নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ মে, ২০২৪

সরকারি প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে আনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারবাজারে আনার নির্দেশ দিয়েছেন। বাজার প্রতিযোগিতামূলক করতে কোন কোন সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে শেয়ারবাজারে আনা যায়, তা নিয়ে কাজ করতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ সভা হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিত কর্মকার। তিনি বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করবে। তবে কী ধরনের প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে আনা হবে, তা তিনি জানাননি।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম বলেন, শেয়ারবাজারে গেলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় সক্ষম হবে। আমার চাকরিজীবনের প্রথম দিকে একবার সিলেটে গিয়েছিলাম। তখন দেখেছিলাম, সরকারি চা-বাগানের ব্যবস্থাপক টুলের ওপর কাজ করছেন। আর বেসরকারি চা-বাগানের ব্যবস্থাপক তখনকার দিনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে কাজ করেন। তখন ওই ব্যবস্থাপক বলেছিলেন, ‘জঙ্গল মে মঙ্গল।’ মন্ত্রী আরো বলেন, ছাতক সিমেন্ট কারখানা সরকারি খাতের পুরোনো সিমেন্ট কারখানা। এরপর বেসরকারি খাতের বহু সিমেন্ট কারখানা এসেছে। দেখেন, বেসরকারি খাতের সিমেন্ট কোম্পানি আজ কোথায়, ছাতক সিমেন্ট কারখানা কোথায়। সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের প্রতিযোগিতাসক্ষম করতে তুলতে হবে। মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানকে তিন বছর দেখতে হবে। এরপর মুনাফা বাড়াতে হবে এবং শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করতে হবে।

সত্যজিত কর্মকার বলেন, একনেক বৈঠকে খুলনা মেডিকেল কলেজ প্রকল্প থেকে ‘শেখ হাসিনা’ নামটি বাদ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় সবাই জানান, আইন পাস হয়ে গেছে, এখন নাম পরিবর্তন করতে হলে দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। পরে তার নামটি থাকলেও ভবিষ্যতে কোনো প্রকল্পে নিজের নাম না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ম্যুরাল না করে ওই টাকা অন্য কোনো খাতে ব্যয় করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। একনেক সভায় সব মিলিয়ে ১০টি প্রকল্প পাস হয়। এসব প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। বিদেশি সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ৩৬০ কোটি টাকা।

‘বিএফডিসি রেডি-টু-কুক ফিশ’সামগ্রী হস্তান্তর : এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার বাসভবন গণভবনে ‘বিএফডিসি রেডি-টু-কুক ফিশ’সামগ্রী আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আবদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। এ সময় গরুর দুধ আহরণের কাজে ব্যবহৃত একটি মিল্কিং মেশিনও প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় বলেন, এ ধরনের কার্যক্রম বিশেষত রেডি-টু-কুক ফিশ কার্যক্রমের ফলে কর্মজীবী নারীরা অনেক উপকৃত হবেন। তিনি কর্মজীবী নারীদের রান্না সহজীকরণে রেডি-টু-কুক ফিশ প্রস্তুতকরণ, বাজারজাতকরণ ও বাজার সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সংশ্লিষ্টদের প্রতি দূরদর্শী দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী ‘বিএফডিসি রেডি-টু-কুক ফিশ’ বাজারজাতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়র সূত্র জানায়, ৪০ প্রজাতির মাছ রেডি-টু-কুক হিসেবে স্থায়ীভাবে ঢাকার কারওয়ানবাজারে অবস্থিত বিএফডিসি ভবনের মৎস্য বিতান, যাত্রাবাড়ীর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং চট্টগ্রাম মৎস্যবন্দর বিপণন করা হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা শহরের ১৬টি স্পটে ৬টি ফ্রিজিং ভ্যানের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ ভিত্তিতে ‘বিএফডিসি রেডি ফিশ’ বাজারজাত করা হচ্ছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের চিফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ডা. মো. গোলাম রব্বানী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close