসেবা এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভা থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়। এর আগে ২০ এপ্রিল চট্টগ্রামের চিকিৎসকরা দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন। ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সকাল ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টা ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধ রাখার পাশাপাশি ল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ রাখা হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও ল্যাবের সামনে ঝুলছে ব্যানার। আর তাতে লেখা আছে- সব ধরনের সেবা থেকে বিরত থাকবেন তারা। নগরীর হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয় রোগী আসলেও কোনো চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না চিকিৎসকরা। এ ছাড়া কোনো ধরনের টেস্টও করতে পাছেন না ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয়। ফলে দীর্ঘ অপেক্ষার পর সেবা না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা।
সকাল থেকে বিভিন্ন রোগ নির্ণয়কেন্দ্র থেকে রোগীদের ফেরত দেওয়া হচ্ছে। একের পর এক রোগ নির্ণয়কেন্দ্রে গিয়েও তারা সেবা পাচ্ছেন না। এ ছাড়া ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগীর ক্রমসূচি দেওয়া হয় সাধারণত সকালবেলা। কিন্তু গতকাল ফোন করে কিংবা সশরীর গিয়েও চিকিৎসকদের সূচি পাচ্ছেন না রোগী ও স্বজনরা। বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তিও বন্ধ রয়েছে। তবে পুরোনো রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। সকাল ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টা এ কর্মসূচি চলবে। নগরের শেভরণ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শেভরণ আই হসপিটালসহ কোথাও রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে না। পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সহকারী ব্যবস্থাপক সুজন দে বলেন, আগে থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যেন নতুন রোগী এন্ট্রি বন্ধ রাখা হয়। তাই বন্ধ রয়েছে। চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রামে বেসরকারি রোগ নির্ণয়কেন্দ্র ও ক্লিনিকে সেবা বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সব ধরনের সেবা চালু রয়েছে। জানতে চাইলে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রাজীব পালিত বলেন, রোগী ভর্তি ও অন্যান্য কাজ চলছে। এটা তো সরকারি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল। এখানে সমস্যা নেই। বাইরে ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধের কর্মসূচি রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম নগরের মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে রোগীর স্বজনরা রিয়াজ উদ্দিন নামের এক চিকিৎসককে মারধর করেন। এর আগে ১১ এপ্রিল পটিয়ার একটি হাসপাতালে রক্তিম দাশ নামে অপর এক চিকিৎসকের ওপর হামলা হয়। এর প্রতিবাদে চিকিৎসকদের ধারাবাহিক কর্মসূচি চলছে।
"