নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ মে, ২০২৪

এবার খোলাবাজারে ডলারের দামে লাফ

ডলারের দাম ব্যাংকে ৭ টাকা বাড়লেও মানি এক্সচেঞ্জগুলোয় বেড়েছে ৯ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু রাজধানীর মানি এক্সচেঞ্জগুলোয় প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ১২৫ টাকায়। ডলারের সঙ্গে অন্য মুদ্রায়ও এর প্রভাব পড়েছে কার্বমার্কেটে (খোলাবাজার)। গতকাল বৃহস্পতিবার মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন, ফকিরাপুলসহ আশপাশের মানি এক্সচেঞ্জগুলোয় ডলারের দাম এভাবেই বেড়ে যেতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক গত বুধবার ক্রলিং পেগ বিনিময়হার পদ্ধতি চালু করেছে। ব্যাংকগুলোকে প্রায় ১১৭ টাকায় মার্কিন ডলার ক্রয়-বিক্রয়ের অনুমতি দিয়েছে। নতুন বিনিময়হার পদ্ধতি চালু করায় মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ৬.৩ শতাংশ। ক্রলিং পেগ হচ্ছে দেশীয় মুদ্রার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়হার সমন্বয়ের একটি পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে একটি মুদ্রার বিনিময়হারকে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ওঠানামা করার অনুমতি দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে মুদ্রার দরের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণ করা থাকে। ফলে একবারেই খুব বেশি বাড়তে পারবে না আবার কমতেও পারবে না। এ পদ্ধতিতে প্রতি মার্কিন ডলারে ক্রলিং পেগ মিড রেট (সিপিএমআর) নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। তফসিলি ব্যাংকগুলো তাদের গ্রাহকের কাছে এবং আন্তঃব্যাংক চুক্তিতে সিপিএমআরের আশপাশে মার্কিন ডলার ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারবে।

বুধবার ডলার কেনার হার ছিল ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা, তা বিক্রি হয় ১১৬ টাকায়। বৃহস্পতিবার বিক্রি হয় ১২৫ টাকা। এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো কেনার ক্ষেত্রে যে যার মতো দর ঠিক করছে বলে জানা গেছে। মতিঝিলের একটি এক্সচেঞ্জ হাউসে ডলার কিনতে আসা নুরুল কবীর বলেন, ছয় দিন আগে ডলার কিনেছিলাম। ওই সময়ের দামের চেয়ে এখন দামে অনেক ফারাক। মানি এক্সচেঞ্জের এক নির্বাহী বলেন, ডলার ১২৫ টাকার কমে বিক্রি করতে পারছি না। গোয়েন্দা সংস্থার তদারকির ভয়ে বেশি দামে ডলার বিক্রির বিষয়ে অবশ্য সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে। ডলারের দাম ১১০ থেকে ১১৭ টাকা বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে ক্রলিং পেগ নামের নতুন পদ্ধতিতে ডলার বেচাকেনা হবে। এ পদ্ধতিতে ডলারের রেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। এর সঙ্গে ১ টাকা যোগ বা বিয়োগ করতে পারবে ব্যাংকগুলো। সেক্ষেত্রে ডলারের দাম আরো বেড়ে হতে পারে ১১৮ টাকা।

এদিকে ডলারের দাম বাড়ায় রপ্তানি খাতে আর প্রণোদনা দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (বিআইডিএস) এক বই প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বিনায়ক সেন বলেন, দেশের এ দুর্যোগ মুহূর্তে সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ানো প্রয়োজন। ফলে রপ্তানি প্রণোদনা বন্ধ করা হলে সেই অর্থ সামাজিক সুরক্ষাসহ বিভিন্ন অত্যাবশ্যক খাতে ব্যবহার করা যাবে। ডলারের দাম বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করা হয়েছে। এখন আর রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনা দেওয়ার কোনো মানে হয় না।

‘বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা উপস্থিত ছিলেন। বইটি লিখেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এম এ মান্নান। রপ্তানি প্রণোদনার বিষয়ে মসিউর রহমান বলেন, রপ্তানি প্রণোদনা বন্ধ করা হবে কি না, সেটা সরকার ভেবে দেখতে পারে। যদি এ প্রণোদনা বহাল রাখা হয়, সেক্ষেত্রে রপ্তানি খাতে ওই পণ্যের অবদান (পারফরম্যান্স) যাচাইয়ের ভিত্তিতে তা দেওয়া যেতে পারে। সরকারের উচ্চপর্যায়ে যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাত চিহ্নিত করে তারপর এ প্রণোদনা দেওয়া উচিত।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close