ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০১ এপ্রিল, ২০২৩

সান্তনার জয়ে বাংলাওয়াশ এড়ালো আইরিশরা

পুরো সিরিজে চলছিল একপেশে লড়াই। বাংলাদেশের দাপটের মাঝে কোনো জবাব দিতে পারছিল না আয়ারল্যান্ড। শেষটায় এসে দেখা গেল পুরো ভিন্ন চিত্র। সাকিব আল হাসানরা এবার আটকে গেলেন অল্প রানে। পল স্টার্লিং ঝোড়ো ইনিংস খেলে অনেকটা তুড়ি মেরেই যেন সেরে ফেললেন কাজ। আইরিশদের আর হোয়াইটওয়াশ করতে পারল না বাংলাদেশ।

শুক্রবার চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিও হলো একপেশে। তাতে জয়ী দলের নাম আয়ারল্যান্ড। স্বাগতিকদের ৭ উইকেটে হারালো তারা। আগে ব্যাটিং নিয়ে বাংলাদেশের করা ১২৪ রান ৩৬ বল আগেই পেরিয়ে যায় সফরকারীরা। বল হাতে ২৫ রানে তিন উইকেট নিয়ে সবচেয়ে বড় অবদান পেসার মার্ক অ্যাডায়ারের। রান তাড়ায় ৪১ বলে ৭৭ রানের ইনিংসে জেতার রাস্তা খুঁজে নেন অধিনায়ক স্টার্লিং। ১২৫ রানের লক্ষ্যে নেমে দলকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন স্টার্লিং। উদ্বোধনী জুটি অবশ্য খুব বড় হয়নি। আরেক ওপেনার রস অ্যাডায়ার ফেরেন দুই অঙ্কের আগেই। তৃতীয় ওভারে দলের ১৭ রানে তাসকিন আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি।

স্টার্লিং চালাতে থাকেন। সাকিবের করা দ্বিতীয় ওভারে টানা দুই চার পেয়েছিলেন। পরে হাসান মাহমুদকে ছক্কার পর মারেন চার। দ্বিতীয় উইকেটে লোরকান টাকারের সঙ্গেও তার জুটিটা জমেনি। ১৫ বলে ২৪ রানের জুটির পর আত্মাহুতি দেন টাকার। শরিফুল ইসলামের করা প্রথম বল এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে এজড হয়ে ধরা দেন লিটনের গ্লাভসে। তৃতীয় উইকেট জুটি বেশ জমে যায়। স্টার্লিংয়ের সঙ্গে সাবলীল খেলতে থাকেন হ্যারি টেক্টর। স্টার্লিং আগ্রাসী মেজাজ জারি রেখে ৩১ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। ১০ ওভারে ৭৭ নিয়ে নেয় আইরিশরা। ফিফটির পর আরো ডানা মেলেন স্টার্লিং। শরিফুলের করা একাদশ ওভার থেকে এক ছক্কা, তিন বাউন্ডারিতে নিয়ে নেন ২০ রান। দলকে একদম জেতার কাছে নিয়ে আউট হন তিনি। রিশাদ হোসেনকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম উইকেটের স্বাদ দিয়ে স্টার্লিং থামেন ৭৭ রানে। ছক্কা মারতে গিয়ে লং অন বাউন্ডারিতে ধরা দেন তিনি। ৪১ বলের ইনিংসে ১০ চার আর চার ছক্কা আসে তার ব্যাটে। টেক্টরের সঙ্গে মিলে কার্টিস ক্যাম্ফার পরে ৯ বলে ১৪ রানের উপস্থিতিতে সারেন আনুষ্ঠানিকতা।

দুপুরে টস জিতে ব্যাট করতে নেমেই প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরেছিলেন লিটন দাস। শুরুতে বাউন্ডারি পেয়ে গিয়েছিলেন রনি তালুকদারও। আগের দুই ম্যাচের ঝড়ের ধারাবাহিকতার আভাস ছিল। প্রথম ওভারে ৯ রান আসার পর এবার হলো ভিন্নতা। মার্ক অ্যাডায়ারকে সø্যাশ করতে গিয়ে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত এই সিরিজে নিষ্প্রভ। ৪ রান করে হ্যারি টেক্টরকে সøগ সুইপ করে দেন ক্যাচ। রনিও পারেননি এবার। ৩ চারে ১০ বলে ১৪ করা ওপেনার ধরা দেন বাউন্ডারি লাইনে।

অ্যাডায়ার তার মিডিয়াম পেসে কাবু করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে। লেগ স্পিনার বেন হোয়াইটের বলে তুলে মারতে গিয়ে আকাশে উঠিয়ে দেন তাওহিদ হৃদয়। ৪১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজকে না রাখায় এদিন একাদশে একজন কম ছিল বাংলাদেশের। অভিষিক্ত রিশাদ নামেন সাতে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম স্কোরিং শটে ছক্কা পেয়ে গিয়েছিলেন রিশাদ। টিকতে পারেননি, অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু হ্যামফ্রিসের প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে যান তিনি। ওই ওভারে হ্যামফ্রিসের শিকার হয়েছেন তাসকিনও। তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা দেন তিনি। ৬১ রানে পড়ে যায় ৭ উইকেট। অষ্টম উইকেটে গিয়ে ইনিংসের সেরা জুটি পায় বাংলাদেশ। দলের বিপদে ত্রাতা হয়ে দাঁড়িয়ে যান শামীম। নাসুম আহমেদকে নিয়ে তিনি গড়েন প্রতিরোধ। থিতু হয়ে চালাতে থাকেন তিনি। নাসুম তাকে ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন। গ্যারেথ ডেলানির অনেক বাইরের বল কাভার দিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ হয়ে ফেরেন নাসুম, ভাঙে ৩৪ বলে ৩৩ রানের জুটি। নাসুমের পর শরিফুল ইসলাম ফিরে যান তড়িঘড়ি। একদম শেষ উইকেটে হাসান মাহমুদকে একপাশে রেখেও চালাতে থাকেন শামীম। ৪০ বলে স্পর্শ করেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। তার চেষ্টার পরও রানটা আসলে জুতসই ছিল না। ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো উইকেটে এত অল্প পুঁজি নিয়ে যে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গেও লড়াই করা কঠিন তা বোঝা গেছে স্পষ্ট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ : ১৭ ওভার ২০২/৩

আয়ারল্যান্ড : ১৭ ওভার ১২৫/৯

ফল : বাংলাদেশ ৭৭ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা : সাকিব আল হাসান

সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close