নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

  ২৯ জুন, ২০২২

কিশোরীর সঙ্গে ৭৫ বছরের বৃদ্ধের বিয়ে!

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে প্রভাবশালীরা বাচ্চা প্রসব হওয়ার দিনে ৭৫ বছর বয়সি এক বৃদ্ধের সঙ্গে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে জোর করে বিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা ঘটেছে উপজেলার মৌকরা ইউপি চান্দগড়া-খাটাচৌঁ গ্রামে। ওই বৃদ্ধ চান্দগড়া গ্রামের মৃত আনু মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় গত ৯ জুন কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন বৃদ্ধ আব্দুর রহিম। আদালত মামলাটির তদন্তভার দেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে।

গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সমাজসেবা কর্মকর্তা সাহিদুর রহমান বলেন, মামলাটির তদন্ত চলমান। তদন্তের আলোকে আদালতে প্রতিবেদন পাঠাব।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আব্দুর রহিম আগে কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন। এখন আর বয়সের ভারে কাজ করতে পারেন না। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি ৪ মেয়ে ও ২ ছেলে রেখে তার স্ত্রী তৈয়ুবা বেগম মারা যান। অভাবের সংসার। বর্তমানে মানুষের দানে তার সংসার চলে। গত ২১ মে রাতে পার্শ্ববর্তী খাটাচৌঁ গ্রামের ওই প্রতিবন্ধী কিশোরী একটি কন্যাশিশু সন্তান জন্ম দেয়। পরদিন দুপুর ১২টার দিকে খাটাচৌঁ গ্রামের কয়েকজন প্রভাবশালী আব্দুর রহিমকে বাড়ি থেকে টেনেঁেহচড়ে তুলে নিয়ে যায় মেয়েটির বাবার বাড়িতে। তখনো রহিম কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি। এর কিছুক্ষণ পরই প্রভাবশালী আব্দুল মমিন বলেন, এ বাচ্চার পিতা তুই। এ মেয়েকে এখন তোর বিয়ে করতে হবে। এজন্য তোকে ধরে আনা হয়েছে। পরে ওই গ্রামের প্রভাবশালী আব্দুর রব, আব্দুল হালিম, মেয়ের বাবা, মোতালেব, রাজু, ওসমান, শাহিন ও সবুজসহ ২০-২৫ জন মিলে মৌকরা ইউপির কাজি মিলনের সহকারী কাজি মাঈন উদ্দিনকে দিয়ে এ বিয়ে পড়ান। এরপর বৃদ্ধ আব্দুর রহিম এ সন্তানের বাবা নয় বলে আদালতে একটি মামলা করেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম বলেন, ‘এ মেয়ের সঙ্গে আমার কোনো অবৈধ সম্পর্ক ছিল না। তিনি এ সন্তানের পিতা নন। ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। এ সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করান। আমার সঙ্গে রিপোর্ট মিললে আমাকে ফাঁসি দেন। কোনো দুঃখ থাকবে না। আমার ৬ সন্তান রয়েছে। এ বয়সে এত বড় অপবাদ তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে; যা আমি মানতে রাজি নই। আমি এ ঘটনার সুস্থ বিচারের দাবি জানাই।’ এ বিষয় অভিযুক্ত প্রভাবশালী আব্দুল মমিন বলেন, “আমরা তাকে কেন জোর করে বিয়ে পড়াতে যাব। সে ওই মেয়েকে ‘অপগর্ভ’ করে। আর সে রাজি ছিল, তাই তাকে বিয়ে করানো হয়েছে।” এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বলেন, ‘সে (বৃদ্ধ) আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে। তাই এলাকার লোকজন নিয়ে তার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়েছি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close