ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৪ মার্চ, ২০২৪

রোমান সানার অভাব অপূরণীয়

বাংলাদেশের হয়ে আর খেলবেন না রোমান সানা

বাংলাদেশের আর্চারির সবচেয়ে বড় নাম হয়ে উঠেছিলেন রোমান সানা। কিন্তু গত এক-দেড় বছরে একটু একটু করে পাদপ্রদীপের আলো থেকে সরে যাচ্ছিলেন এ তারকা। এবার তিনি জাতীয় দলকে বিদায়ই বলে দিলেন। এমন সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ জানতে রোমান সানাকে বারবার ফোন দিলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বাংলাদেশের এক গণমাধ্যমকে আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দিন আহমেদ চপল ও জাতীয় দলের কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ রোমান সানার অবসরের খবরটি নিশ্চিত করলেন ঠিকই, কিন্তু নেপথ্যের কারণ জানাতে পারলেন না কেউই। ফেডারেশনকে একটা চিঠি দিয়েছেন রোমান। সেখানে অবসরের পেছনে তিনি ‘ব্যক্তিগত কারণ’ লিখেছেন বলে জানান চপল।

‘রোমান ফেডারেশনকে যে চিঠি দিয়েছে সেখানে অবসরের কারণ হিসেবে ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছে। আমরা তাকে সিদ্ধান্ত বিবেচনার অনুরোধ করেছি, কিন্তু সে তার সিদ্ধান্তে অনড়। ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চাই, এগুলো বলেছে।’ ‘কিছুদিন আগে আমার ছেলের বিয়েতে এসেছিল। হাসিখুশিই দেখলাম। তখনো অবসর নিয়ে আমাকে কিছু বলেনি। আমাদের কারো সঙ্গেই সে এ নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি। কদিন আগে ইরাকে যে টুর্নামেন্ট (এশিয়া কাপ স্টেজ-১ ওয়ার্ল্ড র‌্যাঙ্কিং টুর্নামেন্ট), সেটার ট্রায়ালের জন্য তাকে ডাকা হয়েছিল, কিন্তু সে আসেনি।’

চোট আর অফ-ফর্মের কারণে গত এক-দেড় বছর তেমন একটা পাদপ্রদীপের আলোয় ছিলেন না রোমান। এ বিষয়গুলো তাকে সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করে থাকতে পারে বলে মনে করে কোচ ফ্রেডরিখ। জাতীয় দল থেকে রোমান অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটা আমাদের জন্য মেনে নেওয়া কঠিন। অবসর নেওয়ার কারণ কেবল সে-ই বলতে পারে, কিন্তু আমার মনে হয় কিছু বিষয় তাকে প্রভাবিত করে থাকতে পারে। যেমন, বেশ কিছুদিন ধরে সে চোটে ছিল, পারফরম্যান্সও খুব ভালো ছিল না। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের ট্রায়ালে সে আসেনি। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে সে আর্চারি খেলছে, প্রায় ১৫ বছর ধরে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছে- এগুলোর ক্লান্তিও থাকতে পারে। সে বাংলাদেশের আর্চারির তারকা, তার অবসরে যাওয়াটা আমাদের জন্য দুঃখের। তবে তার সিদ্ধান্ত আমাদের মেনে নিতে হবে। তাছাড়া আমি মনে করি, কারো চলে যাওয়ায় বড় শূন্যতা তৈরি হয় না। নতুনরা উঠে আসছে, তারা শূন্যতা পূরণ করবে। খুলনা থেকে উঠে আসা রোমানের জাতীয় আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেক ২০১০ সালে। আন্তর্জাতিক অভিষেকও একই বছর। ২০১১ সালে ঢাকায় প্রথম এশিয়ান ইয়ুথ আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে রিকার্ভ দলগত রুপা জেতেন রোমান। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রথম সোনা পান ২০১৪ সালে থাইল্যান্ডে এশিয়ান গ্রাঁ প্রিতে।

২০১৯ সালের জুনে নেদারল্যান্ডসে বিশ্ব আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে ইতালির মাউরো নেসপোলিকে ৭-১ সেট পয়েন্টে হারিয়ে ব্রোঞ্জ পান রোমান; দেশকে এনে দেন টোকিও অলিম্পিকসে সরাসরি খেলার টিকেট। ওই বছরই বিশ্ব আর্চারির ব্রেকথ্রু ক্যাটাগরিতে সেরা হন তিনি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নেপালের কাঠমা-ু ও পোখারায় ১৩তম এসএ গেমসে তিনটি স্বর্ণ পদক জয় করেন রোমান। রিকার্ভ একক, দলগত ও মিশ্র দলগত বিভাগে সেরা হন তিনি। ২০২১ সালের আর্চারি বিশ্বকাপে দিয়া সিদ্দিকীর সঙ্গে রিকার্ভ মিশ্র দ্বৈতে রুপা জিতেছিলেন রোমান। পরের বছর সতীর্থ এক নারী আর্চারের সঙ্গে বাজে আচরণ করে শিরোনামে আসেন; আর্চারি ফেডারেশনের নিষেধাজ্ঞা পান। অবশ্য পরে সে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ফেডারেশন। গত সেপ্টেম্বরে হাংজু এশিয়ান গেমসে অংশ নিলেও সাফল্য পাননি রোমান। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে আড়ালে চলে যেতে থাকেন তিনি। গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ইরাকের এশিয়া কাপের ট্রায়ালে ডাকা হলেও যোগ দেননি রোমান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close