শরীফুল রুকন, চট্টগ্রাম

  ২৮ অক্টোবর, ২০১৮

ব্যাটিংটাই প্রাপ্তি বাংলাদেশের

বিশ্বকাপের বাকি আর আট মাস। বাংলাদেশ এখন প্রতিটি সিরিজই খেলছে বিশ্বকাপের ভাবনা ভেবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওপেনিং নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল দল। বিশ্বকাপের আগে ওপেনিং জুটির সমাধান না হলে যে বিপদ! কিন্তু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষে ওপেনিং জুটি নিয়ে সেই উদ্বেগটা কেটেই গেছে। এ ছাড়া এই সিরিজে দলের লেট অর্ডাররাও রান পেয়েছে। সব মিলিয়ে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুরু হয়েছে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

ক্যারিয়ারের সেরা ছন্দে আছেন ইমরুল কায়েস। সিরিজের তিন ম্যাচে যথাক্রমে ১৪৪, ৯০ এবং ১১৫ রান করেছেন ইমরুল। হয়েছেন ম্যান অব দ্য সিরিজ। আর এই সিরিজে ৩৪৯ রান করার মাধ্যমে তিনি তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হবার রেকর্ড গড়েছেন। এশিয়া কাপের ফাইনালে সেঞ্চুরি করা লিটন দাস জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওপেনিংয়ে নেমে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। তার ৮৩ রানের ইনিংসের কারণে জয়টা সহজ হয়ে যায়। এখন তামিম ফিরলে ওপেনারের অন্য জায়গাটি দখল করতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে লিটন ও ইমরুলকে।

সৌম্যকে সাতেও খেলানো যেতে পারে বলে মনে করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। আবার ওই জায়গাটা সাইফ উদ্দিনকে বরাদ্দ দেওয়ার চিন্তা আছে বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এই পজিশনে একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডারকে থিতু করতে চায় টিম ম্যানেজম্যান্ট। কারণটা ইংলিশ কন্ডিশনে এবারের বিশ্বকাপ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সাইফ উদ্দিন যেভাবে রান করেছেন, আবার বোলিংয়ে মাপা লেংথ, কিছুটা সুইং, সঙ্গে গতি। এতে তার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব আছে ম্যানেজম্যান্টের। এখন সাইফ উদ্দিন সেই প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পারবেন সেটা সময়ই বলবে। আরেক পেস বোলিং অলরাউন্ডার আরিফুল হককেও হিসাবে রাখতে হবে। সে হিসাবে সাত নাম্বারেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু। এ নিয়ে অবশ্য চিন্তিত নন সৌম্য সরকার, ‘সাত নম্বরের কথাটা আপনারদের কাছ থেকেই শুনেছি। দলের ভেতরে এখনো শুনিনি।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে দলের লেট অর্ডার রান পায়। তিন উইকেটে ১৩৭ থেকে এক পর্যায়ে স্কোরবোর্ড বাংলাদেশ দেখছিল ছয় উইকেটে ১৩৯। পরপর তিন উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলকে আলোর পথ দেখান ইমরুল কায়েস, সাইফউদ্দিনকে সঙ্গী করে। এ নিয়ে মাশরাফি, ‘সব সময় যদি আমরা মুশফিক আর রিয়াদে খেলা শেষ করি, বড় মঞ্চে গিয়ে যখন সেটা হবে না, তখন কিন্তু দল বিপদে পড়বে। সুতরাং

এটা এক দিক দিয়ে ভালো যে লেট মিডল অর্ডার এক্সপোজড হয়েছে এবং ওরা রান পেয়েছে। এটা কিন্তু আমাদের আরো ওপরে উঠতে সাহায্য করবে।’

ব্যাটসম্যানদের এই তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা দলের জন্য ভালোই। তবে বোলারদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কমই দেখা যাচ্ছে। যদিও এবার জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাঁ-হাতি স্পিনে ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখার কাজটা ঠিক মতোই করেছেন নাজমুল ইসলাম অপু। নাজমুল ঢাকায় প্রথম ম্যাচে ৩৮ রানে নেন দুই উইকেট। চট্টগ্রামে উইকেট না পেলে আঁটসাঁট বোলিংয়ে বেঁধে রাখেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের। সাইফ, নাজমুলের পাফরম্যান্স প্রসঙ্গে মাশরাফি, ‘সাইফ ভালো করেছে। ব্যাটিং ভালো করেছে, বোলিংও তো ভালো করেছে অবশ্যই। আর অপুও খারাপ বোলিং করছে না। তার অভিষেক হয়েছে অল্প কয়েক দিন হলো। সেও খারাপ করছে না। সুতরাং ইতিবাচক দিক আছে।’

এদিকে, অনেকদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে মাশরাফির সঙ্গে পেস আক্রমণে থাকেন মোস্তাফিজুর রহমান। তৃতীয় পেসার হিসেবে কখনো রুবেল হোসেন, কখনো আবু হায়দার কিংবা সাইফউদ্দিন। স্পিন আক্রমণে সাকিবের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজ। সাকিবের সঙ্গী কিংবা বদলি হিসেবে আরেকজন বাঁ-হাতি স্পিনারের শূন্যতা এখনো ভালোভাবে পূরণ হয়নি। ষষ্ঠ বোলারের প্রয়োজন মেটাতে আসেন মাহমুদউল্লাহ। এতে তিনি কখনো সফল হন, কখনো হন না। ব্যাটসম্যানদের মতো বোলারদের মধ্যেও তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে ওঠা প্রয়োজন। এর ফলে হাতে যথেষ্ট বিকল্প খেলোয়াড় থাকবে। এতে যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলোয়াড়রা ধারাবাহিক ভালো করার তাগাদা অনুভব করবেন। এভাবে চলতে থাকলে বিশ্বকাপে দারুণ একটা দল পেতেই পারে বাংলাদেশ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close