নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪

তেজগাঁওয়ে আগুনে অঙ্গার মা-ছেলে

রাতঘুম থেকে উঠে কারওয়ানবাজারে চলে আসেন সবজি বিক্রেতা আলো আক্তার। আসার সময় নাতি ছোট্ট নাফি তাকে একটা চুমু খেয়েছিলেন। সেটাই যে ছিল শেষ চুম্বন তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি আলো আক্তার। আসার কিছুক্ষণ পর শুক্রবার রাত ২টা ২৮ মিনিটে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার মোল্লাবাড়ি বস্তিতে আগুনে পুড়ে মা-ছেলের মৃত্যু হয়। তারা হলেন শারমিন আক্তার ও তার দেড় বছরের ছেলে নাফি। গতকাল শনিবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে গতকাল বিকেলে আলো আক্তারকে বিলাপ করতে গেছে। সেখানে আলো আক্তার বলেন, রাত ২টার পর তিনি মোল্লাবাড়ির বস্তিতে আগুন লাগার খবর পান। এক দৌড়ে বস্তিতে গিয়ে দেখেন ঘর জ্বলছে। ছোট মেয়ের, ছেলের খোঁজ পেয়েছেন। কিন্তু বড় মেয়ে শারমিন আক্তার আর তার ছেলে নাফির খোঁজ পাচ্ছেন না।

মর্গের সামনে নির্বাক দাঁড়িয়ে ছিলেন শারমিনের স্বামী মিজানুর রহমান। তিনি একজনকে ট্রেনের টিকিট দেখিয়ে বলছিলেন, পরশু দিন (সোমবার) শারমিন ও ছেলে নাফিকে নিয়ে তার জামালপুর যাওয়ার কথা ছিল। এজন্য দুই দিন আগে ট্রেনের টিকিটও কেটেছেন।

মিজানুর বলেন, তিনি তেজগাঁও এলাকায় একটি মেসে থাকেন। শুক্রবারও তিনি ছেলেকে দেখতে গিয়েছিলেন। শুক্রবার রাতে যখন আগুন লাগার খবর পান, তখন মেস থেকে বস্তিতে যান। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও স্ত্রী আর সন্তানকে খুঁজে পাননি। মিজানুর বলেন, তিনি নিশ্চিত যে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তারা তার স্ত্রী ও ছেলে। ডিএনএ মেলার পর পুলিশ মরদেহ হস্তান্তর করবে বলে জানিয়েছে।

তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামিল আহমেদ বলেন, ডিএনএর নমুনা পরীক্ষার পর দুজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পুলিশের ধারণা, তারা সম্পর্কে মা ও ছেলে।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) সামনে মোল্লাবাড়ি বস্তিতে শুক্রবার রাত ২টা ২৮ মিনিটে আগুন লাগার খবর জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। ১৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে। রাত ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার এ তথ্য জানান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close