reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৫ জুন, ২০২০

বাজেট হোক জনমুখী

বিশ্ব সংস্থাদের অনেকেই যখন বলছেন, সম্ভবত বেশ কিছুদিন বিশ্ববাসীকে করোনার সঙ্গে সহাবস্থান করতে হবে। প্রতিষেধক আবিষ্কার হওয়ামাত্রই সমস্যার সমাধান হবে, এমনটিও নয়। প্রয়োগ এবং সফলতার জন্য মানব সম্প্রদায়কে আরো কিছুকাল অপেক্ষা করতে হবে। এই অপেক্ষার মাত্রা কতটা দীর্ঘায়িত হবে, তা আমরা কেউ জানি না। আর সে কারণেই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার প্রশ্নে আমরা কতকাল সবকিছু বন্ধ করে ঘরে বসে থাকব। অর্থনীতির চাকা বন্ধ করে এভাবে অনাগতকাল সমাজবদ্ধ হয়ে পালিয়ে থাকাকে আর যাই হোক বেঁচে আছি বলা যাবে না, বলা যাবে, ইহা আত্মহত্যাতুল্য।

আমরা কেউই আত্মহত্যা করতে চাই না। বেঁচে থাকতে চাই। সুন্দরভাবে। কিন্তু করোনা আমাদের সেই ভাবনাকে তছনছ করে দিয়েছে। যেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে গোটা বিশ্বের ৭৫০ কোটি মানুষ। প্রতিরোধ প্রশ্নে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এখনো সফলতাকে স্পর্শ করতে পারেনি। কবে আসবে তাও নির্দিষ্ট নয়। তবে কি আমরা লকডাউনকেই বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় হিসেবে বেছে নেব। বাস্তবতা বলছে, তা সম্ভব নয়। বেঁচে থাকতে হলে জীবিকার কাছে ফিরতে হবে। জীবনের জন্যই যখন জীবিকা, তখন একটিকে আটকে রেখে অপরটি বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব নয়। সম্ভব নয় বলেই নিজেকে রক্ষার প্রশ্নে সচেতনতাকে বাড়িয়ে ধীরে ধীরে অর্থনীতিকে সচল করাই হবে আমাদের কাজ। বিশেষত আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে। করোনা প্রতিরোধের পাশাপাশি অর্থনীতিকে সচল করে জনগণকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যে কৌশলের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে, বাংলাদেশকেও সেই পথে এগিয়ে যাওয়ার কথা ভাবতে হবে। মুক্তবাজার অর্থনীতির বিশ্ববাজারে এর বাইরে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করার কোনো সুযোগ নেই। পরিস্থিতি এমন এক অবস্থায় উপনীত হয়েছে, যেখানে আমরা এক শাখের করাতের মাঝে অবস্থান করছি। ডানে হাঁটলে গলা কাটবে আর বাঁয়ে গেলে ঘাড় দ্বিখন্ডিত হবে। স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও বিপদ। অনাহারে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকে না। বিপরীতে একটিকে বন্ধ রেখে অপরটিকে সচল করাও সম্ভব নয়। বিষয়টিকে গভীরভাবে উপলব্ধি করার সময় এসেছে। এখন আর কারো জন্য মসৃণ কোনো পথ খোলা নেই। পৃথিবীর প্রতিটি দেশকেই এ কথা মাথায় রেখে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে হবে। অর্থনীতি যদি স্থবিরতায় আক্রান্ত হয়, তাহলে উন্নয়ন তৎপরতাও যে বাধাগ্রস্ত হবে, সে কথা নতুন করে বলার কোনো প্রয়োজন পড়ে না। তাই সরকার ও জনগণ উভয়কেই এই বাস্তবতা উপলব্ধি করতে হবে।

আমরা মনে করি, এ বিষয়সমূহকে মাথায় রেখেই বাংলাদেশ আগামী বাজেট ঘোষণা করবে। বাজেটকে হতে হবে অত্যন্ত যুক্তিনির্ভর। উন্নয়নের গতি কিছুটা কমে গেলেও দুর্দশাগ্রস্ত জনগণের দুর্ভোগ বাড়তে পারে, বাজেটে এমন কোনো দুঃসংবাদ না থাকাটাই হবে আমাদের প্রত্যাশার বাজেট।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close