এম এ সাইদ খোকন, আমতলী (বরগুনা)

  ২৪ জুন, ২০১৭

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ যাত্রী বহন

ঈদ সামনে রেখে আমতলী-ঢাকা রুটে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার থেকে কোনো কারণ ছাড়াই লঞ্চ কর্তৃপক্ষ এ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন। এ ছাড়া ধারণক্ষমতার চেয়ে তিনগুণ যাত্রী বহন করছে বলেও জানিয়েছেন তারা।

জানা গেছে, আমতলী-ঢাকা রুটে এমভি হাসান হোসেন, এমভি ইয়াদ ও এমভি সুন্দরবন-৫ নামের তিনটি লঞ্চ সার্ভিস রয়েছে। এ লঞ্চমালিক কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে যাত্রী ধারণক্ষমতার চেয়ে তিনগুণ বেশি যাত্রী পরিবহন করছে। এমভি ইয়াদ লঞ্চে যাত্রী ধারণক্ষমতা ৩৯৬ জন, নেওয়া হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার জন। এমভি হাসান হোসেন লঞ্চে ধারণক্ষমতা ৩৪২ জন, নেয়া হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার জন। এমভি সুন্দরবন-৫ লঞ্চে ধারণক্ষমতা ৪০০ জন, নেওয়া হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ জন। এ ছাড়া ঈদ সামনে রেখে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। পূর্বে আমতলী-ঢাকা প্রথম শ্রেণির ভাড়া ছিল এক হাজার টাকা এবং ডেকের ভাড়া ছিল ৩০০ টাকা। গত মঙ্গলবার থেকে কোনো কারণ ছাড়াই এ ভাড়া বৃদ্ধি করে সিঙ্গেল কেবিন ১২০০ টাকা, ডাবল কেবিন ২৪০০ টাকা এবং ডেকের ভাড়া ৩৫০ টাকা আদায় করা হয়েছে। যাত্রীরা অভিযোগ করেন, লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ঈদ সামনে রেখে যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করায় সাধারণ যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। লঞ্চযাত্রী জসিম উদ্দিন সিকদার বলেন, ডাবল কেবিনে ভাড়া ছিল ২০০০ টাকা এখন ভাড়া দিতে হচ্ছে ২৪০০ টাকা।

গতকাল শুক্রবার সকালে আমতলীর চাওড়া ইউনিয়নের সবুজ খান ও চিলা গ্রামের নয়ন মিয়া বলেন, লঞ্চ কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। গত তিন দিন আগে ভাড়া ছিল ৩০০ টাকা, এখন ভাড়া নিচ্ছে ৩৫০ টাকা। হলদিয়া গ্রামের মামুন হাওলাদার বলেন, লঞ্চে অতিরিক্ত লোক বহন করছে। এতে জীবনের ঝুঁকি থেকে যায়। তারপর ভাড়া পূর্বেও চেয়ে ৫০ টাকা বেশি ভাড়া আদায় করছে। ঢাকার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ বলেন, লঞ্চ কর্তৃপক্ষ লঞ্চে যেভাবে যাত্রী ওঠাচ্ছে, তিল ধারণের জায়গা থাকে না।

সুন্দরবন-৫ লঞ্চের সুপারভাইজার অপু মিয়া অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কথা অস্বীকার করে বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একজন ডেকের ভাড়া ৩০০ টাকা, সেখানে নেওয়া হচ্ছে ৩৫০ টাকা। ডেকের ভাড়ার চারগুণ সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া, সেখানে নেয়া হচ্ছে ১২০০ টাকা। যাত্রী ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশী যাত্রী বহন প্রসঙ্গে সুপার ভাইজার অপু বলেন, লঞ্চ কর্তৃপক্ষ কোনো যাত্রী লঞ্চে ডেকে উঠায় না। যাত্রী নিজেদের ইচ্ছায় লঞ্চে উঠে। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই।

বরগুনা বিআইডব্লিউটিএর আমতলী লঞ্চঘাটে টিকেট মাস্টার মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, এ রুটের তিনটি লঞ্চ সার্ভিস রয়েছে। এ লঞ্চগুলো ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে। এতে যাতায়াতে জীবনের ঝুঁকি থেকে যায়। তিনি আরো বলেন, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ কোনো ভাড়া বৃদ্ধি করেনি। লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষ তাদের ইচ্ছামতো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। বরগুনা বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদের সঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী বহনের বিষয়ে তার মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী যাতে লঞ্চে পরিবহন না করা হয় সেজন্য লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী পরিবহন করলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist