reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

সৌরভে সিক্ত হোক প্রতিটি হৃদয়

ফুুলের সৌরভ মানুষকে বিমোহিত করে। দেয় নির্মল আনন্দ। ফুলের বিচিত্র বর্ণিল রূপ ও রং মানুষকে বরাবরই আকৃষ্ট করে। তাই তো ফুলের চাহিদা বিশ্বব্যাপী। তবে ফুল নিয়ে বাঙালির আবেগও কম নয়, বরং অনেকের চেয়ে বেশিই বলতে হবে। বিশেষ করে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি এলেই ফুুল নিয়ে মেতে ওঠে সারা দেশ। কারণ এ মাসেই মহান একুশে ফেব্রুয়ারি বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ ছাড়া বসন্ত উৎসব ও ভ্যালেন্টাইনস ডে বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবে যা আজ স্বীকৃত তা তো আছেই। আর উল্লিখিত দিবসগুলোতে ফুলই হয়ে ওঠে প্রধান উপজীব্য। একুশে ফেব্রুয়ারিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের হাজার হাজার শহীদ মিনার ছেয়ে যায় ফুলে ফুলে। বসন্ত উৎসব ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসেও থাকে ফুলের ছড়াছড়ি। এ ছাড়া বিশেষ কোনো দিবস বা উপলক্ষ এবং ব্যক্তিগত পর্যায়েও রয়েছে ফুলের ব্যাপক চাহিদা। ফুল ছাড়া এখন সব আনুষ্ঠানিকতা যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

কিছুদিন আগেও শৌখিনতায় মানুষ বাড়ির আঙিনায় ফুলগাছ রোপণ করত এবং পূজা-পার্বণেই ফুলের ব্যবহার করত। বর্তমানে তা পালটেছে। ফুল অর্থকরী ফসল হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও বিপণন হচ্ছে। বর্তমানে দেশের প্রায় ২৪ জেলায় ১২ হাজার একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ হচ্ছে। ফুল চাষ, বিপণন ও ফুলকেন্দ্রিক নানা কাজে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ লাখ মানুষ এ সেক্টরে সরাসরি জড়িত। দেশে উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৮০০ কোটি টাকার ফুল। বিভিন্ন এলাকায় ফুল চাষের প্রেরণায় বদলে গেছে বহু হতভাগ্য নারীর জীবন। দারিদ্র্য জর্জরিত পরিবারগুলো এখন সচ্ছল হয়েছে। ইতোমধ্যেই ঝিকরগাছায় ৪০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চকরিয়ায় বিক্রি হয়েছে কোটি কোটি টাকার ফুল। সারা দেশে যে পরিমাণ ফুল বেচাকেনা হয় তার অন্তত ৭০ ভাগেরই জোগান দেন যশোরের গদখালী-পানিসারা অঞ্চলের চাষিরা। এবার ফুলের উৎপাদন ও চাহিদা অন্য যেকোনো বারের তুলনায় বেশি। তবে চোরাই পথে ফুল আমদানি হওয়ায় এর বিক্রিমূল্য কম হচ্ছে। এ ছাড়া ইজারাদারের বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারণে কখনো কখনো ফুলের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। এতে চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাদের অভিযোগ, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে উৎপাদন মাত্রা আরো দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেত। অন্যদিকে, উৎপাদিত ফুল সংরক্ষণেরও কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্টরা এসব সমস্যা সমাধানে আরো মনোযোগী হবেন। যাতে চাষিরা উৎপাদন ব্যয় মিটিয়ে নিজেদের সচ্ছলতা দরে রাখতে পারেন।

মনে রাখতে হবে, সৌন্দর্য ও সৌগন্ধ্যের অনন্য প্রতীক হিসেবে ফুল কেনা এবং ফুলগাছ রোপণ ও পরিচর্যার প্রয়োজনীয়তার কথা বলে গেছেন মনীষীরা। ফুল আপনার জন্য ফোটে না। অন্যকে রূপ-রস-গন্ধে ভরিয়ে দিতেই তার উন্মীলন। তাই এ ফুল থেকেও মানুষের শিক্ষা নেওয়ার আছে। তাই ফুলের মতোই সৌরভে সিক্ত হোক প্রত্যেক জীবন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close