প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে মারা যান হুসনে আরা
নিহত ৩ বাংলাদেশির পরিচয় জানা গেছে
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের সময় দুই মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় নিহতদের মধ্যে যে তিনজন বাংলাদেশি রয়েছেন, তাদের পরিচয় জানা গেছে। বাংলাদেশের অনারারি কনসাল শফিকুর রহমান ভুঁইয়া ইউএনবিকে বলেন, নিহত বাংলাদেশিরা হলেন স্থানীয় লিঙ্কন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আবদুস সামাদ, তার স্ত্রী সানজিদা আকতার। অন্যজন হলেন গৃহবধূ হোসনে আরা ফরিদ।
নিহত ড. সামাদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ছিলেন। শফিকুর রহমান ভুইয়া আরো জানান, মসজিদে হামলার ঘটনায় বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া গোলাগুলির ঘটনার পর থেকে এক বাংলাদেশি নিখোঁজ রয়েছেন।
সিলেট প্রতিনিধি জানান, নিউজিল্যান্ডে মসজিদে বন্দুকধারীদের গুলির শব্দ শুনে পক্ষাঘাতগ্রস্ত ‘স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে’ নিহত হন সিলেটের হুসনে আরা পারভীন। ৪২ বছর বয়সি পারভীন সিলেটের গোলাপগঞ্জের জাঙ্গালহাটা গ্রামের নুরুদ্দিনের মেয়ে। তার স্বামী ফরিদ উদ্দিনের বাড়ি জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার চকগ্রামে।
পারভীনের ভাগ্নে মাহফুজ চৌধুরী নিউজিল্যান্ডের আত্মীয়-স্বজনদের বরাতে বলেন, ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় দুটি মসজিদ রয়েছে। একটি মসজিদে নারীরা ও অন্যটিতে পুরুষরা নামাজ পড়েন।
‘খালা পারভীন তার পক্ষাঘাতগ্রস্ত স্বামীকে নিয়ে জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছিলেন। স্বামীকে হুইল চেয়ারে পুরুষদের মসজিদের রেখে নিজে নারীদের মসজিদে যান। এর প্রায় ১৫ মিনিট পরে পুরুষদের মসজিদে গুলির শব্দ শুনে তিনি বের হন। এ সময় অস্ত্রধারীরা গুলি করলে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
তবে তার স্বামী ফরিদ উদ্দিন অক্ষত আছেন। তিনি তার আত্মীয়-স্বজনদের কাছে রয়েছেন বলে জানান মাহফুজ চৌধুরী। গুলিবিদ্ধ আরো চার বাংলাদেশিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছেন। এছাড়া একজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে খবর জানা গেছে।
মাহফুজ চৌধুরী বলেন, মসজিদের বাইরে গুলির শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন লোক ফরিদ উদ্দিনকে মসজিদ থেকে বের করে নেওয়ায় তিনি বেঁচে যান। নিউজিল্যান্ডে বসবাসকারী নিহত পারভীনের ভাবি হিমা বেগম ঘটনার পর টেলিফোনে সিলেটে থাকা পরিবারের সদস্যদের খবর দেন।
নিউজিল্যান্ডের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিহত পারভীনের লাশ এখনো পরিবারে হস্তান্তর করেনি। পুলিশের পক্ষ থেকে পারভীনের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিউজিল্যান্ডে অবস্থানকারী তার স্বজনদের জানানো হয়েছে।
পারভীন-ফরিদ দম্পতির একটি মেয়ে রয়েছেন। ১৯৯৪ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। এর কয়েক বছর পর তারা নিউজিল্যান্ডে যান। ২০০৯ সালে তারা বাংলাদেশে এসেছিলেন বলে জানান মাহফুজ।
"