নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ মার্চ, ২০১৮

উন্নত পাটপণ্য তৈরির তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

বাজার বাড়াতে উন্নতমানের পাটপণ্য তৈরির তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, পাটের বাজার এখন খুলে গেছে। যতই উন্নতমানের পণ্য তৈরি করতে পারব, ততই আমাদের বাজার বাড়বে। কৃষি ও শিল্পপণ্য হিসেবে যে বহুমুখী ব্যবহার; এটাই আমাদের জন্য বিরাট সম্পদ। জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বহুমুখী পাটপণ্য মেলার উদ্বোধন করে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

পাটের শাড়ি এবং পাটের স্যান্ডেল পরে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের সময়ও পাটের হ্যান্ডব্যাগ দেখিয়ে বলেন, এটা কিন্তু কোনো বিদেশি ব্র্যান্ড না, এটা বাংলাদেশের পাট দিয়ে তৈরি।

আমাদের বোনরা এটা ব্যবহার করবে। আর ছেলেরা আছে, তারা কিনে বউকে একটা উপহার দেবে।

দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় পাট দিবসের অনুষ্ঠানের মূলমঞ্চ আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকায় সাজানো হয়। মঞ্চের মাঝে বিশাল একটি নৌকার প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়। ওই নৌকার ওপরই টেবিল রাখা হয়। আর টেবিলটি ঢেকে দেওয়া হয়েছিল পাটের তৈরি কাপড়ে।

মঞ্চে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক ও প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী পাটসুতার কাপড়ের তৈরি নীল রঙের ব্লেজার পড়েছিলেন।

কৃত্রিম তন্তুর চাহিদা এক সময় বৃদ্ধি পেলেও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় এখন পাটের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন সবাই সচেতন। পরিবেশবান্ধব পণ্য তারা চায়। পাট সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। পাট একাধারে কৃষিপণ্য অপরদিকে শিল্পে ব্যবহার হয়। এর চাহিদা কখনো শেষ হতে পারে না।

পাটের জিনম সিকোয়েন্স আবিষ্কারের কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাটের ওপর আমাদের যে অধিকারটা থাকে; সেটাও আমরা নিশ্চিত করেছি।

গবেষণার ফলে অনেক ধরনের পাটপণ্য উৎপাদন হচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

পাট দিয়ে উৎপাদিত পণ্যের তালিকা বৃদ্ধির ওপর তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, একটা দুইটা পণ্যের ওপর নির্ভর করতে পারি না। পাটের বহুমুখীকরণ করতে হবে। পাটের রফতানি বাড়াতে হবে। নতুন নতুন বাজার ধরতে হবে। পাটের উপকারিতার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর আগে বক্তব্য দিতে গিয়ে মির্জা আজম গত দুই বছরেও পাটকে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য হিসেবে ঘোষণা না দেওয়া বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, দুই বছর আগে পাটকে কৃষিপণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা আপনি দিয়েছিলেন। আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয় এই পণ্যকে প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেনি। তারা স্বীকার করে; পাট প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য। কিন্তু এটাকে প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে তাদের আন্তরিকতার অভাব দেখছি।

অনুষ্ঠানে অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীর উপস্থিতির কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে তিনি বলেন, অর্থ সচিব এখানে উপস্থিত আছেন তাকে নির্দেশনা দিয়ে যাবেন যেন অতিসত্তর পাটকে প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাহলেই পাটের সোনালি স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব।

এর আগে সাবের হোসেন চৌধুরী অর্থ মন্ত্রণালয়ের যথাযথ সহায়তা না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, পাট ক্রয়ের জন্য যে অর্থ ও সময় আমাদের দরকার; তা কখনোই সঠিকভাবে আমরা পাই না। সে কারণে আমরা যে পাট ক্রয় করি; তার মান নিশ্চিত করতে পারি না এবং মূল্য অনেক বেশি হয়।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আমাদের মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যের মধ্যে ধারণা এই পাটের কোনো সম্ভাবনা নেই। বিজেএমসিকে কখনোই লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারব না। তিন বছরে যে লোকসান ছিল ৮০০ কোটি টাকা, সেটাকে কমিয়ে ৪০০ কোটিতে নিয়ে এসেছি। এই লোকসান কোনো বাণিজ্যিক লোকসান নয়। আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিজেএমসির শ্রমিকদের যে বেতন কাঠামো তাদের আমরা নিশ্চিত করি; সেটা বেসরকারি সংস্থাগুলোর চেয়ে দ্বিগুণ।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পাট দিবস উপলক্ষে দুই বিভাগে রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রথম তিনজন শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এছাড়াও পাটের উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য ১১ ক্যাটাগরিতে ১২ জনের হাতে প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার তুলে দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী মেলা পরিদর্শন করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist