নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪

চালের দাম ফের চড়া

* সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা * সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন বিক্রেতারা * উৎপাদন ও চাহিদার তথ্যে ব্যাপক গরমিল : সিপিডি

আমন মৌসুমের ধান কাটা-মাড়াই প্রায় শেষ। সরকারি হিসাবে, এ বছর আমনের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন হয়েছে। বাজারে আমনের চাল সরবরাহও শুরু হয়েছে ডিসেম্বর থেকে। সরবরাহ পুরোদমে থাকলেও এখন মিল, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে চালের দাম বাড়ছে। শুধু পাইকারিতেই এক সপ্তাহে চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪-৫ টাকা।

গত সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম ছিল ৬৫ টাকা, তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ টাকায়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শুধু সিন্ডিকেটের কারণেই চালের দাম বেড়েছে। কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশে চাল উৎপাদনের ৪০ শতাংশ হয় আমন মৌসুমে। চলতি আমন মৌসুমে ১ কোটি ৭১ লাখ ৭৮ হাজার টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছিল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)। ৫৮ লাখ ৭৪ হাজার হেক্টর জমিতে এ বছর ধানের আবাদ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাটা হয়েছে ৫৭ লাখ ২৭ হাজার হেক্টর বা সাড়ে ৯৭ শতাংশ জমির ধান। চাল উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ ৯৩ হাজার টন। গড় ফলন হয়েছে হেক্টরপ্রতি ২.৯৮ টন।

গত বছরের শেষদিকে পোকামাকড় এবং ঘূর্ণিঝড় মিধিলি ও মিগজাউমের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমির ধান। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, এবার প্রায় ১ কোটি ৭৪ লাখ টন চাল উৎপাদন হওয়ার কথা রয়েছে। এবার আমনে উৎপাদন দাঁড়াতে যাচ্ছে রেকর্ড সর্বোচ্চে। গতকাল শনিবার রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, ব্রি-২৮ চাল ৫৫, নাজিরশাইল ৭৫ থেকে ৮০, দেশি মোটা চাল ৫০ এবং পোলাও চাল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। এছাড়া প্রতিটি চালের বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও অতিরিক্ত মুনাফার আশায় চাল মজুদ করে দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। মহাখালী কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী জনি বলেন, সব ধরনের চালের দাম ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। সেলিম রাইস ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারীর আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘চালের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও সিন্ডিকেটের কারণে দাম বেড়ে গেছে।’ চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত চাল আমদানি করেনি সরকার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ১০ লাখ ৫৬ হাজার টন চাল আমদানি হয়। গত নভেম্বরে মোটা ও মাঝারি আকারের চালের দাম কিছুটা বাড়লেও তা ডিসেম্বরে কমে আসে। তবে মাস না যেতেই আবার বাড়তে শুরু করেছে দাম। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ১৪ লাখ টন চাল মজুদ রয়েছে।

গত অর্থবছরেও চালের উৎপাদন নিয়ে ডিএই ও বিবিএসের তথ্যে গরমিল ছিল ১৬ লাখ টনেরও বেশি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আমাদের দেশে জমি কম, তবু উৎপাদন হচ্ছে। কিন্তু উৎপাদন ও চাহিদার তথ্যে ব্যাপক গরমিল দেখা যায়। আসলে আমাদের চাহিদা ও উৎপাদন কত, তা ঠিক করতে হবে। কয়েক বছর ধরেই বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে। বাড়ছে মূল্যস্ফীতিও। সাবেক খাদ্য সচিব আবদুল লতিফ মণ্ডল বলেন, ‘বিশ্ববাজারে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। এজন্য ব্যবসায়ীরা হয়তো দেশের বাজারেও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close